অতিপ্রবল ঘুর্ণিঝড় “আম্ফান”-এ ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সামগ্রি দিল “কর্মযোগী” সেবা প্রতিষ্ঠান

নিরলস মানবসেবী “কর্মযোগী” অতিপ্রবল ঘুর্ণিঝড় “আম্ফান“-এ ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে তুলে দিল ত্রাণ সামগ্রি।ইতিপূর্বে “কর্মযোগী” করোনায় দুর্গতদের সাহায্য দানের কর্মসূচি শুরু করেছে।এবং এখনও সে কর্মসূচি চলেছে।এরই মধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ “আম্ফান” এসে রাজ্যের বৃহত্তর এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা আরও দুঃসহ করে তুলেছে।
গত ২ জুন “কর্মযোগী”-র মানবসেবকরা ত্রাণ নিয়ে পৌঁছে যান উত্তর ২৪ পরগণার হাড়োয়া থানার অন্তর্গত মোহনপুর ও চণ্ডিবাড়ি গ্রামে।গ্রাম দুটি প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত।এবং ঝড়ে মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।গ্রামের মানুষের জীবিকা মূলত কৃষি কাজ ও ভেড়িতে মাছ চাষ।প্রবল ঝড়ে সমুদ্রের জল চাষের জমিতে ঢুকে পড়েছে।ভেড়িও ভেসে গিয়েছে।তার সাথে গ্রামের মানুষদের মাথা গোঁজার সামান্য আশ্রয়টুকুও “আম্ফান” কেড়ে নিয়েছে।মাথার উপরে সূর্যের অগ্নিবর্ষণ আর পেটে ক্ষুধার জ্বলন নিয়েই তাঁদের দিন কাটাতে হচ্ছে।সরকারি সাহায্য তাঁদের কাছের স্বপ্নের মতো।


এই পরিস্থিতিতে “কর্মযোগী” সাধ্যমত ত্রাণ সামগ্রি নিয়ে সেখানে পৌঁছয়।পৌঁছনোও সহজ নয়।কেন না,যোগাযোগের রাস্তা এবং যান পাওয়া দুঃসাধ্য!কিন্তু সেবার প্রতি প্রবল অনুরাগ নিয়েই সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে “কর্মযোগী” সেখানে পৌঁছে যায়।টাকি সড়ক ধরে মালঞ্চ বাজার নদীঘাট।সেখান থেকে নৌকা-যোগে মোহনপুর-চণ্ডিবাড়ি গ্রাম।গ্রাম দুটি জলমগ্ন।গ্রামের মানুষ রাস্তায় উঠে এসেছেন।সেখানেই অস্থায়ী সংসার পেতে বাঁচার সংগ্রাম করছেন তাঁরা।রাস্তাতেই “কর্মযোগী” তাঁদের হাতে ত্রাণ তুলে দেয়।পরিবার-পিছু তিন কিলোগ্রাম চাল,এক কিলোগ্রাম চিঁড়ে,৫০০ গ্রাম মুড়ি,২৫০ গ্রাম চিনি,৫০০ মিলিগ্রাম পানীয় জল,একটি বিস্কুটের প্যাকেট,কাঁচা সব্জি,পোশাক দিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে “কর্মযোগী”।মোট ১৭০টি পরিবারের হাতে ত্রাণ তুলে দেওয়া হয়।এতে উপকৃত হয়েছেন ৬০০ জন দুর্গত।এবং যে-পরিবারগুলিতে দুগ্ধপোষ্য শিশু আছে তাদের জন্য দুধের প্যাকেট দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে,হুগলি জেলার পান্ডুয়া খন্ডের অন্তর্গত সিমলাগড় ভিটাসিন অঞ্চলের কাঁটাগড়,বেরেলা কোঁচমালি ডিভিসি খালপাড় এলাকার মোট কুড়িটি পরিবারকে ত্রিপল দিয়ে সাহায্য করা হয়।

  উল্লেখ্য যে,"কর্মযোগী" সরকারি ভাবে নথিভুক্ত একটি স্বয়ংসেবী সেবা প্রতিষ্ঠান।রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের স্বয়ংসেবকবৃন্দ এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।"কর্মযোগী"-র পথচলা শুরু হয় ২০১৭ সালে।প্রতিষ্ঠাক্ষণ থেকেই "শিব জ্ঞানে জীব সেবা"-ই "কর্মযোগী"-র একমাত্র ব্রত।দুঃস্থ মেধাবি পড়ুয়াদের সাহায্য দান,মাতৃমণ্ডলীকে আর্থিক্ভাবে স্বাবলম্বী করা,আর্তদের বস্ত্র,খাদ্য প্রদান,বিনামূল্যে চিকিৎসা শিবির,স্বল্পমূল্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা চক্ষু অপারেশন ইত্যাদি কার্যক্রম "কর্মযোগী" করে চলেছে।করোনায় কাজহারা গ্রামীণ মানুষদের সাহায্যের জন্য ইতিমধ্যেই "কর্মযোগী" কৃষি প্রকল্প শুরু করেছে।বাঁকুড়া জেলার অরণ্যগ্রাম বাঁকাদহে এই প্রকল্প শুরু হয়েছে।সেখানে তিন একর জমিতে আদা-ওল ও অন্যান্য সব্জি চাষ করা হচ্ছে।যাতে দশটি আদিবাসী পরিবার উপকৃত হবে।
    সুজিত চক্রবর্তী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.