গঙ্গাসাগর ও বাবুঘাট চত্বরকে কনটেনমেন্ট জোন করার আর্জি হাইকোর্টে, আজ শুনানি

গঙ্গাসাগর মেলাপ্রাঙ্গনকে সম্পূর্ণ কনটেনমেন্ট জোন করার আর্জি জানিয়ে মামলা দায়ের হাইকোর্টে। সেইসঙ্গে বাবুঘাটকেও কনটেনমেন্ট জোন করার আর্জি জানানো হয়েছে৷ অজয় দে নামে এক ব্যক্তি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন। আজ, মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি রয়েছে।

জানা গিয়েছে, গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ করার পাশাপাশি মেলা চত্বর ও বাবুঘাট চত্বরকে কনটেনমেন্ট জোন ঘোষণা করার পাশাপাশি বেশ কিছু গাইডলাইনও দিতে আর্জি জানিয়েছেন মামলাকারী। মামলাকারী অজয় দে’র বক্তব্য, অতিমারি পরিস্থিতি এখনও কাটেনি।  এই অবস্থায় লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাঁর আর্জি, বাবুঘাট চত্বরকেও কনটেনমেন্ট জোন ঘোষণা করুক রাজ্য সরকার। কারন গত কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে যে মকর স্নানের আগে বাবুঘাট চত্বর কার্যত ‘মিনি গঙ্গাসাগর’-এ পরিণত হয়। কয়েক হাজার সাধু-সন্ত ভিড় জমান এখানে। তাঁদের দর্শন করতে সেখানে ভিড় জমান ভক্তরাও। সেই ভিড় ও জমায়েত ঠেকাতে আর্জি জানানো হয়েছে।  কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিবি রাধাকৃষ্ণণের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি দ্রুত শুনানির আর্জি জানান মামলাকারী। এরপরই আজ শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

প্রতি বছর মকরসংক্রান্তির মাহেন্দ্রক্ষণ তিথিতে দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিড় জমান সাগরদ্বীপে, কপিলমুনির আশ্রমে। প্রয়াগের কুম্ভমেলার পর দ্বিতীয় বৃহত্তম পুণ্যস্নানের মেলা হল গঙ্গাসাগর মেলা। কিন্তু এ বার পরিস্থিতি আলাদা। করোনার কথা মাথায় রেখে তাই বেশ কিছু নতুন উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে গঙ্গাসাগর মেলা। চলবে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। কোভিড পরিস্থিতিতে চলতি বছর বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে, তা নির্দেশিকা দিয়ে ইতিমধ্যেই জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। সেই মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। প্রতিবারের মতো এবারও গঙ্গাসাগর মেলায় যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৮ ও ৯ জানুয়ারি গঙ্গাসাগরেই থাকবেন।

সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এ বছর গঙ্গাসাগর মেলা অনলাইনে দেখানো হবে। এর মাধ্যমে অনলাইনে অর্ডার করলে দেশের যেকোনও প্রান্তে পবিত্র জল ও প্রসাদ পৌঁছে দেওয়া হবে। ‘দুয়ারে সরকার’-এর মতো ‘দুয়ারে গঙ্গাসাগর’ পৌঁছে দিচ্ছি আমরা। তবে এর জন্য ডেলিভারি চার্জ লাগবে ১৫০ টাকা।

কোভিড পরিস্থিতির জন্য মেলা বন্ধের দাবি উঠলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা মেলা বন্ধ করতে চাই না। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে যাতে কম মানুষ আসেন সেই অনুরোধ জানিয়েছি।’’ ভিড় সামলানোর জন্য ৫০ কিলোমিটার ব্যারিকেড, ১০৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা, ২০টি ড্রোন থাকছে বলেও জানান মমতা।

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই মেলায় ১৩টি প্রবেশপথ থাকছে। ৬০০ কোভিড শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছ’টি পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। আটটি সেফ হোম রাখা হয়েছে। ১১টি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার রয়েছে এবং পাঁচটি আইসোলেশন সেন্টার রাখা হয়েছে।এছাড়া ড্রোন, ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স এবং এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা আসবেন। তাই র‌্যাপিড অ্যাকশন টেস্টের মধ্যে দিয়ে আসতে হবে। শুধু তাই নয় এ বছর জরুরি পরিষেবায় গ্রিন করিডোরের ব্যবস্থাও থাকছে। রাজ্যের সরকারের পক্ষ থেকে ‘সাগর বন্ধু’ নামে ৮০০ জনের একটি স্বেচ্ছাসেবক দল তৈরি করা হয়েছে। যারা পূণ্যার্থীদের সমস্ত রকম বিধিনিষেধ মানতে সাহায্য করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.