করোনার দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিল স্ট্রেনের এদেশে খোঁজ মেলার কথা স্বীকার করে নিল কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যেই কেরল ও মহারাষ্ট্রে করোনার এই নয়া স্ট্রেনের হদিশ মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। তবে বর্তমানে ওই দুই রাজ্যে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পিছনে নয়া এই নয়া স্ট্রেনই যে দায়ী একথা মনে করে না স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির সদস্য চিকিৎসক ভিকে পাল জানিয়েছেন, গত বছরের মার্চ ও জুলাই মাসে করোনার এই নয়া স্ট্রেনের হদিশ মিলেছিল মহারাষ্ট্রে। কিন্তু এই স্ট্রেনের ফের ফিরে আসার কোনও প্রভাব সেই লক্ষ্য করা যায়নি। তবে এই মুহূর্তে সংক্রমণ বেড়ে চলার পিছনে নয়া স্ট্রেনকেই দায়ী করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
তিনি আরও জানিয়েছেন, করোনার নয়া স্ট্রেনের মোকাবিলায় যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিতে কেন্দ্রীয় সরকার একটি টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছে। এখনও পর্যন্ত দেশে ব্রিটেনের করোনা স্ট্রেনে সংক্রমিত হয়েছেন ১৮৭ জন। দক্ষিণ আফ্রিকার করোনা স্ট্রেনে ৬ জন সংক্রমিত হয়েছেন। অন্যদিকে করেনাার ব্রাজিল স্ট্রেনে সংক্রমিত হয়েছেন একজন।
একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, করোনাভাইরাসের N440K স্ট্রেনটি মূলত দেশের দক্ষিণের রাজ্যগুলিতেই ছড়িয়ে পড়ছে। সিসিএমবি-র অধিকর্তা ডক্টর রাকেশ মিশ্র বলেন, ‘‘আপাতত আমাদের কাছে যে প্রমাণ এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে করোনার N440K স্ট্রেন দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে আরও অনেক বেশি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এর বিস্তারিত রূপটি সঠিকভাবে বুঝতে হলে খুব তৎপরতার সঙ্গে এর উপর নজরদারি করা দরকার।’’
অন্যদিকে, এদেশে করোনার নয়া দুই স্ট্রেনের সংক্রমণ ছড়ানো নিয়ে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর অধিকর্তা বলরাম ভার্গব বলেছেন, ‘‘বর্তমানে করোনার যে নয়া স্ট্রেনের হদিশ অন্য দেশগুলিতে মিলেছে সেগুলিকে ভাইরাসের ভারতীয় রূ হিসেবে কখনই বলা যাবে না।’’ ভারতে করোনার নয়া স্ট্রেনের হদিশ সম্পর্কে সমীক্ষা প্রসঙ্গে চিকিৎসক দিব্যা তেজ সৌপতি বলেছেন, ‘‘ভাইরাসের রূপান্তরগুলি পর্যবেক্ষণের দিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে।’’
করোনার নয়া স্ট্রেন নিয়ে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে। দক্ষিণের রাজ্যগুলির পাশাপাশি উদ্বেগ বাড়ছে মহারাষ্ট্রের সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়েও। কেন্দ্রের তরফে প্রতিনিয়ত রাজ্যগুলির সংক্রমণ পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কর্তারা এব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন রাজ্যগুলিকে। সংক্রমণ মোকাবিলায় কোভিড প্রোটোকল মেনে চলায় জোর দেওয়ার পাশাপাশি আরও বেশি সংখ্যায় করোনা টেস্টের কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।