আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ১৪ মে: রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সিলমোহর ব্যবহার করে চিটফান্ডের কায়দায় প্রতারণা বালুরঘাটে। গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র খুলে সাধারণ মানুষের লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট মালিকের। বালুরঘাটের বোয়ালদাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের বড় কাশিপুর এলাকার ঘটনা। এমন ঘটনায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন এলাকার কয়েক’শ পরিবার। গরীব মানুষদের লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে নিয়ে চম্পট দিয়েছে ওই কেন্দ্রের মালিক অসিত ঘোষ বলে অভিযোগ। প্রতারণার হাত থেকে রেহাই পায়নি ওই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের এক কর্মচারী থেকে শুরু করে বাড়ির মালিক কেউই। ঘটনা জানিয়ে ইতিমধ্যেই প্রায় ১৫ টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে বালুরঘাট থানায়। একাধিক লিখিত অভিযোগের পরেও অভিযুক্ত গ্রেপ্তার না হওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়েছেন প্রতারিতরা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সিলমোহর ব্যবহার করে গ্রামের মানুষদের সাথে নতুন কায়দায় এমন প্রতারণার জেরে এখন ব্যাঙ্কের প্রতিও আস্থা হারাতে শুরু করেছেন গ্রামের মানুষের একাংশ।
রবি হেমব্রম নামে এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, একাউন্ট খুলতে ৫০০ টাকা দিয়েছিলেন কিন্তু অ্যাকাউন্ট না খুলেই চম্পট দিয়েছেন গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের মালিক অসিত ঘোষ। গ্রামে অনেক বাসিন্দাদের কাছে টাকা তুলেছে ওই অভিযুক্ত। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তারা। ব্যাঙ্কও যদি মানুষের সাথে এমন প্রতারণা করে, তবে সাধারণ মানুষ আর যাবে কোথায়।
জানা যায়, বছর দেড়েক আগে বালুরঘাটের চকভৃগুর বাসিন্দা অসিত ঘোষ বড় কাশিপুরে প্রশান্ত দাসের বাড়ি ভাড়া নিয়ে এসবিআই’য়ের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র খোলেন। অল্প দিনেই সেখানকার মানুষদের প্রচুর একাউন্ট খুলে দেন তিনি। অভিযোগ অনেকের কাছে একাউন্ট খোলার নাম করে টাকা তুললেও সে টাকা তিনি জমা দেননি। শুধু তাই নয় ব্যাঙ্কের টাকা গ্রাহকরা জমা করলেও সেই টাকা তিনি জমা করান নি বলেও অভিযোগ। যার পরেই আচমকা বেপাত্তা হয়ে যান তিনি। এদিকে বাসিন্দারা তাদের টাকা নিজের একাউন্টে না পেতেই প্রতারিত হওয়ার ঘটনা একে একে সামনে আসে। লিখিত অভিযোগ দায়ের করে তাদের অধিকাংশই দ্বারস্থ হয়েছেন বালুরঘাট থানার।
এদিকে বেশ কয়েক মাস ধরে বাড়িভাড়া ও ইলেকট্রিক বিল না পাওয়ায় পুরো ঘটনা জানিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বাড়ির মালিক। ঘটনা নিয়ে একাধিক লিখিত অভিযোগ, এর পরেও অভিযুক্ত গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের মালিক অসিত ঘোষ গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে বড় কাশিপুর এলাকায়।
বাড়ির মালিক প্রশান্ত দাস জানিয়েছেন, বেশ কয়েক মাস ধরে বাড়ি ভাড়া ইলেকট্রিক বিল পাননি তিনি। হঠাৎ করে বেপাত্তা হয়ে যাওয়ায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। প্রচুর মানুষজনের টাকা আত্মসাৎ করেছে ওই যুবক। যা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই তাকে জবাবদিহি করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছে।
বালুরঘাট থানার আইসি জয়ন্ত দত্ত জানিয়েছেন, পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।