নিজ রাষ্ট্র্ সমাজ জীবনে গুরু পূর্নিমা তথা আষাঢ় পূর্ণিমা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উৎসব হিসাবে বিবেচিত হয়। মহর্ষি ব্যাস হলেন আদি গুরু।তিনি মানব জীবনকে বিভিন্ন গুণের দ্বারা নির্ধারিত করে তার মহান আদর্শকে সমাজের সামনে তুলে ধরেছিলেন। বিচার তথা আচার উভয়ের সমন্বয় করে ভারতবর্ষ তথা সমগ্র মানব জাতিকে মার্গ দর্শন করিয়েছিলেন। এই জন্যই বেদব্যাস হলেন জগৎ গুরু।এই জন্যই বলা হয় “ব্যাসো নারায়নম্ স্বয়ং”- এই দৃষ্টিকোন থেকে গুরুপূর্ণিমাকে ব্যাস পূর্ণিমাও বলা হয়।
গুরুর কল্পনা
অখন্ড মন্ডলা কারং ব্যাপ্তং যেন চরাচরম।
তদপদং দর্শিতং যেন তস্মৈ শ্রী গুরুবে নমঃ ।।
এই সৃষ্টি অখন্ড মন্ডলাকার । বিন্দু থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ সৃষ্টি কে চালনাকারী অন্তত শক্তির যে পরমেশ্বর তত্ব , সেই পর্যন্ত সহজ সম্বন্ধ আছে। অর্থাৎ মনুষ্য থেকে সমাজ,প্রকৃতি এবং পরমেশ্বর শক্তির মধ্যবর্তী অংশে যিনি সেতু হিসাবে অবস্থান করেন, ঈশ্বর ও প্রাণীকুলের মধ্যে সম্বন্ধকে যাঁর চরনে বসে উপলব্ধি ও অনুভব করা যায় তিনিই হলেন গুরু। সম্পূর্ণ সৃষ্টি চৈতন্য যুক্ত। চর ,অচরে একই ঈশ্বর তত্ব অবস্থান করে।একে বুঝে, সৃষ্টির সন্তুলনকে রক্ষা করে, সৃষ্টির সঙ্গে সমন্বয় করে জীবন ধারণ করাই মানবজাতির কর্তব্য।সৃষ্টির পরম সত্য হল – সম্পূর্ণ সৃষ্টি একে অপরের পরিপূরক। এটি সম্পূর্ণ সৃষ্টির আধার স্বরূপ। দান ধর্মই হল সংস্কার, ত্যাগ হল ভারতীয় সংস্কৃতি.. ত্যাগ, সম্পর্পন, সমন্বয় ই হল হিন্দু সংস্কৃতি। এগুলিই মানব জীবনে ,সৃষ্টি ক্ষেত্রে শান্তিযুক্ত, সুখময়, আনন্দময় জীবনের আধার হিসাবে কাজ করে।
নিত্য অনুভব
বৃক্ষ নিরন্তর কার্বন ডাই অক্সাইড কে গ্রহণ করে অক্সিজেন প্রদান করে ও সূর্যালোকের সহায়তায় সালোকসংশ্লেষের মাধ্যমে নিজের দেহে খাদ্য প্রস্তুত করে। বৃক্ষের এই অক্সিজেন প্রদানের ফলে প্রাণীকুল তা গ্রহণ করে জীবিত থাকে। মানব তথা সমগ্র প্রাণীকুলের জীবন বৃক্ষের উপর নির্ভরশীল। অন্যথা সমগ্র সৃষ্টির বিনাশ ঘটবে।। আজকাল দূষণ বৃদ্ধি ,গ্লোবালওয়ার্মিং এর নিমিত্ত সম্পূর্ণ বিশ্ব চিন্তিত, প্রাণী জগৎ বিনাশের মুখে উপস্থিত হয়েছে। কারন মানবকুলের অর্থ চিন্তা আছে কিন্তু জীবনের আধারকে রক্ষার চিন্তা নেই।
এই কারনেই সৃষ্টির সংরক্ষণে উদ্দেশ্যে মানুষকে যোগ্য মানুষ, মানবতা যুক্ত মানুষ বানাতে হবার। এইখানেই গুরু পূজার মহত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে থাকে। সৃষ্টিতে সকল জীবরাশি, প্রকৃতি নিজ নিজ ব্যবহার সঠিক রাখে।কিন্তু মানব জাতি উন্নত, সব থেকে বুদ্ধিমান প্রাণী।তাই তাদের বুদ্ধিতে বিকৃত সব থেকে বেশি হয়। সে কারণে তারা প্রকৃতির সন্তুলনকে নষ্ট করার কাজ করে। বুদ্ধির অহং মানবের বিনাশের কারন হয়। তাই “গুরুপূজা” দ্বারা মানব জীবনে ত্যাগ ও সম্পর্পনের ভাব নির্মাণ হয়।
গুরু ব্যক্তি নয়, একটি তত্ত্ব
আমাদের সমাজে সুপ্রাচীন কাল হতে ভগবান ব্যাস থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত শ্রেষ্ঠ গুরুর পরম্পরা চলে আসছে। ব্যাক্তিগত রীতি অনুযায়ী কোটি কোটি মানুষ নিজ নিজ গুরুর অনুসন্ধান করেন। শ্রদ্ধা ভক্তির সঙ্গে গুরু বন্দনা করেন। গুরু হতে অনেক সু সংস্কারে দীক্ষিত হন।এই কারনেই বহু বৈদেশিক ধর্মীয় সাম্রাজ্যবাদী আক্রমনের পরেও আমাদের দেশ , সমাজ, রাষ্ট্র আজও জীবিত আছে। এই কারনেই অন্য সমাজে জীবনে একত্মাতার অভাব লক্ষিত হয়। ফলত, দেশ মাতৃকার প্রতি ভালোবাসা হীনতা, ত্যাগ ভাবনা হীনতার নিমিত্ত ভ্রষ্টাচার , স্বার্থপরতা, বিষচিন্তা ভাবনা, হিংসা, দ্বেষ, অহংকার, শোক চরিত্র দোষ ইত্যাদির প্রকোপ দেখা যায়।
এই কারনেই রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ গুরুর স্থানে গৈরিকধ্বজাকে স্থান প্রদান করেছেন। গৈরিক ধ্বজা ত্যাগ , সমর্পণ এর প্রতীক স্বরূপ নিজ মহিমা বিস্তার করে। স্বয়মকে প্রজ্জ্বলিত করে বিশ্বকে আলোক ,প্রাণ দানকারী সূর্যের প্রতীক স্বরূপ এই গৈরিকধ্বজ। সম্পূর্ণ জীবজগতের শাশ্বত সুখের নিমিত্ত নিজেকে সম্পর্পনকারী সাধু , সন্ত গৈরিক বস্ত্র ধারণ করেন। কেশরীয়া রঙ ত্যাগের প্রতীক। আমাদের রাষ্ট্র জীবন ও মানব জীবনের ইতিহাসের সাক্ষী এই গৈরিক ধ্বজা। এই গৈরিক ধ্বজ শ্বাশত ,অন্তত, চিরন্তন….
ব্যক্তি পূজা নয়, তত্ব পূজা
সঙ্ঘ তত্ব পূজা করে ,ব্যক্তির পূজা নয়। ব্যক্তি শাশ্বত নহে কিন্তু সমাজ শাশ্বত। আমাদের এই সমাজ বহু ঋষি ,মহাত্মার বিভূতি দ্বারা পবিত্র হয়েছে, আজও তাদের সুকর্মের ফলনেই সমাজে বিদ্যমান। সেই মুনি, ঋষি ,মহাত্মাদের চরনে শত শত প্রনাম।
আমাদের রাষ্ট্র সমাজ, সম্পূর্ণ সমাজ, সম্পূর্ন হিন্দু সমাজকে রাষ্ট্রীয়তার আধারে ও মাতৃভূমির আধারে সংঘটিত করার কার্য রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘই করে থাকে।এই কারনে ব্যক্তিকে গুরুর স্থানে না রেখে গৈরিকধ্বজাকে আপন গুরু স্বীকার করেছে।
তত্বপূজা – তেজ, জ্ঞান ও ত্যাগের প্রতীক
ভারতীয় সমাজ সাংস্কৃতিক জীবনের যজ্ঞ এর একটি বৃহৎ মহত্ব আছে। যজ্ঞ শব্দটির বহু অর্থ হয়। ব্যক্তিগত জীবনকে সমর্পণ করে সমষ্টিগত জীবনকে পরিতুষ্ট করার প্রয়াসকেই যজ্ঞ বলা হয়। উজ্জ্বল পবিত্র প্রজ্জ্বলিত অগ্নিতে অযোগ্য , অশুভ, অনিষ্টকারী বস্তু বা বিষয়কে আহুতি দিয়ে হোম করাকেই যজ্ঞ বলা হয়।শ্রদ্ধাময়, ত্যাগময়, সেবাময়, তপস্যাময় জীবন অতিবাহিত করাও এক প্রকার যজ্ঞ। যজ্ঞের অধিষ্ঠাতা হন দেবতা। তা দেব যজ্ঞ। উজ্জ্বল , পবিত্র, জ্বালাময় অগ্নির প্রতিরূপ হল আমাদের গৈরিকধ্বজা।
আমরা শ্রদ্ধার উপাসক , অন্ধবিশ্বাসেরর নয়। আমরা জ্ঞানের উপাসক, অজ্ঞানের নয়।জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশুদ্ধরূপে জ্ঞানের প্রতিস্থাপন করাই আমাদের সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য ও উদ্দেশ্য।
প্রকৃত পূজা – তৈল বাতি জ্বলে – মানুষ বলে দীপ জ্বলে
যখন প্রদীপ জ্বলে আমরা চর্ম চক্ষে দেখতে পাই বা মনুষ্য মুখে বলি প্রদীপ জ্বলছে। কিন্তু প্রকৃত অর্থে সেখানে ঘৃত বা তৈল মধ্যে ডুবে সলতে নিজেকে জ্বালায়, নিজেকে আহুতি দেয় প্রদীপের তেলের নিমিত্ত।
কার্গিল যুদ্ধতে মেজর পদ্মপানী আচার্য, গনর রবিপ্রসাদ প্রমুখের ন্যায় অসংখ্য বীরসন্তান ভারতমাতার জন্য নিজ প্রাণ বলিদান দিয়েছিলেন। মঙ্গলজানের জন্য বহু বিজ্ঞানী নিজের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সুখকে সমর্পণ করেছিলেন।
সেই যে বহু বহু বহু বছর আগে , সেই সুপ্রাচীন কালে মহামুনি দধিচী পৃথিবীর সমাজের কল্যানের জন্য , তাকে সংরক্ষনের জন্য নিজের প্রাণ ত্যাগ করেছিলেন। নিজ রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য ত্যাগই হল আমাদেরর পরম্পরা। ত্যাগ , সমর্পণ হল ঈশ্বরের আরাধনা। মা নিজ সন্তান ও পরিবারের সুখের জন্য হাঁসি মুখে বহু কষ্ট সহ্য করেন , বহু আত্মত্যাগ করেন। মাঠে কৃষি কাজ করা কৃষক ও কারখানা, খনি ইত্যাদি ক্ষেত্রে কর্মরত শ্রমিকদের কষ্টসাধ্য আত্মত্যাগের জন্য আমরা অন্ন খেতে পাই ,প্রাত্যহিক যাবতীয় সুখ ভোগ করি। প্রতিদিনের সড়ক ,পরিবহন ব্যবস্থা ইত্যাদির জন্য শ্রমিকদের সাধ্যাতীত ত্যাগ থাকে।
শিক্ষক আচার্যগনের সমর্পনের নিমিত্ত কোটি কোটি মানুষ জ্ঞান প্রাপ্ত হন। চিকিৎসকগনের সমর্পণ সেবার কারনে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। অর্থাৎ, সমাজের সমস্ত কার্য সমাজের মধ্যে আরাধনা ও সমর্পনের ভাবনাতে সম্পন্ন হয়। কেবল জীবনে বাঁচার নিমিত্ত অর্থ নেওয়া। তবুও আজ সমাজের সেই ব্যবস্থাপনায় হ্রাস ঘটছে।
রাষ্ট্রায় স্বাহা – ইদং ন মম্
এই কারনে পরম পূজনীয় Doctor Keshav Baliram Hedgewar মহাশয় পুনশ্চঃ সমগ্র সমাজে , প্রত্যেক ব্যক্তির মধ্যে সমর্পণ ভাবকে জাগরিত করবার উদ্দেশ্যে গুরুপূজা অর্থাৎ ভাগবা ধ্বজ পূজার পরম্পরার সূচনা করেন।
ব্যক্তির নিকট প্রয়াসপূর্বক প্রাপ্ত শারীরিক শক্তি, বুদ্ধিশক্তি , ধনশক্তি থাকে । কিন্তু তার মালিক ব্যক্তি নয় সমাজ হয়, সমাজ রূপী পরমেশ্বর। যতটুকু প্রয়োজন বাঁচার তাগিদে টুক ততটুকুই গ্রহণ কর। বাকি সমাজের হিতে প্রদান কর। নিজ সময় ,জ্ঞান ,শক্তি ,ধনবল সমাজের হিতে প্রদান করাই হল প্রকৃত পূজা। যা আমি প্রাপ্ত করি তা সকলই সমাজ হতে প্রাপ্ত করি । তাই সব কিছুই সমাজের । সব কিছুই সেই পরমেশ্বরের। সূর্য পূজার সময় অর্ঘ্য প্রদানের উদ্দেশ্যে যেরূপ নদী হতে জল নিয়ে নদীতেই দেওয়া হয় ঠিক সেইরূপ সমাজের থেকে প্রাপ্ত বস্তু সমাজ হিতে প্রদান করে পরমেশ্বরকে অর্ঘ্য প্রদান করা উচিৎ। আমি , আমিত্ব , আমার ইত্যাদি অহং বোধের কদাপি স্থান নেই সেখানে। কিন্তু আজ চারিপার্শ্বে ব্যক্তি স্বার্থ , ব্যক্তি অহংকে গুরুত্ব প্রদান করা হচ্ছে। এই কারনে সমস্ত কুশ আসুরিক প্রবৃত্তি যেমন – হিংসা, দ্বেষ, লোভ ইত্যাদি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে ও পাচ্ছে। এ সব আসুরিক প্রবৃত্তিকে দলন করার জন্য ট্যাগ, তপস্যা ,প্রেম, নিরহঙ্কার ইত্যাদি গুণগুলিকে সমন্বিত করে নিজের জীবনে প্রোয়গ করাই হল গুরুপূজা।
শিবোভূত্বা শিবংযজেত্ – শিবকে পূজা করা অর্থাৎ স্বয়ং শিব হওয়া। অর্থাৎ শিবের গুনাবলীকে নিজের মধ্যে গ্রহণ করে তাকে জীবনের মার্গ দর্শন হিসাবে ব্যবহার করা। গৈরিক ধ্বজের পূজা অর্থাৎ গুরুপূজা অর্থাৎ ত্যাগ, সমর্পণ এর মত গুণগুলিকর নিজের জীবনে ব্যবহার করে সমাজের সেবা করতে হবে।সংঘের সংস্থাপক পরম পূজনীয় Doctor Keshav Baliram Hedgewar মহাশয় স্বয়ং নিজ জীবনকে নিজের সমাজের সেবায় উৎস্বর্গ করেছিলেন। সেটিই তাঁর জীবনের অন্যতম লক্ষ্য ছিল। তাই তাঁর জীবনরীতি আমাদের আদর্শ হওয়া উচিত।
পরম পূজনীয় গুরুজী রামকৃষ্ণ মিশনে দীক্ষিত ছিলেন। দীক্ষা নেবার পরে হিমালয় তপস্বী জীবন অতিবাহিত করেন। তিনি অসম্ভব জ্ঞানী ও বিদ্যান ব্যক্তি ছিলেন। কিন্তু তবুও রাষ্ট্রায় স্বাহা – ইদং ন মম্ – আমি নয় তুমি – জীবনে এই লক্ষ্য নিয়ে সমাজ সেবায় নিজের সর্বস্ব দান করেছিলেন। সাধারণ জীবিকা বৃত্তির লক্ষ্য মানুষ ,কৃষক,শ্রমিক থেকে শিক্ষক , মেথর ,মুচি, রিকশাচালক, কুলিমজুর, চিকিৎসক থেকে ইঞ্জিনিয়ার , গ্রাম থেকে নগর প্রত্যেকে নিজ সময়, ধন,শক্তিকে সমর্পণ করার কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত কর্ম সম্পাদন করছেন।ভারত বিবিধ ভাষা, সমাজ ও সংস্কৃতির দেশ । কিন্তু প্রত্যেকের মধ্যে ত্যাগের ভাব একসূত্রে গ্রথিত হয়েছে।
গুরু পূজা – প্রতি বছর, আষাড় পূর্ণিমা সংঘের শাখায় গুরুপূজার আয়োজন করা হয়। অর্থাৎ , গৈরিকধ্বজের উপাসনা। ভক্তিমূলক পথে সমাজের প্রতি নিজ নিজ শিক্ষা, সময় ও ধনসম্পদকে উৎসর্গ করার হেতু, একটি উন্নত ব্যক্তিত্বকে সমাজসেবায় উত্সর্গ করার হেতু, সুন্দর সমাজ গড়ে তোলার হেতু প্রতি বছর গৈরিক ধ্বজ উপাসনা করে। এটা দান বা উপকার নয় । এটি হল পরম কর্তব্য। ত্যাগেই স্বার্থকতা এইটাই মূল চিন্তাধারা। নিজের জন্য বা নিজের পরিবারের জন্য কাজ করা অন্যায় নয় ,কিন্তু শুধুমাত্র নিজের জন্য বা নিজ পরিবারের জন্য কাজ করে যাওয়া ভুল।এটা আমাদের সংস্কৃতি নয়। নিজের জন্য বা পরিবারের জন্য যেরূপ শ্রদ্ধাপূর্বক কঠোর পরিশ্রম করতে হয়, ঠিক সেটাই সমাজের জন্যও করতে হয়। এইভাবনাকে সমগ্র সমাজে প্রতিস্থাপন করলে সামাজিক সমস্যা ও কু প্রভাব বহুল অংশে হ্রাস পাবে।
আত্ম উৎস্বর্গই সমাজে একাত্ম ভাবের বৃদ্ধি করে। এই অনুভূতিতেই লক্ষ লক্ষ স্বয়ং সেবক তাদের সমাজের উন্নয়নের জন্য হাজার হাজার পরিষেবা প্রকল্প চালান। সমাজে, অনেক ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন সমাজকে ভালর জন্য বহু ভালো কাজ করেন। আজ, যারা হৃদয় দিয়ে সবকিছু সমাজের জন্য উৎসর্গ করে কাজ করে চলেছেন, তাঁরা সবাই একসাথে, একসঙ্গে একত্রে, পারস্পরিক সহযোগিতার সাথে সমন্বয় সাধন করে, সামাজিক সেবায় এগিয়ে যান। এতে শুভশক্তি আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে। ব্যক্তিপূজা, বস্তুবাদ, ভোগবাদ ইত্যাদি থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে সমাজের জন্য কাজ করা বেশ প্রতিকূল। প্রেম, ভক্তি, আত্মাহুতি, সেবা, নিঃস্বার্থতা, সহযোগিতার সঙ্গে ব্যক্তিবাদের একটি দ্বন্দ্ব আছে। ত্যাগ, উত্সর্গীকরণ, সহযোগিতা, সমন্বয়, একটি সূত্র মধ্যে গ্রথিত করে মানব জীবনে স্বার্থকতা আনবে। মানুষের জীবন ও বিশ্বের কল্যাণ এই ভাবেই সম্ভব।