রাজ্যের ১১১ টি পুরসভায় নির্বাচন দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ তবে এই তালিকায় নেই কলকাতা পুরসভা৷
হাওড়া পুরনিগমে ভোট করানোর দাবি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা ঠুকেছিল বামেরা। সেই মামলায় এদিন রায় দিল হাইকোর্ট। তবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচন করেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করতে হবে৷
উল্লেখ্য,২০২০-র মার্চ-এপ্রিলে পুরভোট হওয়ার কথা হলেও, করোনার কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। এরপর দীর্ঘ লকডাউনের জন্য তা স্থগিত হয়ে যায়। ফলে বিভিন্ন পুরসভা ও পুরনিগমে বসেছে প্রশাসক৷ তারপর আনলক পর্ব শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত পুরভোট হয়নি৷
এদিকে হাওড়া পুরনিগমে ভোট করানোর দাবি নিয়ে বামেরা কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে৷ সেই মামলার রায়ে শুক্রবার বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, অবিলম্বে সমস্ত প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে হাওড়া পুরনিগমে নির্বাচন করাতে হবে রাজ্য সরকারকে। তবে সেজন্য কোনও সময়সীমা দেয়নি আদালত।
অন্যদিকে বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যে পুরভোট নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী। ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল আরোরাকে চিঠি লিখে তিনি অভিযোগ জানিয়েছেন যে, বিধানসভা ভোটে নিজেরা সুবিধা নিতেই পুরভোট করাচ্ছে না তৃণমূল৷
উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদ জেলায় ৮টি পুরসভা রয়েছে। এখন পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষের পর বেশিরভাগ পুরসভায় চেয়ারম্যান পদে থাকা ব্যক্তি-ই এখন পুর প্রশাসকের দায়িত্বে। যার তীব্র বিরোধিতা করেছেন অধীর চৌধুরী। তাঁর দাবি রাজনৈতিক নেতারা প্রশাসকের দায়িত্বে থাকায় ভোটের কর্মকাণ্ডে প্রভাব পড়বে। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, “পশ্চিমবঙ্গের অনেক পুরসভায় নির্বাচিত কাউন্সিলারদের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও সেখানে নির্বাচন না করিয়ে প্রশাসক বসিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার।
নিজেদের রাজনৈতিক অভিসন্ধি পূরণের জন্যই সাংবিধানিক রীতিনীতিকে লঙ্ঘন করছে তৃণমূল। আসলে মে মাসে হতে চলা বিধানসভা নির্বাচনের সময় অনৈতিক সুবিধা লাভের আশায় রাজ্যের পুরসভাগুলিতে নির্বাচন স্থগিত রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার। নোংরা রাজনীতির স্বার্থেই এই কাজ করছে তারা।”
জুন মাসে ফুরিয়ে যায় কলকাতা পুরসভার মেয়াদ। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। সেই অবস্থাতেই পুরসভা পরিচালনা করার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রশাসক নিয়োগ করে রাজ্য।
কোনও প্রকারের অর্ডিন্যান্স না এনে একবলমাত্র বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকারের প্রশাসক নিয়োগ করা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এরপরই মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে কলকাতা পুরসভায় প্রশাসক পদে নিয়োগের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন উত্তর কলকাতার অরবিন্দ সরণির বাসিন্দা শরদকুমার সিং।
করোনা সংক্রান্ত আপৎকালীন পরিস্থিতিতে প্রশাসক বোর্ডকে কেয়ারটেকার হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে ২০ জুলাই পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন তিনি। যার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন মামলাকারী। মামলার জল গড়ায় শীর্ষ আদালতে।