পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসা-আইন রূপায়ণের বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এ ব্যাপারে জাতীয়তাবাদী চিকিৎসকদের উদ্যোগী হতেও তিনি আবেদন করেন। রবিবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের উপস্থিতিতেই এ রাজ্যের ‘ছোট মন’-এর বিরুদ্ধে মানুষকে সতর্ক করার আবেদন করেন রাজ্যসভায় বিজেপি-র সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত।
রবিবার দুপুরে যাদবপুরে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দি কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স প্রেক্ষাগৃহে ‘জাতীয়তাবাদী চিকিৎসক সংগঠন’-এর জাতীয় চিকিৎসা সভায় রাজ্যপাল বলেন, প্রায় ৪০০ বছর আগে শেক্সপিয়র বলেছিলেন, নামেতে কী আসে যায়। কিন্তু নামটা একটা বিচার্য বিষয়। ভারতমাতার আদর্শকে মাথায় রেখে যে চিকিৎসকরা এই সংগঠন করেছেন, নামেই তাঁদের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। সামাজিক আবশ্যিকতা থেকে তো বটেই, আমাদের নিজেদের স্বার্থেও চিকিৎসকদের শ্রদ্ধা করতে হবে। আমি শপথ নিয়েছি, সংবিধানকে রক্ষা করব। মানুষের পাশে থাকব। পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসা-আইন রূপায়ণে অনেক ঘাটতি রয়েছে। আপনারা আলোচনা করে আমাকে সুনির্দিষ্ট গঠনমূলক পরামর্শ দিন। আমি আপনাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।
স্বপনবাবু মঞ্চে তাঁর ভাষণে বলেন, পশ্চিমবঙ্গে কেবল দুটি ক্ষেত্রের বিস্তার দেখা যায়। একটি হল রেস্তোঁরা, অপরটি ওষুধের দোকান। এটা একটা অস্বাভাবিক ছবি। চিকিৎসাব্যবস্থার প্রবল খামতি এ রাজ্যে। ফলে চিকিৎসাব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এ রকম অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যেখানে আমজনতার জন্য ‘আয়ুস্মান ভারত’ প্রকল্প গোটা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাইছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার বাধা দিচ্ছে। এর কোনও যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি না। কোনও প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছিল বলে গোটা রাজ্যে এ ভাবে সারা বিশ্বের এ রকম সর্ববৃহৎ স্বাস্থ্য পরিকল্পনা রূপায়ণে বাধা দেওয়া যায়? এটা একটা কেলেঙ্কারি। এই ছোট মনের বিরুদ্ধে লোককে সতর্ক করতে হবে।
বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল তাঁর ভাষণে বলেন, আমি এক চিকিৎসক-কন্যা হিসাবে অনুভব করি কোনও চিকিৎসকের পরিবারকে কেন, কতটা ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। গত ৭/৮ বছরে পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসা-পরিষেবার নানা ক্ষেত্রে দূর্নীতি দেখা দিয়েছে। রামচন্দ্রের সেতুবন্ধনে কাঠবিড়ালিরা যে রকম অনুঘটকের ভূমিকা নিয়েছিল, আসুন আমরা হাতে হাত রেখে এভাবেই নতুন সমাজ তৈরির চেষ্টা করি। আশা করি, ২০২০-তেই সুজালাং সুফলাং সোনার বাংলা আমরা তৈরি করতে পারব।
সভায় বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় বলেন, জলপাইগুড়ি ও সংলগ্ন অঞ্চলে চিকিৎসাব্যবস্থার মান অত্যন্ত নিচু। গরিব লোকেদের চিকিৎসার জন্য অনেক কষ্ট করে কলকাতায় আসতে হয়। জাতীয়তাবাদী চিকিৎসকরা যদি উত্তরবঙ্গে চিকিৎসা পরিকাঠামো তৈরিতে অগ্রণী হন, ওই অঞ্চল তো বটেই সংলগ্ন প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিও উপকৃত হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন উদ্যোক্তা সংগঠনের সাংগাঠনিক সম্পাদক আরজি দুবে।