ইচ্ছা থাকলেই লক্ষ্যে পৌছনো যায়, করে দেখালেন রায়গঞ্জ বীরনগরের রূপা গুপ্তা

ইচ্ছা থাকলেই যে লক্ষ্যে পৌছানো যায় তা করে দেখালেন রায়গঞ্জ বীরনগরের বাসিন্দা রূপা গুপ্তা। কোন রকম কোচিং ছাড়াই সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ন হলেন গৃহবধূ রূপা গুপ্তা।

ছোট বেলা থেকেই সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষদের পাশে দাড়াবার লক্ষ্য ছিল। রায়গঞ্জের কুমারডাঙ্গির বাসিন্দা শম্ভু প্রসাদ গুপ্তার একমাত্র মেয়ে রূপা গুপ্তা। ২০০৪ সালে মাধ্যমিকে ষ্টার পেয়ে পাশ করলেও আর্থিক অনটনের কারনে বিজ্ঞান নিয়ে তাঁর পড়া হয়নি। কলা বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে রায়গঞ্জ ইউনিভ্যারসিটি কলেজ থেকে ইংলিশ অনার্স নিয়ে পাশ করেন। এরপর উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম এ পাশ করেন। ২০১১ সালে করনদিঘি ঝাড়বাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি পান।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করে তাঁর জীবনের লক্ষ্যে সে পৌছাতে পারবে না। চাকরি পেলেও সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি থেকে পিছিয়ে আসেনি। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে ২০১৫ সালে রূপাদেবী প্রাথমিক শিক্ষকতা ছেড়ে দেন। ২০১৬ সালে তিনি রায়গঞ্জ বীরনগরের বাসিন্দা পেশায় ওষুধ কোম্পানির রিপেজেটেটিভ নয়ন কুন্ডুর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। পরবর্তীতে নয়নবাবু করনদিঘি মোহনপুর এফ পি স্কুলে চাকরি পান।

রূপাদেবীর নিজের লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য সংসারের কাজ ছাড়া পড়াশুনার মধ্যে নিজেকে নিয়জিত করেছিল। মনকে পড়াশুনার মধ্যে নিয়জিত করতে ঘরের টিভি কেনেননি। খুব নিকট আত্মীয় ছাড়া সমস্ত ধরনের অনুষ্ঠানে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। রূপাদেবীর দাবি, সিভিল সার্ভিসে বেশ কয়েকবার পরীক্ষা দিয়ে পাশ করতে পারেননি। পরীক্ষায় পাশ করতে না পারলেও হতাশ হননি। যে সমস্ত বিষয়ে কম নম্বর পেয়েছিলেন সেই সমস্ত বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে পড়াশুনা করে নিজের ভুলগুলো শুধরে নিয়েছিলেন। অবশেষে সেই লক্ষ্যে পৌছালেন রূপাদেবী। ৪ সেপ্টম্বর সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ফল প্রকাশ হয়। সিভিল সার্ভিসে গ্রুপ’ সি’ মেধা তালিকায় তিনি ১৬ তম স্থান পান। পঞ্চায়েত রুরাল ডেভোলপমেন্ট দপ্তরে জয়েন্ট বিডিও হিসেবে কাজে যোগ দেবেন। তবে এখনও তাঁর হাতে নিয়োগপত্র এসে পৌছয়নি।

যে সমস্ত যুবক যুবতী চাকরি পরীক্ষা কিংবা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসতে আগ্রহী রূপাদেবী তাঁদের বিনা পারিশ্রমিকে কোচিং দেবার আশ্বাস দিয়েছেন।স্ত্রীর সাফল্যে খুশী নয়ণবাবু। তিনি জানান, দীর্ঘ লড়াইয়ে এই সাফল্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.