প্যানেলের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরও অবৈধভাবে নিয়োগ হয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে গ্রুপ ডি ও গ্রুপ সি দুটি ক্ষেত্রেই একই অভিযোগ উঠেছে। গ্রুপ সি নিয়োগের মামলায় প্রায় ৩৫০ জনের বেতন বন্ধ করার নির্দেশ আগেই গিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এবার সেই মামলায় কমিশনকে নতুন করে হলফনামা দিতে বলল আদালত। এ দিন আদালতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে, এসএসসির থেকে পাওয়া সুপারিশপত্র পেয়েই নিয়োগ করা হয়েছিল। মঙ্গলবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে ছিল সেই মামলার শুনানি।
এ দিন মধ্যশিক্ষা পর্ষদ হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে, তারা এসএসসির থেকে সুপারিশপত্র পেয়েই নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়েছে। এই হলফনামা দেখে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, পর্ষদের এই হলফনামা থেকেই এই নিয়োগ প্রশ্নের মুখে পড়ে।
এই মামলায় আরও একবার সামনে এসেছে রাজ্য সরকারের দুই দফতরের কাজিয়া। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দাবি, স্কুল সার্ভিস কমিশনের সুপারিশেই ওই ৩৫০ জনের চাকরি হয়েছে। কিন্তু কমিশনের দাবি, তারা সুপারিশ করেনি। গ্রুপ ডি-র ক্ষেত্রেও একই ছবি সামনে এসেছিল।
এ দিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নতুন করে একটি হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তাতে গ্রুপ সি-তে কতগুলি পদ ফাঁকা ছিল, কত জনকে নিয়োগ করা হয়েছে, এখনও কত জনের নাম প্যানেলে রয়েছে – এমন সব তথ্য দিতে হবে। পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে জেলা স্কুল পরিদর্শকদের কাছে এইসব সুপারিশপত্রের প্রতিলিপি কাদের কাছ থেকে গিয়েছে। এর পরেই এই মামলায় প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেবে হাইকোর্ট। ২৩ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
আগে এই মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের তরফে ৩৫০ জনের বেতব বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। চলতি মাসের শুরুতে সেই শুনানি ছিল। নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ৩৫০ জন চাকরি পেয়েছেন, এমন অভিযোগ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মামলাকারীরা। আগেই এই মামলায় এক জনের বেতন বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পরে বাকিদেরও বেতন বন্ধ করার কথা বলে আদালত।
মামলাকারীদের দাবি ছিল প্যানেল বহির্ভূত ভাবে চাকরি পেয়েছেন অন্তত ৩৫০ জন। এদের মধ্যে যাঁরা চাকরিতে যোগ দিয়েছেন তাঁদের সবার বেতন বন্ধ করতে কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
এদিকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় গ্রুপ সি পদে প্রায় ৪০০ ভুয়ো নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এক বাসিন্দার দায়ের করা সেই মামলার শুনানি চলছে কলকাতা হাই কোর্টে। এদিকে যে ৪০০ জনকে ভুয়ো নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের ৩৫০ জনকে ইতিমধ্যে নিয়োগপত্র বা অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পেয়ে গিয়েছেন বলে খবর।