গত কয়েক মাসে উল্লেখযোগ্যভাবে রাজ্যে কমেছে করোনায় মৃত্যুর হার। আর এই মারণ ভাইরাসে মৃতদের মধ্যে ৮৬ শতাংশই প্রাণ হারিয়েছেন কোমর্বিডিটির কারণে। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে এ কথাই জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এদিনই সন্ধেয় রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তরের বুলেটিন জানাল, বাংলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা ৪ হাজারের গণ্ডি পেরল। বাগে আসছে না সংক্রমণও। কারণ গত কয়েকদিনের মতো এদিনও ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত তিন হাজারেরও বেশি। তুলনামূলক কম একদিনে করোনাজয়ীর সংখ্যা।
এদিনের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনা (Coronavirus) আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ২১১ জন। যার মধ্যে শুধু কলকাতায় আক্রান্ত ৫৫৩ জন। তবে তালিকার শীর্ষে উত্তর ২৪ পরগনা। একদিনে সে জেলায় ৫৫৯ জনের শরীরে থাবা বসিয়েছে মারণ ভাইরাস। এছাড়াও ২৪ ঘণ্টায় হুগলি (২৬১), পশ্চিম মেদিনীপুর (২৬৩), হাওড়া (১৪৫), দক্ষিণ ২৪ পরগনা (১৪৪) ও দার্জিলিং (১৪৯) সংক্রমিতের সংখ্যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। এর ফলেই রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ২ লক্ষ ৫ হাজার ৯১৯। যদিও এর মধ্যে বর্তমানে অ্যাকটিভ কেস অনেকটাই কম। অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা ২৩ হাজার ৬৯৩।
ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগামী বছর মার্চের আগে দেশে করোনা ভ্যাকসিন আসার সম্ভাবনা নেই। অর্থাৎ আগামী কয়েক মাস যে করোনা আতঙ্ক সঙ্গে নিয়েই কাটাতে হবে, তা একপ্রকার স্পষ্ট। শুধু সংক্রমণই নয়, এই মারণ ভাইরাস এখনও মানুষের প্রাণ কেড়ে চলেছে। স্বাস্থ্যদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৮ জনের। ফলে বাংলায় করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ৪০০৩ জন। তবে এতকিছুর মধ্যেও স্বস্তি দিচ্ছে ঊর্ধ্বমুখী সুস্থতার হার। একদিনে করোনাকে জয় করে বাড়ি ফিরেছেন ৩ হাজার ৮৪ জন। বাংলায় এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লক্ষ ৭৮ হাজার ২২৩ জন। সুস্থতার হার বেড়ে ৮৬.৫৫ শতাংশ।
লকডাউন, সোশ্যাল ডিসটেন্সিংয়ের পাশাপাশি ট্রেসিং, ট্র্যাকিং ও টেস্টিংয়ের মাধ্যমে দ্রুত করোনা রোগীকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে দ্রুত আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়। তাই রোজই অল্প অল্প করে বাড়ছে টেস্টিংয়ের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭ হাজার ৫৩৭টি স্যাম্পেল টেস্ট হয়েছে। রাজ্যে এখনও অবধি মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৫ লক্ষ ১৭ হাজার ৯৫৯টি।