পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং সমিতি নিজেদের রিপোর্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে পেশ করেছে। পাঁচ সদস্যের সমিতি মঙ্গলবার এই রিপোর্ট কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিষাণ রেড্ডির হাতে তুলে দিয়েছেন। রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসা পূর্বপরিকল্পিত ছিল। রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, মমতা ব্যানার্জীর সরকার হিংসা রুখতে বিফল হয়েছে। সমিতির সদস্যরা ৬৩ পেজের একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে, এই রিপোর্ট তৈরি করার জন্য সমিতির সদস্যরা বাংলায় এসেছিলেন। ২০০-র বেশি ছবি আর ৫০-র বেশি ভিডিও বিশ্লেষণ করে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিষাণ রেড্ডি জানিয়েছেন, রাজ্যে নির্বাচনের পর হওয়া হিংসার তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তাঁরা নিজেদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে। নির্বাচনের পর ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজনৈতিক হিংসায়। ১৫ হাজারের বেশি হিংসার ঘটনা হয়েছে, ৭ হাজারের বেশি মহিলার উপর অত্যাচার হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেন, ১৬ জেলায় রাজনৈতিক হিংসা হয়েছে। হিংসার ফলে অনেকেই প্রাণ ভয়ে ভিন রাজ্যে পালিয়ে গিয়েছে। সমিতির দ্বারা দেওয়া এই রিপোর্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে তদন্ত করা হবে। এরপর যা পদক্ষেপ নেওয়ার নেওয়া হবে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, রাজ্য সরকার নাগরিকদের মূল অধিকারের সংরক্ষণ করতে বিফল হয়েছে। ভোট পরবর্তী হিংসা পূর্বপরিকল্পিত ছিল সেটাও বলা হয়েছে রিপোর্টে। সমিতির সদস্যরা জানিয়েছেন যে, নিরীহ মানুষদের উপর অপরাধী, মাফিয়ারা অত্যাচার চালিয়েছে।
সমিতি এও জানিয়েছে যে, একটি দলের লোককে নিশানা করে অত্যাচার চালানো হয়েছে। হিংসায় পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। পুলিশ নির্যাতিতদের ন্যায় পাইয়ে দেওয়ার বদলে তাঁদের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করেছে। এছাড়াও অভিযোগের পর পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি।
রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, অনেকেই নিজের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। অনেকের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকদের আধার কার্ড, রেশন কার্ড ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও রাজ্যে অনেক বোমা উদ্ধার হয়েছে এবং পিস্তলের অবৈধ কারখানারও হদিশ পাওয়া গিয়েছে। আপনাদের জানিয়ে দিই, রাজ্য সরকার এই কমিটিকে বাংলায় আসার অনুমতি দিয়েছিল না।