ক্রমেই জনপ্রিয়তা লাভ করছে ‘মুড়ি মেলা’, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আনন্দে মাতছে সবাই

কয়েকশো বছরের প্রাচীণ প্রথা মেনে বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ার দ্বারকেশ্বর নদীর তীরে সঞ্জীবনী মাতার মন্দিরে পুজো দিয়ে ‘মুড়ি মেলা’ অংশ নিলেন হাজার হাজার মানুষ। শীতের হালকা রোদ গায়ে মেখে রবিবার সকাল থেকে নদীর চরে বসে শুধুমাত্র মুড়ি খাওয়ার আনন্দে জেলা, রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিহার, ঝাড়খণ্ড ওড়িশা থেকে বন্ধু বান্ধবকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হয়ে যান অসংখ্য মানুষ। বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে ‘মুড়ি মেলা’র আগাম খবর পেয়ে অভিনব আনন্দ উৎসবের স্বাদ নিতে তারা এসেছেন বলে অনেকেই জানিয়েছেন।

সকাল থেকে এখানে দলে দলে আসা মানুষ চপ, সিঙ্গাড়া, তেলেভাজা, ঘুগনি, চানাচুর, কাচা লঙ্কা, শশা, মুলা, পেঁয়াজ, টম্যেটো, ধনেপাতা, নারকেল, বাদাম সহ অন্যান্য উপকরণ দিয়ে মুড়ি মেখে একসাথে বসে খেলেন। পাশাপাশি দ্বারকেশ্বর নরম বালি হাত দিয়ে গর্ত তৈরী করে স্থানীয় ‘চুয়া’ তৈরী করে বের হওয়া মিঠা জলে গলা ভেজালেন।

সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে এক করতে পারে ‘মুড়ি’। কেঞ্জাকুড়ার দ্বারকেশ্বর নদী তীরের সঞ্জীবনী মাতার মন্দির সংলগ্ন এই ‘মুড়ি মেলা’য় না এলে বিশ্বাসই করা যাবেনা। দিনে দিনে বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের মধ্যেও এই ‘মুড়ি মেলা’কে কেন্দ্র করে আগ্রহ বাড়ছে বৈ বিন্দুমাত্র কমেনি। রাশি-রাশি মুড়ির মাঝে অতি উৎসাহীদের সেল্ফী নেওয়ার ছবি ধরা পড়েছে বার বার। আর তা মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট হতে শুরু করেছে। এই ঘটনাই প্রমাণ করে সাধারণ চোখে অতিসাধারণ লাগলেও ‘মুড়ি মেলা’কে মানুষের উন্মাদনার ছবিটা।

‘মুড়ি মেলা’য় অংশ নিয়ে রিয়া কুচল্যান বলেন, বছরের একটা দিন পরিবারের সবাই মিলে এখানে খুব আনন্দ হয়, সাথে ছোটো খাটো পিকনিকের মজা পাওয়া যায় বলেই তিনি জানিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামসুন্দর চঁন্দ বলেন, আগে এই মেলা মাঘ মাসের ২ তারিখে হতো। এখন তা পিছিয়ে ৪ তারিখে হয়েছে। সঞ্জীবনী মাতার বার্ষিক পুজো উপলক্ষ্যে ২৪ প্রহর ব্যাপি অখণ্ড হরিনাম সংকীর্তন শেষে এদিন সবাই এখানে একসাথে বসে মুড়ি খান। যা বর্তমানে ‘মুড়ি মেলা’ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে বলে তিনি জানান।

তিমিরকান্তি পতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.