নববর্ষ বলে এ দিন বিশেষ উৎসব পালিত হয়৷ ব্যবসায়ীরা হালখাতার মাধ্যমে নতুন বছর শুরু করেন৷ ইংরেজি নববর্ষ রাত ১২টার পর শুরু হলেও ঐতিহ্যগত ভাবে বাংলা দিন গণনা হয় সূর্যোদয় থেকে৷ নতুন জামা, গঙ্গাস্নানে শুরু হয় বাংলা নববর্ষ৷
চলে খাওয়া-দাওয়া, দিনভর আড্ডা৷ পয়লা বৈশাখের আগের রাত থেকেই পুজোর ডালি নিয়ে মন্দিরে হাজির হন ভক্তরা৷ শহর ও শহরতলী এমনকি রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের৷ উত্তর ২৪ পরগণার গোবরডাঙার যমুনা নদীর তীরে এ দিন শুরু হয় শস্যমেলা, যা গোষ্ঠবিহারী মেলা নামেও পরিচিত৷
বিভিন্ন ভাবে বাঙালি নববর্ষকে বরণ করে৷ এক সময় নতুন জামা-কাপড় পরে আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের বাড়ি যাওয়া, খাওয়া-দাওয়া, আড্ডা, বড়দের প্রণাম করার সঙ্গে মিষ্টিমুখ৷ আর, এখন নতুন জামা-কাপড় হয় বটে৷ কিন্তু বাকি রীতি প্রায় বিলুপ্তির পথে৷আধুনিক বাঙালি ডিজিটাল পদ্ধতিতেই নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করে৷
পয়লা বৈশাখে কলকাতায় উল্লেখযোগ্য ভিড় হয় কালীঘাট ও দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে৷ আগের দিন রাত থেকেই মন্দিরে বহু ব্যবসায়ী ও গৃহস্থ ভিড় করতে শুরু করেন৷ চিরাচরিত রীতি মেনে লম্বা লাইনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে সকালে পুজো দিয়ে বাংলা বছরের প্রথম দিনটি শুরু করেন৷ আধুনিক বাঙালি প্রাচীন রীতি মেনেই পুজো দেন৷
প্রত্যেকের হাতে থাকে পুজোর ডালি, হালখাতা৷ কারও সঙ্গে ঝুড়িতে লক্ষ্মী-গণেশ৷ কারও হাতে শুধুই পুজোর ফুল৷ এ দিন মায়ের পায়ে ছোঁয়ানো সিঁদুরে স্বস্তিকা চিহ্ণ ও চন্দনের ফোঁটা এবং সিদ্ধিদাতা গণেশায় নমঃ লেখা হালখাতায় ব্যবসায়ী নতুন বছরের হিসাব শুরু করেন৷ অনেক ব্যবসায়ী আবার অক্ষয় তৃতীয়ার দিনেও হালখাতা শুরু করেন৷
নববর্ষে হালখাতার পাশাপাশি নতুন পঞ্জিকা, বাংলা ক্যালেন্ডার জায়গা পেত দোকানে, বাড়িতে ৷ এখন তো বাংলা ক্যালেন্ডার বিলুপ্তির পথে৷ বহু বাঙালি বাংলা সন-তারিখ মনে রাখার প্রয়োজন বোধ করেন না৷ তবে, বাংলা সন-তারিখ মনে থাকুক বা নাই থাকুক, বাংলা নববর্ষ বাঙালি পালন করে ঘটা করে৷