নানুরে গুলিতে নিহত বিজেপি কর্মীর দেহ নিয়ে বচসা পুলিশের সঙ্গে, রাতেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ পরিবার

শুক্রবার রাতে পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে বচসার জেরে গুলিবিদ্ধ হন বীরভূম জেলার নানুরের বিজেপি কর্মী স্বরূপ গড়াই। পরে কলকাতায় মৃত্যু হয় তাঁর। ময়নাতদন্তের পর দেহ নিয়ে পরিবার ও রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বচসা শুরু হয় পুলিশের। অবশেষে দেহ হাতে পেতে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরূপবাবুর পরিবার।

সোমবার কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয় স্বরূপ গড়াইয়ের। তারপর পুলিশ জানায়, মৃতদেহ নিয়ে সোজা নানুরে ফিরে যেতে হবে। এ দিকে পরিবার ও রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের দাবি ছিল, স্বরূপবাবুর দেহ প্রথমে রাজ্য বিজেপি অফিসে নিয়ে যাওয়া হবে। তারপরে তা নিয়ে যাওয়া হবে নানুরে। এই নিয়েই পুলিশের সঙ্গে বচসা শুরু হয় তাঁদের।

কিছুক্ষণের মধ্যেই বিশাল পুলিশবাহিনী এসে পৌঁছয় এনআরএস হাসপাতালে। মুড়ে ফেলা হয় মর্গ চত্বর। শেষ পর্যন্ত দেহ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, এই ব্যাপারে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করবেন তাঁরা। দেহ নিয়ে কী করা হবে, সেটা তাঁদের সিদ্ধান্ত। সেখানে কীভাবে পুলিশ তাঁদের উপর জোর খাটাচ্ছে, সেটাই প্রশ্ন পরিবারের। রাজ্য বিজেপির আইনজীবী সেলের নেতাদের নিয়ে সোমবার রাতেই তাঁরা হাইকোর্টে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে পরিবার।

শুক্রবার নানুরের রামকৃষ্ণপুর গ্রামে পতাকা লাগাচ্ছিলেন বিজেপি কর্মীরা। তাই নিয়েই অশান্তির সূত্রপাত। সন্ধের সময় দু দলের মধ্যে বচসাও হয়। রাত থেকে শুরু হয় বোমাবাজি। চলে বাড়ি ভাঙচুর ও মারধর।

বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বের অভিযোগ, পতাকা লাগানোর সময় বচসা হয়েছিল। তারই জেরে রাত থেকে বোমা-মাস্কেট নিয়ে গ্রাম জুড়ে হামলা শুরু করে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। গুলি লাগে তাঁদের কর্মী স্বরূপ গড়াইয়ের বুকে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে তাঁকে বোলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।

এই ঘটনায় বিজেপির জেলা সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘নানুরে বিজেপির পায়ের তলার মাটি শক্ত হচ্ছে। তাই হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল। এমন হামলা এই প্রথম নয়, বরং চলছেই।’’

তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে পুড়ছে বিজেপির ঘর। এখানে তৃণমূলের কোনও ব্যাপারই নেই। ওদের দলের মধ্যেই মারপিট চলছে। আর অভিযোগ করা হচ্ছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.