গঙ্গার জলস্তর কমতেই ফের গঙ্গা ভাঙনের কবলে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের ধানঘরা এলাকা। শনিবার সকাল থেকে ভাঙনের তীব্র আতঙ্ক ছড়াল এলাকায়। ইতিমধ্যেই প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ মিটার এলাকা গঙ্গা ভাঙনে নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে।
গঙ্গায় তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে আরও কয়েকটি বাড়ির। ফলে বাড়ি ছেড়ে জিনিসপত্র নিয়ে অন্যত্র ঠাঁইয়ের খোঁজে ইতিমধ্যেই বহু পরিবার। শীতের শুরুতেই ভাঙনের প্রকোপে রীতিমত উদ্বিগ্ন সামশেরগঞ্জের বাসিন্দারা।
দু’দিন আগেও ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ে সামশেরগঞ্জের দুর্গাপুর এবং শিবপুর ও চাচন্ড এলাকা। বেশ কিছু এলাকার জমি গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে যায়। স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে ভাঙন রোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক প্রশাসন।
গত মাসেও ভয়াবহ অবস্থা হয় সামশেরগঞ্জে। একের পর এক বাড়ি গিলতে শুরু করে গঙ্গা। একাধিক গ্রামের চাষের জমি চলে যায় নদী বক্ষে। সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন বহু মানুষ। এরপরও রক্ষে মেলেনি। সামশেরগঞ্জে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভাঙন শুরু হয়। প্রচণ্ড ভাঙন হওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দানা বাঁধে। বারবার তারা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন যেন কোনও পদক্ষেপ করা হয়। কারণ এই ভাঙন ঠিকমতো প্রতিরোধ করা না হলে ঘর-বাড়ি জমি সব গঙ্গায় তলিয়ে যেতে শুরু করবে। নিঃস্ব হয়ে যাবেন তাঁরা।
এর আগে সামশেরগঞ্জে তলিয়ে যায় গ্রামের পর গ্রাম। ৫০০-র বেশি পরিবার গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। খোলা আকাশের নীচে দিন কাটাচ্ছিলেন প্রায় ৭০ মতো পরিবার। কিছুদিন আগে সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন গোপালপুরের ভাঙন পরিস্থিতি দেখে যান। কিন্তু গৃহহারাদের পুনর্বাসন বা ত্রাণের কোনও ব্যবস্থাও করা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে।
কিছুদিন আগে শবদাহের ঘাটও ভাঙনের কবলে পড়ে। প্রতাপগঞ্জ মহেশতলার শবদাহ ঘাট ভেঙে পড়ে। প্রায় ১৫টি গ্রামের শবদাহ এই ঘাটের উপর নির্ভরশীল। শবদাহ চুল্লিটিকে ভাঙনের কবল থেকে বাঁচাতে বালির বস্তা ফেলা হয়। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা করা যায়নি।
আবারও শনিবার সকাল থেকে নতুন করে গঙ্গার গ্রাসে সামশেরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা। আলোর উৎসবে যখন গোটা বাংলা মেতে রয়েছে, তখন প্রমান গুনছেন ধানঘরা, দুর্গাপুর, শিবপুর, চাচন্ডের মানুষেরা। মাথার উপর থেকে ছাদটুকুও হারানোর আশঙ্কায় নিষ্পলক রাত কাটছে মানুষগুলোর। প্রশাসন তৎপর হয়ে এগিয়ে না গেলে কোনও ভাবেই বছরকার এই ভাঙন রোখা সম্ভব নয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।