আন্তর্জাতিক সোনা পাচার চক্রের দুই পান্ডাকে গ্রেফতার করা হল দক্ষিণেশ্বর স্টেশন থেকে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বেলুড় জিআরপি’র ওসি বিকাশ চন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের (Bikash Chandra Mukherjee) নেতৃত্বে রেল পুলিশের একটি দল রবিবার সেখানে হানা দেয়। ওই স্টেশনের ১ নং প্ল্যাটফর্ম থেকে দুই ভিন রাজ্যের যুবককে আটক করা হয়। এদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় ৬৫ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা । সূত্রের খবর,সোনা পাচারের পর এরা সেই টাকা কলকাতা থেকে ত্রিপুরায় (Tripura) নিয়ে যাচ্ছিল । পরিকল্পনা ছিল দক্ষিণেশ্বর স্টেশন থেকে উত্তরবঙ্গগামী কোনও ট্রেনে অসম হয়ে ত্রিপুরায় (Tripura) যাবে । এত টাকা কোথা থেকে আনা হচ্ছিল এবং এই পাচার চক্রে আর কারা যুক্ত তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে রেল পুলিশ জানিয়েছে ।
হাওড়ার (Hower) ডেপুটি রেল পুলিশ সুপার শিশির কুমার মিত্র (Siser Kumar Mitra) সোমবার বেলুড় রেল পুলিশ থানায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন,এই চক্র আন্তঃরাজ্যে ছড়িয়ে আছে | পুলিশের সন্দেহ শুধু রাজ্য নয় প্রতিবেশি বাংলাদেশেও সমানভাবে সক্রিয় এই চক্র | কারণ প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ হয়ে ত্রিপুরা ঢুকতো সোনা । এরপর অসম হয়ে আসত বাংলায় । এইভাবেই পাচারের জাল ছড়িয়েছিল। সোমবার দুপুরে এদের হাওড়া আদালতে তোলা হয়। জিআরপি এদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে ।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বেলুড় জিআরপি সাদা পোশাকে এবং ইউনিফর্মে দক্ষিণেশ্বরের ১ নম্বর প্লাটফর্মে জাল বিছিয়ে এই দুই সন্দেহভাজনকে প্লাটফর্মে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন। রেল পুলিশ এদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের পিঠে থাকা পিট্টু ব্যাগে তল্লাশি চালায় ।
ব্যাগ থেকে ৬৫ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা উদ্ধার হয়। সবই ছিল ৫০০ এবং ২ হাজারের ভারতীয় নোট। এত পরিমাণে টাকা তাদের কাছে কোথা থেকে এলো বা তার বৈধতা কি আছে জানতে চাইলে তারা কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি পুলিশের কাছে ।
এমনকি কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এরপর পুলিশ তাদের সেখান থেকে বেলুড় জিআরপি থানায় নিয়ে আসে। জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে এদের মধ্যে একজন সাহেবারব বালাসো ইরকার (Iker) (১৯), সে মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। অপরজন হলো শুভম অধিক্রব মেটকারি (২০) । রেল পুলিশের তদন্তকারীদের ধারণা এরা নিজেরাই সোনা পাচার চক্রের পান্ডা। সোনা কোথা থেকে আনা হয়েছিল এবং সেই সোনা কোথায় হস্তান্তর করা হয়েছে কার কাছে করা হয়েছে, কাদের থেকে তারা এই এত পরিমাণে টাকা পেল, এই পাচার চক্রে আর কারা যুক্ত তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে নেমে রেল পুলিশের তদন্তকারীদের ধারণা এই চক্র প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে অসম হয়ে বাংলায় ঢুকেছিল ।