পয়লা বৈশাখ নববর্ষের প্রথম দিন, তাই তাকে ঘিরে বাঙালির উন্মাদনা। নতুন বৎসরে আসবে নতুন উজ্জ্বল জীবন। তারই নিদর্শক হিসেবে বাঙালি পুরুষ নারীরা সজ্জিত হয়ে ওঠে নতুন সাজে, নতুন গানে। এই দিনে তাই ব্যসায়ীরা হালখাতা খোলে, গনেশ ও লক্ষ্মীর পূজা করে।
বাঙালির জীবনে এটি এতো গুরুত্বপূর্ণ যে পাকিস্তান যখন মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানীদের কণ্ঠরোধ করার প্রয়াস করছিলো তখন ওই উৎসবকে পালন করে বিদ্রোহের এক নিশান দিয়েছিলো সেখানে বাঙালিরা।
এই উৎসবের জন্ম কিভাবে হয়েছিল ও কবে আজ সঠিক ভাবে কেউ জানেন না। এ নিয়ে দুটি প্রচলিত মত।
বাংলাদেশে আগে ‘সূর্য সিদ্ধান্ত’ জ্যোতিষ শাস্ত্র মেনে পাঁজি হত; আকবর খাজনা সংগ্রহের সুবিধার্থে পুরাতন পাঁজিকেই ভিত্তি করে নতুন পাঁজি প্রচলিত করেন যাতে পয়লা বৈশাখ প্রথম দিন। তবে বিক্রমাব্দ পাঁজি অনুযায়ী বৈশাখ মাস বৎসরের প্রথম মাস; সুতরাং তা থেকেও হতে পারে। লক্ষ্য করার বিষয় ভারতবর্ষের বৃহত্তর সংস্কৃতির সঙ্গে যোগ: উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম সব দিকে একই সময় (ইংরেজি মার্চ-এপ্রিলের সময়) এই উৎসব পালিত হয় উগাদি, বর্ষ প্রতিপাদ, ভিখু, বৈশাখী, বিহু বিভিন্ন নামে।
আসুন, আমরা আমাদের প্রাচীন সংস্কৃতি, প্রাচীন ইতিহাসকে আবার নতুন রূপে খুঁজে পাই এই দিনে — “তোরা সব জয়ধ্বনি কর/ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কালবোশেখীর ঝড়/তোরা সব জয়ধ্বনি কর।”