অটল বিহারী বাজপেয়ী বলতেন, ‘ঠান্ডা করকে খাও!’
নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের প্রতিবাদে বাংলায় তৃণমূল যখন পথে নেমেছিল, তখন কার্যত চুপ করেই বসেছিলেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। বিক্ষিপ্ত ভাবে শরণার্থী অধ্যুষিত এলাকায় ছোট মিটিং মিছিল ছাড়া বলতে গেলে তেমন কিছুই করেনি।
অবশেষে সোমবার পূর্ব ঘোষণা মতো কলকাতায় নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের উদযাপন মিছিল করল বিজেপি।
দুপুর সওয়া দুটো নাগাদ মধ্য কলকাতার ওয়েলিংটন থেকে শুরু হল সেই পদযাত্রা। হুড খোলা জিপের মাথায় বিজেপির কার্যকরী সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা ও সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। বাকিরা পদব্রজে। দেখা গেল, সেই মিছিলের শুরু তো রয়েছে, যেন শেষ নেই। অবিরাম চলছে তো চলছেই। আদিবাসী নৃত্য, ছৌ, মুখোশ পরে নাচ, বাউল, কয়েকশ ঢাক, খোল, কর্তাল, দোতারা.. সবমিলিয়ে রঙিন সেই মিছিল। মহানগরের উপর দিয়ে যেন বয়ে চলেছে গেরুয়া স্রোত! স্মরণকালের মধ্যে কলকাতায় বিজেপি তথা গেরুয়া শিবিরের এত বড় মিছিল এই প্রথম।
কলকাতায় বিজেপির সর্বশেষ বড় মিছিল হয়েছিল লোকসভা ভোটের আগে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর নেতৃত্বে সেই মিছিলকে ঘিরে তুলকালাম হয়েছিল কলকাতায়। ভাঙচুর হয়েছিল (কারা ভেঙেছিল সেই পুলিশি রিপোর্ট এখনও সরকারি ভাবে বকেয়া রয়েছে) বিদ্যাসাগর কলেজে।
কিন্তু বিজেপির এদিনের মিছিল নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও অশান্তির খবর নেই। বরং শান্তিপূর্ণ ভাবেই তা চলছে। মিছিলের স্লোগানে নাগরিকত্ব আইন পাশের সপক্ষে জোরালো স্লোগান যেমন রয়েছে, তেমন রয়েছে রাম মন্দিরের নামে স্লোগানও। দৃশ্যতই উদযাপনের বাতাবরণ। পর্যবেক্ষকদের মতে, হতে পারে ঝাড়খণ্ড নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি এই মিছিলের উৎসাহে কিছুটা প্রভাব ফেলেছে। নইলে বিজেপি কর্মীদের উচ্ছ্বাস হয়তো আরও বেশি হত।
বস্তুত বিজেপি যে বড় ধরনের মিছিলের প্রস্তুতি নিতে পারছে তা আঁচ করতে পারছিল তৃণমূল। সে কারণে আজ গোটা রাজ্য জুড়ে প্রতিটি মহকুমায় নাগরিকত্ব আইন বিরোধী মিছিলের ডাক দিয়েছিল বাংলার শাসক দলও। তবে সোমবারের ফ্রেম হয়ে রইল এই গেরুয়া স্রোতই।
এর আগে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে কলকাতায় পর পর তিন দিন তিনটে মিছিল করেছিল তৃণমূল। পর্যবেক্ষকরা অবশ্য বলছেন, ওই তিন মিছিলের সমষ্টিগত প্রভাবকেও ছাপিয়ে গিয়েছে এদিনের মিছিলের ভিড়।