পুর প্রশাসক নিয়োগের মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে বড় সাফল্য পেল রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার দুটি মামলা খারিজ করে দিয়েছে আদালত। তবে করোনা পরিস্থিতি আয়ত্তে আসতেই যতদ্রুত সম্ভব রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ভোট করানোর নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
করোনা সংক্রমণ রুখতে সারা দেশে মার্চ মাস থেকে জারি করা হয় লকডাউন। জুন মাসে ফুরিয়ে যায় কলকাতা পুরসভার মেয়াদ। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। এই অবস্থাতেই পুরসভা পরিচালনা করার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রশাসক নিয়োগ করে রাজ্য।
কোনও প্রকারের অর্ডিন্যান্স না এনে একবলমাত্র বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকারের প্রশাসক নিয়োগ করা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এরপরই মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে কলকাতা পুরসভায় প্রশাসক পদে নিয়োগের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন উত্তর কলকাতার অরবিন্দ সরণির বাসিন্দা শরদকুমার সিং।
মামলাকারীর আবেদনে বলা হয়, প্রশাসকদের বোর্ডে রয়েছেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা, যাঁদের মেয়াদ উত্তীর্ণ। তার পর কী ভাবে তাঁরা ফের প্রশাসক-বোর্ডে শামিল হলেন, সেই প্রশ্নও করেছেন তিনি। একই ভাবে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম কী ভাবে নিজেকেই ওই বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ করলেন? সেই প্রশ্নও তোলেন মামলাকারী।
তাঁর আবেদন ছিল, সরকারের ওই বিজ্ঞপ্তিকে বাতিল করা হোক। মামলাকারীর বক্তব্য ছিল, কলকাতা পুরসভায় পুর কমিশনার রয়েছেন। তিনি এক জন শীর্ষ আমলা। তাঁকে প্রশাসক রেখেই পুরসভার কাজ চলতে পারে। বিচারপতি সুব্রত তালুকদার তাঁর রায়ে তখন জানিয়েছিলেন, গোটা বিশ্বে করোনা বিপর্যয়ের কারণে লক ডাউন পরিস্থিতি চলছে। এই পরিস্থিতিতে পুরসভা যাতে জরুরি কাজ চালিয়ে যেতে পারে সে কারণেই এক মাসের জন্য কাজ চালানোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
করোনা সংক্রান্ত আপৎকালীন পরিস্থিতিতে প্রশাসক বোর্ডকে কেয়ারটেকার হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে ২০ জুলাই পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন তিনি। যার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন মামলাকারী। মামলার জল গড়ায় শীর্ষ আদালতে।
তবে সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলা আবার কলকাতা হাইকোর্টেই ফিরিয়ে দেয়। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এই মামলায় রায় দেবে হাইকোর্ট-ই। মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়। শরদ কুমার সিং ছাড়াও, বিজেপি রাজ্য সহ সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় মামলা দায়ের করেন।
ওই দুই মামলায় মঙ্গলবার খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার মামলাকারীর মামলা খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট জানায়, “অতিমারী পরিস্থিতিতে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই অর্ডিন্যান্স আনার কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই।”