করোনা পরিস্থিতিতে নাজেহাল স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগেই রমরমিয়ে কারবার চালাচ্ছে এক দল প্রতারক। এমনই প্রতারণা চক্রের খপ্পরে পড়লেন মহারাষ্ট্রের এক মহিলা চিকিৎসক। পরিবারের কোভিড আক্রান্ত সদস্যদের জন্য ‘রেমডেসিভিয়ার’ ওষুধ কিনতে গিয়ে খোয়ালেন টাকাও। পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, বাংলাতে তো বটেই, ভিন্ রাজ্যেও রীতিমতো জাঁকিয়ে বসেছে ওই প্রতারণা চক্র। বুধবার ওই চক্রের মূল পান্ডা-সহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে চন্দননগর পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে ৯০ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ও কয়েকটি সিম কার্ড উদ্ধার হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, পরিবারের সদস্যরা কোভিড আক্রান্ত হওয়ায় ‘রেমডেসিভিয়ার’-এর খোঁজ শুরু করেন বিভা আগরওয়াল নামে ওই চিকিৎসক। বিভার দাবি, সে সময়ই তাঁর হোয়াটস্অ্যাপে একটি মেসেজ আসে। তাতে বলা হয়, গাজিয়াবাদের একটি হাসপাতাল থেকে ‘রেমডেসিভিয়ার’ পাওয়া যাবে। এর পর হোয়াটসঅ্যাপে কথাবার্তার পর ‘রেমডেসিভিয়ার’-এর ২টি ভায়ালের জন্য পেটিএমের মাধ্যমে অগ্রিম ৬ হাজার টাকা দেন বিভা। অভিযোগ, টাকা দিলেও ওষুধ পাননি তিনি। এমনকি, যে নম্বরে পেটিএমে টাকা পাঠিয়েছেন, তাতেও যোগাযোগ করে লাভ হয়নি। খোঁজখবরের পর বিভা জানতে পারেন, স্টেট ব্যাঙ্কের ব্যান্ডেল শাখার একটি অ্যাকাউন্টে পেটিএমের ওই টাকা ঢুকেছে। এর পরেই চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের সাইবার ক্রাইম সেলে অভিযোগ করেন বিভা।
ঘটনার তদন্তে নেমে হাওড়ার দাশনগরের বাসিন্দা অমন সিংহ এবং চন্দননগরের সুমন নাথ নামে দু’জন প্রতারকের হদিশ পান সাইবার ক্রাইম সেলের গোয়েন্দারা। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, হোয়াটসঅ্যাপে বিভার সঙ্গে ওষুধ নিয়ে কথাবার্তার সময় নিজেকে চিকিৎসক অন্নু মেহতা বলে পরিচয় দিয়েছিলেন অমন। কলম্বিয়া এশিয়া হাসপাতালের এমআর হিসাবে কাজ করেন বলেও জানিয়েছিলেন।
পুলিশের দাবি, অমন-ই এই চক্রের মূল পান্ডা। প্রতারণার টাকা তাঁর সঙ্গী সুমনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যায়। তদন্তের পর অমনকে হাওড়া থেকে এবং চন্দননগর থেকে সুমনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিশ জানতে পারে, করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের অসহায়তার সুযোগ নিত ধৃতেরা। ধৃতদের কাছ থেকে যে মোবাইল উদ্ধার হয়েছে, সেটাই অপরাধের কাজে ব্যবহার করা হত বলে তদন্তকারীদের দাবি।
বিভার টাকা যে অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে, তা ইতিমধ্যেই সিল করে দিয়েছে পুলিশ। গোয়েন্দাদের দাবি, শুধুমাত্র বিভাই নন, আমন-সুমনের খপ্পরে পড়ে আরও অনেকেই প্রতারিত হয়েছেন।