কেন সতর্ক করা গেল না চালককে? কোথায় গাফিলতি? কারা কারা সেই গাফিলতিতে জড়িত? প্রশ্ন উঠছে৷ কলকাতায় পার্ক স্ট্রিট মেট্রো স্টেশনে যাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যুতে উঠছে এতগুলি প্রশ্ন৷ ইতিমধ্যেই মৃত ব্যক্তির পরিবারের তরফে কলকাতা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে৷
এছাড়াও কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে দায়ের করা হয়েছে দুটি মামলা৷ মামলাগুলির প্রেক্ষিতে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের বেশ কয়েকজন আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে খবর৷ ৬৬ বছর বয়েসী সজল কাঞ্জিলাল কসবার বাসিন্দা ছিলেন বলে জানা গিয়েছে৷ তাঁর এই মৃত্যু নাড়িয়ে দিয়ে গিয়েছে কলকাতার গর্বকে৷ মেট্রো রেলের ৩৫ বছরের ইতিহাসে এই ধরণের ঘটনা প্রথম বলেই জানা যাচ্ছে৷ এজন্য মেট্রোর যান্ত্রিক ত্রুটিকেই প্রাথমিকভাবে দায়ি করা হচ্ছে৷ তবে চালককে কেন সতর্ক করা গেল না, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন৷
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, সজল বাবু উঠতে পারেননি মেট্রোতে, কিন্তু হাত আটকে গিয়েছিল দরজায়, আর সেই অবস্থাতেই ছোটে মেট্রো৷ খবর পেয়েই ট্রেন থামে টানেলে৷ কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে৷ আহত যাত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়৷ পার্ক স্ট্রীট ডাউন লাইনে বন্ধ হয়ে যায় মেট্রো চলাচল৷
জানা যাচ্ছে, সন্ধ্যা ৬.৪০ মিনিট নাগাদ এই ঘটনা ঘটে ডাউন লাইনে ময়দান মেট্রো স্টেশনে৷ মেট্রোতে উঠতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত উঠতে পারেননি সজল বাবু৷ তাঁর হাত আটকে যায়, সেই অবস্থাতেই তাকে টেনে নিয়ে যায় মেট্রো৷ গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাকে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো সম্ভবপর হয়নি৷
এই গোটা ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় মেট্রো যাত্রীদের মধ্যে৷ টানেলে মেট্রো থামিয়ে তাদের চালকের কেবিন দিয়ে বের করে আনা হয়৷ জানা গিয়েছে মেট্রোটির যে রেকে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা চেন্নাই থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল৷ দুবছর ধরে রেকগুলি নিয়ে ট্রায়াল রানও হয়৷ তাহলে কি সেই ট্রায়াল রানেই গাফিলতি ছিল? নাকি ট্রায়াল রানের সময়সীমা যথেষ্ট ছিল না৷ সজল বাবুর মৃত্যু মেট্রো রেলের যাত্রী নিরাপত্তাকে যেমন প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল, তেমনই তুলে দিয়ে গেল আরও কঠিন কিছু প্রশ্ন৷