রাজ্যে আর কয়েকমাসের মধ্যেই বিধানসভার নির্বাচন। তবে নির্বাচন ঘোষণার আগেই রাজ্যে দলবদলের রাজনীতি শুরু হয়ে গিয়েছে। আর এই দলবদলের রাজনীতিতে সবথেকে প্রভাবিত যেমন শাসক দল তৃণমূল। তেমনই সবথেকে লাভবান হচ্ছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। বাংলা দখলের স্বপ্ন নিয়ে বিজেপি একের পর এক তৃণমূল নেতা, বিধায়ক, মন্ত্রীদের দলে টেনে দল ভারী করার কাজে লেগে পড়েছে।
তবে বিজেপি তৃণমূলের দল যত ভাঙছে ততটাই গেরুয়া শিবিরে অস্বস্তি বাড়ছে। কারণ বিজেপির পুরনো নেতা-কর্মীরা অনেকেই দলবদলুদের মেনে নিতে পারছেন না। তাঁদের মতে দলে যদি একের পর এক তৃণমূল নেতা আসতেই থাকেন, তাহলে তৃণমূল আর বিজেপির মধ্যে কি পার্থক্য থাকবে?
তৃণমূল ভাঙিয়ে বিজেপির পাল্লা ভারী করায় অনেক জায়গায় বিজেপির কর্মীরা বিক্ষোভও দেখিয়েছে। আর সেই কারণে এবার দলবদলের পালায় আপাতত ইতি টানতে চাইছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলবদলের পালা বন্ধ করে শুদ্ধিকরণের রাস্তায় হাঁটছে গেরুয়া শিবির।
বিজেপির মহাসচিব তথা রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় কার্যত ঘোষণা করে দিয়েছেন যে, নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে আর দলে নেওয়া যাবে না। অনেকের মতেই তৃণমূলের নৌকা ডুবছে ভেবে অনেক তৃণমূল নেতাই এখন বিজেপিতে আসতে চাইবে। আর এতে তৃণমূলের যেমন ক্ষতি হবে, বিজেপিরও ঠিক তেমনই ক্ষতি হবে। কারণ দুর্নীতিতে যুক্ত নেতারা বিজেপিতে ঢুকে আবারও সেই একই কাজ করবে।
আর এই পরিস্থিতিতে অবাধে অনুপ্রবেশের রাস্তা বন্ধ করল বিজেপি নেতৃত্ব। স্বয়ং অমিত শাহের নির্দেশেই দলবদলের পালায় আপাতত রাশ টানা সম্ভব হয়েছে। বিজেপির মহাসচিব কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানিয়েছেন যে, তিনি কোনওমতেই বিজেপিকে তৃণমূলের বি-টিম হতে দেবেন না। তাই এখনকার মতো দরজা বন্ধ করা হচ্ছে।
আরেকদিকে, গত ডিসেম্বর মাসে তৃণমূল ছেড়ে অমিত শাহের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী রবিবার তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন যে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা আর কলকাতা পুরো সাফ করে দেব। তৃণমূল কোম্পানির পতাকা ধরার মতো আর কেউ থাকবে না। উল্লেখ্য, তিনি হুঁশিয়ারির সুরে তৃণমূলে আরও বড়সড় ভাঙন ধরানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এখন প্রশ্ন উঠছে বিজেপি যদি দরজা বন্ধ করে থাকে, তাহলে শুভেন্দু অধিকারীর এই হুঁশিয়ারি অথব চ্যালেঞ্জ দেওয়া ভাষণের গ্রহণযোগ্যতা ঠিক কতটা বজায় থাকবে?