বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালের উঠোনে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, রোগীদের বিপদে ফেলে আন্দোলন চালিয়ে গেলে তিনি কোনওভাবেই বরদাস্ত করবেন না। প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ করবেন।
মুখ্যমন্ত্রীর সেই হুঁশিয়ারির পরেও জুনিয়র ডাক্তাররা যেমন তাঁদের আন্দোলনে অনড়। তেমনই মুখ্যমন্ত্রীও কোনওভাবেই অবস্থান লঘু করলেন না। বরং বৃহস্পতিবার রাতে স্বাস্থ্য ভবনের তরফে গোটা রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালের সুপারদের স্পষ্ট ফরমান পাঠিয়ে দেওয়া হল।
ডিরেক্টর অব মেডিকেল এডুকেশন প্রদীপ কুমার মিত্র হাসপাতালের সুপারদের চিঠি পাঠিয়ে বলেছেন, সব সরকারি হাসপাতালের বর্হিবিভাগ তথা ওপিডি এবং ইমার্জেন্সি যেন খোলা হয়। রোগীদের পরিষেবা দেওয়া হয়। সেই কাজে যাঁরা বাধা দেবেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চিকিৎসকদের একাংশের মতে, সামগ্রিক যা পরিস্থিতি তাতে সরকারি হাসপাতালের সুপাররা ষাঁড়াশি সংকটে পড়েছেন। কারণ, এক দিকে জুনিয়র ডাক্তাররা শত বোঝানো সত্ত্বেও আন্দোলন প্রত্যাহার করতে রাজি নন। দুই, শুধু সিনিয়র ডাক্তারদের দিয়ে পূর্ণ মাত্রায় পরিষেবা চালু করা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে রোগীর পরিবার-পরিজনদের রোষের মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাতে আবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সিনিয়র ডাক্তাররা। ফলে তাঁরা ফরমান জারি করলেও শুক্রবার সকাল থেকে কতটা পরিষেবা শুরু করা যাবে তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করেছে।
এই ষাঁড়াশি সংকটে পড়ে ইতিমধ্যে এনআরএস হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিনটেন্ডেন্ট ও ভাইস প্রিন্সিপাল সৌরভ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রিন্সিপাল শৈবাল মুখোপাধ্যায় দুজনেই সরকারের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার সরকারকে চিঠি লিখে পাঠিয়েছেন, পূর্ণ পরিষেবা চালু করতে গিয়ে সমস্যা হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের ডাক্তাররা বৈঠকে বসেছেন।
সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যে ক্রমশ জটিল হচ্ছে সংশয় নেই। শুক্রবার তা কী রকম মোড় নেয় এখন সেটাই দেখার।