সোমবার শুরু করোনার মাস ভ্যাকসিনেশন, জানুন কীভাবে পাবেন ভ্যাকসিন

শুরু হতে চলেছে করোনার মাস ভ্যাকসিনেশন। দেশের চারটি রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষ এই ভ্যাকসিন পাবেনষ দুদিনের ড্রাই রান চলবে মাস ভ্যাকসিনেশনের। সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে সেই কাজ। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এখবর জানায় কেন্দ্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
সোমবার থেকে অন্ধ্রপ্রদেশ, অসম, গুজরাট ও পঞ্জাবে শুরু হচ্ছে করোনার মাস ভ্যাকসিনেশন। সব রকম প্রস্তুতি সারা হয়েছে বলে রাজ্যগুলি সূত্রে খবর। যাঁরা এই ভ্যাকসিন নেবেন, তাঁদের সব রকম শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। এছাড়াও যাঁরা এই প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন, তাঁদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে মেডিক্যাল অফিসার, ডেটা ম্যানেজার, আশা কর্মী, সুপারভাইজার, সরবরাহকারীদের। এক প্রেস বিবৃতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ৬৮১টি জেলায় প্রশিক্ষণ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে।
পঞ্জাবের লুধিয়ানা ও শহিদ ভগত সিং নগরে চলবে ড্রাই রান। ২৭শে জানুয়ারি ও ২৯শে জানুয়ারি করোনা ভ্যাকসিনের ড্রাই রান চলবে এই দুই শহরে। গুজরাতের আহমেদাবাদেও চলবে ড্রাই রান। আহমেদাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন জানিয়েছে যাঁরা করোনা ভ্যাকসিন নিতে ইচ্ছুক, তাঁরা নাম নথিভুক্ত করতে পারেন। সেই কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।
এদিকে, কারা কারা ভ্যাকসিন পাওয়ার প্রথম তালিকায় রয়েছেন, তা প্রকাশ করেছে আহমেদাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন। জানানো হয়েছে করোনা যুদ্ধের সামনের সারির সৈনিকরা এই ভ্যাকসিন পাওয়ার দাবিদার। স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁদের রেজিস্ট্রেশন অনলাইনে করাতে পারবেন বলে জানা গিয়েছে।
এক প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করে আহমেদাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন জানিয়েছে স্বাস্থ্য কর্মীরা ছাড়াও ৫০ বছর বয়েসের অধিক বয়েসীরা, ৫০ বছরের নীচে যাঁরা কঠিন অসুখে ভুগছেন, তাঁরা প্রথম পর্যায়ে ভ্যাকসিন পাওয়ার অধিকারী। গুজরাত সরকার জানিয়েছে ইতিমধ্যেই ৩.৯ লক্ষ ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে যাঁরা করোনা ভ্যাকসিন পাবেন। তাঁদের নাম প্রাথমিকভাবে নথিভুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে।
করোনা ভ্যাকসিন পাওয়ার দ্বিতীয় তালিকায় পুলিশ কর্মী, হোম গার্ড, ও স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে পরোক্ষ ভাবে যুক্ত ব্যক্তিরা রয়েছেন। এরপরে তাঁদের নাম নথিভুক্ত করা হবে। ন্যাশনাল এক্সপার্ট গ্রুপ অন ভ্যাকসিন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফ কোভিড-১৯ বা NEGVAC জানিয়েছে প্রাথমিক পর্যায়ে এক কোটি স্বাস্থ্যকর্মী, দুকোটি ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার ও ২৭ কোটি বয়স্ক মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
এদিকে, দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি কোভ্যাক্সিন নজর কেড়েছে গোটা বিশ্বের। এমনই দাবি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআরের। আইসিএমআরের ট্যুইট বার্তা জানাচ্ছে, ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি। যে তথ্য এই ভ্যাকসিন থেকে পাওয়া যাচ্ছে, তা বেশ আশাপ্রদ। এই ভ্যাকসিন কার্যকরী ও নিরাপদ বলেও জানিয়েছে আইএমসিআর।
কোভ্যাক্সিন তৈরি করছে ভারত বায়োটেক। এই সংস্থার সঙ্গে ভ্যাকসিন তৈরির উদ্যোগে কাজ করছে আইসিএমআর। সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তাঁদের তৈরি ভ্যাকসিন বেশ কার্যকরী ফল দিচ্ছে ট্রায়ালে। ফলে এই ভ্যাকসিনের উপযোগিতা নিয়ে বেশ আশাবাদী তাঁরা। যদি ফেব্রুয়ারিতে কোভ্যাক্সিনকে লঞ্চ করা হয়, তবে এটিই হবে দেশের প্রথম করোনা ভ্যাকসিন। এর আগে হায়দরাবাদের এই ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক দোসরা অক্টোবর দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল রিপোর্ট জমা দেয় ডিজিসিআইয়ের কাছে। তারপরেই সেটি সফল বলে ঘোষণা করা হয়। অনুমতি মেলে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের।
আইসিএমআর জানাচ্ছে দেশের ২২টি জায়গায় কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে। দিল্লির এইমস একটি ট্রায়ালে স্বেচ্ছাসেবকদের অংশ নেওয়ার জন্য আবেদন জানায়। ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনালের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর সাই প্রসাদ জানান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিত গাইড লাইন মেনেই কোভ্যাক্সিন তৈরি হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.