কমিউনিস্টদের অপরাধপ্রবণতা এবং আর্থিক নীতি (দুর্নীতি) র মধ্যে একটি সুন্দর চারিত্রিক মিল আছে l অপরাধীদের খাবার পাতের চাটনির মত সব দলই অল্পবিস্তর রাখে l কিন্তু অপরাধীকে জেল থেকে ছাড়িয়ে পুনর্বাসন দেবার উদাহরণ দিয়ে গেছে বামফ্রন্ট l কংগ্রেস, বিজেপি বা অন্যান্য আঞ্চলিক বা পরিবারভিত্তিক দলেও খারাপ লোক থাকে l কিন্তু তাদের অন্যায় আদালতে প্রমান হলে, দল সেই নেতার পাশে দাঁড়ায় না l যদিও আদালতে ছাড়া পেয়ে অনেকেই পুনরায় রাজনীতিতে প্রবেশ করেছে, এমন উদাহরণও আছে l কিন্তু CPM যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের জেল থেকে মুক্ত করে, তাদের নাম পরিবর্তন করে সাংসদ, মন্ত্রী, দলের সম্পাদক কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চপদে বসিয়েছে l এমনভাবে তাদের পরিচয় পরিবর্তন করা হয়েছে, যে ভবিষ্যতে তাঁদের মূল পরিচয় পাওয়া যাবে না l সামাজিক, রাজনৈতিক অপরাধের মত আর্থিক নীতিতেও সিপিএম বেশ সংগঠিত l আর্থিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন দলের অনেক নেতা বহু সময় কাটমানি, ঘুষ নিয়েছে, নিয়ে ধরা পড়েছে l কিন্তু CPM ঘুষ বা কাটমানিতে বিশ্বাসীই না l তাঁরা তাদের সিস্টেমকে এমনভাবে সাজিয়েছিল, যাতে সাপ্লাই চেনএর পুরোটাই পার্টির অধীনে থাকে l কিন্তু আইনকে ও সংবিধানকে সম্পূর্ণ মেনে l প্রতিটি কাগজ এতো পরিষ্কার রাখা হত, যে দেখে কেউ তাঁদের ধরতে পারবে না l গত নয় বছরে মমতা ব্যানার্জীও পারেনি l
1991 তে নরসিমা রাও দেশে উদার অর্থনীতি চালু করলেন l ‘উদার’ নাম দেয়া হয় কারণ, সরকার লাইসেন্স রাজ, কোটা রাজ, মাসুল সমীকরণ তুলে বহির্বিশ্বে বাণিজ্যের রাস্তা খুলে দিয়েছিলেন l অসীম দাশগুপ্তরা প্রথম 14 বছরের ( 1977-1991) সার্বিক ব্যর্থতার কারণ হিসেবে কেন্দ্রের এই নীতিগুলিকেই চিহ্নিত করতেন l তাহলে পরের পাঁচ বছর তাঁরা উদারনীতির বিরোধিতা করলেন কেন? মিটিং, মিছিল করে উদার অর্থনীতি ও নরসিমা রাওএর মুণ্ডপাত করেছিলেন কেন প্রকাশ্যে? কারণ তাঁরা নিজেদের অদক্ষতা, অকর্মণ্যতা সম্পর্কে একশত শতাংশের উপর নিশ্চিত ছিলেন l ভবিষ্যতে যখন মানুষ জিজ্ঞাসা করবে, মাসুল সমীকরণ তো গেল? এবার তো করে দেখান? কি উত্তর দেবেন? উত্তর আগেই তৈরি — ‘ কেন্দ্রের দোষ’ l যখন সারাদেশে TCS /ইনফোসিস /উইপ্রো / সান মাইক্রোসিস্টেম /ইন্টেল / সিসকো / মাইক্রোসফট / IBM / PWC / KPMG / ডেলয়েট প্রযুক্তির ঝড় বইয়ে দিচ্ছে, তখন MIT ফেরত অর্থমন্ত্রী ডঃ অসীম দাশগুপ্ত ঘোষণা করলেন ‘বিকল্প অর্থনীতি‘ l
প্রথম ধাপেই শুরু হল জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি l 76% বেসরকারি ও 24% সরকারি মালিকানা নিয়ে বহু কোম্পানি খোলা হল l শুধু হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল বাদে l সেখানে সরকারের বিনিয়োগ বেশী ছিল পূর্ণেন্দু চ্যাটার্জীর চেয়ে, একটা বিশেষ উদ্যেশ্যে, যা নিয়ে পরে আলোচনা করা হবে l এখন প্রশ্ন হল জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানির সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার (PSU ) পার্থক্য কি? রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ন্যূনতম 51% শেয়ার সরকারের থাকে এবং কর্মীরা সরকারি আধিকারিক বা কর্মচারীদের সমান বেতন ও সুযোগ সুবিধা পান l কিন্তু, জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানিতে সরকারের তরফ থেকে 50% এর কম শেয়ার এবং সরকার সেখানে নামমাত্র দু-একজন মনোনীত ডিরেক্টর পাঠাতে পারে মাত্র l পুরো পরিচালনা বেসরকারি হাতে l কিন্তু সরকারের 24% বা 26% এর শেয়ারের দৌলতে এই কোম্পানিগুলো সরকার থেকে বিভিন্ন সুবিধা পেত যা মুক্তবাজারে সাধারণ বেসরকারি কোম্পানিগুলি পেত না l সুবিধা বলতে, বিনা টেন্ডারে সরকারি কাজ, জলের দরে জমি ইত্যাদি l কিন্তু এদের বেশিরভাগ কোম্পানিই অধিকাংশ আর্থিকবর্ষে খুব কম লাভ দেখাত কিংবা তাও দেখাত না l সরকারের বিনিয়োগের উপর 15/20 বছরে রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট ( IRR ) যা ছিল, তার থেকে ব্যাংকে টাকা রাখলে সুদ বেশী পাওয়া যেত l এদের কাজ মূলত আবাসন শিল্পে সীমাবদ্ধ ছিল l এই সব কোম্পানিতে চাকরিও পেত মূলত পার্টি কর্মী বা আমলাদের স্বজন-পরিজনরা l এদের ভেন্ডর, ঠিকাদার কে হবে তা ঠিক করত পার্টি l এরা সরকারি ছাপের জন্য ব্যাংক থেকেও সহজে ঋণ পেত, যা অন্যান্য বেসরকারি সংস্থা পেত না l এদের চক্র এমন একটা CARTEL ব্যাবস্থা বানিয়ে রেখেছিলো যে দিল্লি, বোম্বে বা দক্ষিণের দক্ষ বেসরকারি সংস্থা বা বহুজাতিক সংস্থার পক্ষে পশ্চিমবঙ্গে এসে এদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ব্যবসা করা বেশ কষ্টকর ছিল l ফলে সাধারণ প্রার্থীদের পক্ষে বেসরকারি ক্ষেত্রে চাকরির বাজারও বেশ খারাপ ছিল l
কিন্তু একটা তিনটি সাফল্যও ছিল জ্যোতি বসুর নব্বইয়ের দশকে l বক্রেশ্বর, সাগরদিঘি ও হলদিয়া পেট্রো l প্রথম দুটো যদিও ন্যূনতম কর্তব্যের মধ্যে পরে, তবুও সাফল্যের মধ্যেই ধরছি l তৃতীয়টি দুই দশকে একমাত্র বৃহৎ শিল্প বিনিয়োগ বলা যায় l কিন্তু আগামী দিনে এই সংস্থাও মুখ থুবড়ে পড়লো CPM এর সাজনপোষণ, দুর্নীতি, আমলাতন্ত্র ও লক্ষ্মন শেঠের একনায়কতান্ত্রিক মাফিয়ারাজের ফলে l
কিছু সফটওয়্যার শিল্পও কিছু এসেছে l TCS, RS সফটওয়্যার, TCG, CTS এর মত কিছু সংস্থা সেক্টর 5 এ অফিস খুলেছে জ্যোতিবাবুর আমলেই l কিন্তু কতটা? এব্যাপারে উদাহরণ দেয়া যাক, নবদিগন্তের প্রবেশপথে রাজ্য IT দপ্তরের একটা বিজ্ঞাপনের যা সেক্টর 5 এ ঢোকার মুখেই ছিল l “নবদিগন্ত আমাদের গর্ব; 50000 লোকের কর্মসংস্থান এখানে l ” অথচ, TCS, ইনফোসিস বা উইপ্রোদের মত কোম্পানির যেকোনো একটি কোম্পানি একাই শুধুমাত্র বাঙ্গালোরেই 50000 এর বেশী লোক নিয়োগ করেছিল সেই সময় l CTS এর চেন্নাই ক্যাম্পাসেও 50000 এর বেশী কর্মী ছিল l
এই প্রসঙ্গে 1991 এর আর্থিক সংস্কারের সুযোগ নিয়ে দক্ষিণের সবচেয়ে দারিদ্র রাজ্য কিভাবে দেশের মানচিত্রে নিজের জায়গা করে নিল তা একবার দেখে নি l অন্ধ্রপ্রদেশ তখন বিহার, উত্তরপ্রদেশের মত দরিদ্র রাজ্য ছিল ও নির্মাণ শিল্পে পরিযায়ী শ্রমিক সরবরাহে দেশের মধ্যে অন্যতম ছিল l 1992 তে ভোটার আগে এন টি রামারাও ঘোষণা করলেন, তিনি ভোটে জিতে দুই টাকা কিলো চাল খাওয়াবেন অন্ধ্রবাসীকে l ভোটে জিতে সেই দায় তেলেগু বিড্ডা প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাওয়ের উপর চাপিয়ে দিতে দিল্লি এলেন রামারাও l নরসিমা রাওকে ওই সময় ভারতীয় রাজনীতির চানক্য বলা হত l উনি জানতেন, সংস্কারের প্রাক্কালে অন্ধ্রের ঘুড়ে দাঁড়ানোর এই শেষ সুযোগ, যা হাড়ছাড়া করতে বসেছেন তাঁরই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রামারাও, সোসালিষ্ট জনমুখী আত্মঘাতী রাজনীতির দ্বারা l রামারাওকে মিষ্টি ব্যবহার ও আশ্বাস দিয়ে করে হায়দ্রাবাদ পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী l কিছুদিনের মধ্যে TDP পরিবারে বিদ্রোহ শুরু হল এবং রামারাওয়ের জামাই চন্দ্রবাবু নাইডু শ্বশুরমশাইকে রাজনৈতিক বানপ্রস্থে পাঠিয়ে সিংহাসনে বসলেন l নিন্দুকেরা বিলে শ্বশুরমশাইয়ের চিরপ্রতিদ্বন্দীর আশীর্বাদেই তাঁর এই মোক্ষলাভ l কিন্তু আগামী কয়েক বছরে হায়দ্রাবাদকে প্রযুক্তি হাব এবং অন্ধ্রপ্রদেশকে শিক্ষার হাব বানিয়ে ছাড়েন চন্দ্রবাবু l মাইক্রোসফট, IMB, ইন্টেল, oracle, সিসকো, PWC, KPMG, থেকে দেশের চার বৃহত্তম কোম্পানির গন্তব্য হয়ে উঠল দেশের অন্যতম দারিদ্র রাজ্যের রাজধানী l 1991 এর অন্ধ্রপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের দৌড়কে কচ্ছপ ও খরগোশের সেই গল্পের সঙ্গে তুলনা করা যায় l পশ্চিমবঙ্গের দুর্ভাগ্য তৎকালীন রাও মন্ত্রীসভার দ্বিতীয় ক্ষমতাশালী মন্ত্রী প্রণব মুখার্জী কিংবা বঙ্গেশ্বর জ্যোতি বসু কেউই এই সুবর্ণসুযোগের সঠিক ব্যবহার করলেন না l
এরপর অটলবিহারি বাজপেয়ী এলেন 1998 এ ব্যাঙ্কিং, পরিকাঠামো ও উৎপাদনশিল্পে বড় সংস্কার আনলেন l ব্যাংক জাতীয়করণের 29 বছর পর ব্যাংকের ঋণ সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য হল l সুদের হার অনেকটাই কামালেন যাতে সাধারণ মানুষ বাড়ি, গাড়ি, শিক্ষার জন্য ঋণ পায় l দেশে অবসান ও গাড়ি শিল্পে জোয়ার এল এবং কয়েক কোটি মানুষ কর্মসংস্থান পেল পরের ছয় বছর l যদিও এই সুদের হার কমানোর অপ্রিয় সিদ্ধান্তের জন্য অটলজি 2004 এ পরাজিত l চেন্নাই, গুরগাঁও, গুজরাট, মহারাষ্ট্র অটোমোবাইল হাবএ পরিণত হল l এদিকে, এই সুদের হারের পতনকে বাম সরকার একটা নতুন সুযোগ হিসেবে নিল যা তাদের উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয়দায়ক l চারিদিকে গড়ে উঠল একের পর এক চিটফান্ড কোম্পানি l আগামী কয়েক বছর সারদা, রোজভ্যালি, MPS, আইকোর এর মত একের পর এক চিট ফান্ড মানুষকে বেশী সুদের লোভ দেখিয়ে পয়সা তুলে সেই পয়সা আবাসন, মিডিয়া, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে বিনিয়োগ শুরু করল, RBI এবং SEBI কে কাঁচকলা দেখিয়ে l রাজ্য প্রশাসন কেন্দ্রের এক্তিয়ার বলে এড়িয়ে গেল l কিন্তু যে রাজ্যের ক্ষমতাশীল দল CPM কার বাড়িতে কতটা চাল হাড়িতে বসে সেই খবর রাখার ক্ষমতা রাখত, সেই রাজ্যে বছরের পর বছর কোটি কোটি টাকা কিভাবে তুলতো এই কোম্পানিগুলো, আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠি দেখিয়ে? বামফ্রন্টের সৌভাগ্য, এর সবকটি কোম্পানিই ধরা পরে তাদের 2011 র প্রস্থানের পর এবং যথারীতি ধরা পরে তৃণমূলের কিছু লোভী নেতা l
জ্যোতিবাবুর 24 বছরে হাজার হাজার শিল্প বন্ধ হয়েছে এবং এসেছে একটা l তা হল হলদিয়া পেট্রোকেমিকাল l কিন্তু যে রাজ্যের জনসংখ্যা 9 কোটি এবং 10 লক্ষ ছাত্র ছাত্রী মাধ্যমিক পাশ করে, সে রাজ্যের অর্থনীতিতে একটা হলদিয়া কতটা ইতিবাচক ছাপ ফেলতে পারে?
2000 এ জ্যোতি বসু বিদায় নিলেন বিধানসভা ভোটের ঠিক একবছর আগে l ICU তে রেখে গেলেন শিক্ষা , স্বাস্থ্য শিল্প l অর্থব্যবস্থার সর্বনাশ করে উচ্চশিক্ষিত, শিক্ষিত, নামে মাত্র স্বাক্ষর ও নিরক্ষর সবাইকে পরিযায়ী বানিয়ে l অর্থনীতির সঙ্গে ধংস করে গেলেন বাংলার সমাজ l বাঙালীর সাহিত্য, কবিতা, সিনেমা, থিয়েটার, নাটক, সংগীত, যাত্রা, লোকসংগীত, ভক্তিগীতি, কবিগানের আসর, কীর্তন, রামায়ণ/ গীতা পাঠ মৃত্যুমুখে পতিত হল l কবি সুকান্তের সেই বিখ্যাত কবিতাকে সত্য প্রমান করল তারই রাজ্যে…. “ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি l
2000 এ দৈত্যকুলের প্রহ্লাদ বুদ্ধদেব ভট্টাচাৰ্য এলেন জ্যোতি বসুর উত্তরসুরি হিসেবে l ঠিক এই বাক্যাংশটিই উনি নিজের সম্পর্কে বলেছিলেন কিউবাতে গিয়ে l আনন্দবাজারে তার সফরসঙ্গী এক সাংবাদিক ছেপেছিলেন l বুদ্ধদেব ভট্টাচাৰ্য বলেছিলেন, ” আমার পরিবার সংস্কৃতের পন্ডিত, শুধু আমি দৈত্যকুলের প্রহ্লাদ” l নিজের উচ্চবংশ সম্পর্কে তাঁর এই মন্তব্য প্রমান করে ষাট ও সত্তরের দশকের শিক্ষিত সমাজের মধ্যে নিজের অতীত সম্পর্কে কতটা হীনমন্যতা সোভিয়েত ইউনিয়নের গুপ্তচর সংস্থা কেজিবি ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন l যে সমাজে বুদ্ধবাবুর মত একজন সৎ, শিক্ষিত মানুষ নিজের বংশপরিচয়কে হেলায় উপেক্ষা করে পূর্বপুরুষদের হিরণ্যকশিপু, হিরণ্যাক্ষদের বংশের সঙ্গে তুলনা করেন অবলীলাক্রমে এবং স্তালিন, মাও, কাস্ত্রো, চাওসেস্কুদের মত জল্হাদদের ভগবানের আসনে বসান, সেই সমাজের মূল সমস্যা অর্থ, শিল্প বা বাণিজ্য নয় l বুদ্ধবাবুর ইতিহাস আমাদের শিক্ষা দেয়, যে সমাজ নীতিগতভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে, যার শুন্য হয়ে গেছে মূল্যবোধ, সেই সমাজকে হাজার শিল্প, ব্যবসা কিংবা সুযোগ এলেও সখাত সলিল থেকে রক্ষা করতে পারবে না কেউই l বুদ্ধদেববাবুর বহু চেষ্টার পর পারলেন না l উনি ক্ষমতায় এসেই মার্কিন পরামর্শদাতা সংস্থা মাকানসিকে দিয়ে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা বানালেন, যা রাজ্যকে অন্য একটা উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারত l ঠিক রাস্তায় নিয়ে যাচ্ছিলেন সরকার ও পার্টিকে l বিদেশী বিনিয়োগ, SEZ ইত্যাদি বিষয়ের গোঁড়ামি থেকে সরকার ও পার্টিকে বের করার চেষ্টা করলেন এবং সফলও হলেন l বেশ কিছু শিল্প ও বাণিজ্য এল l সঙ্গে বাঙালীর ক্রয়ক্ষমতাও কিছুটা বাড়লো l আগামী কয়েক বছরে বাঙালী মাল্টিপ্লেক্সে যেতে শুরু করল বাংলা ছবি দেখতে ( যদিও অধিকাংশই তামিল, তেলেগু রিমেক) l কিন্তু বাধসাধলো তার রাজনৈতিক বিশ্বাস, তত্ত্ব, অভ্যাস এবং পার্টির দীর্ঘ অতীত l
ষষ্ঠ পর্বে মমতা ব্যানার্জীর রাজনৈতিক উত্থান এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের এগারো বছরের সাফল্য ও পতনের কথা
( চলবে)
সুদীপ্ত গুহ (Sudipta Guha)
( লেখক বহুজাতিক পরামর্শদাতা সংস্থা URS কনসাল্টিং ইন্ডিয়ার ভূতপূর্ব চিফ জেনারেল ম্যানেজার )
.