সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত বিতর্কিত ছবি ‘গুমনামি’র মুক্তিতে আর কোনও বাধা-বিপত্তি রইল না। হাইকোর্টের নির্দেশের পর আগামী ২ অক্টোবর কলকাতা সহ সারাদেশে মুক্তি পাবে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় অভিনীত ‘গুমনামি’ (Gumnami) গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘গুমনামি’র ওপর স্থগিতাদেশ জারির দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা দেবব্রত রায়। বুধবার সেই মামলা খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য প্রসঙ্গ উত্থাপন করে প্রধান বিচারপতি রায় দেন ‘গুমনামি’তে কোনওরকম স্থায়ীভাবনা কিংবা মত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়নি। তাহলে এই ছবিকে কীসের ভিত্তিতে আটকানো হবে! তাই ‘গুমনামি’র মুক্তির আদেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।
নির্দেশে পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় (Srijit Mukherji) ধন্যবাদ জানিয়েছেন উচ্চ আদালতকে। ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা দেবব্রত রায়ের বক্তব্য ছিল, “ছবির নাম ‘গুমনামি’ তবে মুখার্জি কমিশন কিন্তু বলেনি যে গুমনামিবাবাই নেতাজি। ভারত সরকার যেখানে এই যুক্তির পক্ষে প্রমাণ দিতে পারেনি, সেখানে নেতাজিকে নিয়ে সিনেমা বানিয়ে অপমান করার অধিকার কারও নেই। কারণ, নেতাজির সঙ্গে গোটা দেশের আবেগ জড়িত।” নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য আজও অধরা। তাহলে, সৃজিত কিংবা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় কীসের এই সিনেমা তৈরি করতে পারেন? এমন প্রশ্ন তুলেছিলেন দেবব্রত রায়। তাই সেন্সর বোর্ড ‘গুমনামি’ মুক্তির নির্দেশ তুলে নিক, দাবি তুলেছিলেন ওই ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা। কিন্তু তার এমনসব যুক্তিকে গ্রাহ্য না করে অবশেষে মামলা খারিজ করে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High court)। সৃজিতের দাবি ছিল, তাঁর ছবিটি কোনও সিদ্ধান্ত নয়। চন্দ্রচূড় ঘোষ ও অনুজ ধরের লেখা বই ‘সিনেনড্রাম’ ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে তাঁর এই কাহিনী চিত্রটি।
ছবির ‘গুমনামি’ নাম নিয়ে আপত্তি রয়েছে বিশিষ্ট আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের। তিনিও ছবির নাম বদলানোর দাবি তুলেছিলেন প্রকাশ্যে। এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “আমি কখনও শিল্পী স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের পক্ষপাতি নই। আদালত যে রায় দিয়েছে আমি তাকেও সম্মান করি। কিন্তু মাননীয় পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের কাছে আমার একটি প্রশ্ন, তিনি যখন ছবিটির মাধ্যমে কোনও সিদ্ধান্তেই আসতে চাইছেন না। তাহলে কেন ছবিটির নাম ‘গুমনামি’ রাখা হচ্ছে? নেতাজিকে ঘিরে অন্য কোনও নামও তো রাখতে পারতেন।”