শহরের মোড়ে মোড়ে রং বদল কী আপনার চোখে পড়েছে? না পড়লে, একবার ঢুঁ মেরে আসা যাক, মোড়ের মাথায় শাসক দলের মুখপত্রের স্ট্যান্ড।
চোখে পড়তে বাধ্য। কারণ, তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্রের স্ট্যান্ডে যে নীল-সাদা রঙটাই উধাও। বদলে লাল রং।
লাল রংয়ে তৃণমূলের রুচি নেই বলেই সুবিদিত। বস্তুত, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে পাহাড় থেকে সাগর নীল-সাদা রঙের ছটা বেড়েছে। তার প্রভাব এমনই যে সরকারি দফতরের কার্পেটের রং লাল থাকায় সেটি পর্যন্ত বদলে ফেলা হয়েছিল। সেতু থেকে স্টেডিয়াম- সর্বত্র সরকারি রং হিসাবে মান্যতা পেয়েছে নীল-সাদা। সে জন্য ই তো গত বিধানসভা নির্বাচনে সরকারি রঙের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে নীলবাড়ি দখলের লড়াই জাতীয় শব্দবন্ধ জনপ্রিয় হয়েছে।
এমন রং-অতীতে তৃণমূলের মুখপত্রের স্টলে উল্টোধারা। পাড়ার মোড়ে মোড়ে জাগো বাংলার স্টলে নীল সাদা’কে ব্রাত্য করে স্থান করে নিয়েছে লাল রং! নামফলক শুধু নয়। দলের মুখপত্রের স্টলে সর্বত্র শুধুই লালসাদা। প্রশ্ন উঠছে, বিরোধী দলের রং এখন গেরুয়া বলেই কি এখন আর ব্রাত্য নয় লাল। শাসকের মুখপত্রের স্টলে ক্ষয়িষ্ণু লালের আধিক্য নিছকই কাকতালীয়। নাকি ইঙ্গিত তাৎপর্যপূর্ণ।
জাগো বাংলার স্টলে নীল সাদার পরিবর্তে লাল সাদা রঙের আভা স্পষ্ট।
এই নিয়ে আম জনতা কী বলছেন?
সাধারণ এক পথচারী বলছেন, “ওটাও তো নীল সাদা হওয়াই উচিত ছিল। আমার মতে তো তাই বলে। ” স্পষ্ট তিনি বলেন, “দেখে তো গণশক্তির মতনই মনে হচ্ছে।”
এর সঙ্গে আবার রাজনীতির অঙ্কও খুঁজছেন কেউ কেউ। অটোয় বসেই এক যাত্রী বললেন, “সামনেই তো পুরভোট না! ওটাকে মাথায় রেখেই হয়তো লাল রংটা আনা হয়েছে। এরকমই একটা কিছু হতে পারে। এই কারণেই বোধহয় লাল সাদা।”
অনেকটা কী রাজনীতির রং বদলের মতো? আরেক পথচারীর আবার হেয়ালি জবাব, “অবশ্যই তো এই রং চোখে পড়ার মতো। আসল কথা হচ্ছে, নীল সাদা রং করতে করতে হয়তো ক্লান্ত হয়েছে পড়েছে, তাই লাল সাদা রং!” তিনি বলেন আরও বিস্ফোরক কথা। বললেন, “গেরুয়া আর তৃণমূলের তো আলাদা কোনও রং দেখি না আমরা। কারণ আজ যে তৃণমূলে, কাল সে গেরুয়াতে। আবার কাল যে গেরুয়াতে, আজ সে তৃণমূলে। দুটি দলই একইরকম।”
পাড়ার মোড়ে উলটপুরাণ। একবার হলেও যা দেখে থমকাচ্ছেন পথচলতি মানুষ। প্রশ্ন উঠছে, বিরোধী দলের রং এখন গেরুয়া বলেই কি নীল-সাদার পরিবর্তে শাসকদলের মুখপত্রের স্টলে লালা রংয়ের আধিপত্য? নাকি এটা নিছকই কাকতালীয় ঘটনা বলে আলোচনা নিষ্প্রয়োজন।
এই নিয়ে তৃণমূলের সাফাই
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “সেইভাবে রং বদলের কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ডিজাইন যেভাবে হয়, সেভাবেই হয়েছে। এতদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্পাদনায় দীর্ঘদিন ধরে সাপ্তাহিক জাগো বাংলা প্রকাশিত হয়েছে। দায়িত্ব পালন করেছে। এখন আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেনাপতিত্বে এটি দৈনিক সংস্করণ হয়েছে। ই-পেপারটি দারুণভাবে জনপ্রিয় হয়েছে। কয়েক লক্ষ তার পাঠক পাঠিকা। তার সঙ্গে মুদ্রিত জাগো বাংলা পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন স্ট্যান্ডও করা হয়েছে। এটার আগ্রহও বাড়ছে। এটা আধুনিক মোড়কে করা হয়েছে। গণ সংগঠনগুলি নিজেদের মতো করে স্ট্যান্ড করছে। সৌন্দর্যকে গুরুত্ব দিয়ে মূল চিন্তভাবানা অপরিবর্তিত রেখেই এটা করা হচ্ছে।”