গেরুয়া ঝড়ে তছনছ জোডা়ফুলের বাগান৷ পদ্ম-জুজু দেখছেন তৃণমূল নেতৃত্ব৷ আশঙ্কা আরও বাড়ালেন বারাকপুরের বিজয়ী প্রার্থী অর্জুন সিং৷ প্রশ্ন তুলে দিলেন মমতা সরকারের দ্বিতীয় দফার মেয়াদ নিয়ে৷
প্রেসটিজ ফাইটে জয় পেয়েছেন বিজেপির অর্জুন সিং৷ শুক্রবার ঘুরে গিয়েছেন দলের রাজ্য দফতরেও৷ আজ যাবেন দিল্লি৷ তার আগে প্রত্যয়ী অর্জুনের হুঙ্কার, ‘‘অপেক্ষা ২০২১ পর্যন্ত নয়৷ চলতি বছরের শেষের দিকেই মুখ থুবড়ে পড়বে এই সরকার৷’’ এখানেই থেমে না থেকে তৃণমূলের এই প্রাক্তন বিধায়কের দাবি, ‘‘৬০ জন বিধায়ক তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানে জন্য যোগাযোগ করেছেন৷’’
এর আগে প্রচারে রাজ্যে এসে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘২৩ মে থেকেই শুরু হবে দিদির শেষের শুরু৷’’ ৪০ তৃণমূল বিধায়ক যোগাযোগ রাখছেন তাঁর সঙ্গে৷ তখন অবশ্য সেই দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো৷ মুকুল রায় বলেছিলেন, ‘‘রাজ্যে বিজেপি ভালো করবে৷ ২০১৯ এর ডিসেম্বরের মধ্যেই পতন হবে তৃণমূল সরকারের৷’’ মুকুলের সেই দাবির প্রতিফলন এবার অর্জুনের গলায়৷
বাংলায় বিজেপির উত্থান নজরকাড়া৷ ৪২ আসনের মধ্যে বিজেপির দখলে ১৮৷ যা ২০১৪-র তুলনায় ১৬টি বেশি৷ গত পাঁচ বছরে ভোট একলাফে ১৭ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশের কিছু বেশিতে৷ লোকসভার নিরিখে রাজ্যে ১২৯টি বিধানসভা আসনে এগিয়ে রয়েছে পদ্ম শিবির৷ রাজ্যে বিকল্প হিসাবে মানুষ ভরসা রাখছেন বিজপিতে৷ এই অবস্থায় মমতার নেক নজরে দলের বহু বিধায়ক৷ অনেকেই হয়তো ২০২১ বিধানসভা ভোটে টিকিট পাবেন না৷ তাদেরই অনেকে নিজেরা বিজেপিতে আসবেন, আবার অনেককে মুকুল-অর্জুনরা দলে নেওয়ার চেষ্টা চালাবে৷
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গে গেরুয়া দলের পালে হাওয়া রয়েছে৷ লোকসভাতেও জয় এসেছে৷ বঙ্গরাজনীতির সমীকরণও পালটাচ্ছে৷ স্পষ্ট হয়েছে মেরুকরণ৷ এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী ও অর্জুন সিংয়ের দাবি সত্যি হলে একযোগে শতাধিক বিধায়ক তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিতে পারেন বিজেপিতে৷ তাহলে সংখ্যালঘু হয়ে পরবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় দফার সরকরা৷
লোকসভার ফলে অবশ্য ভয়ের কিছু নেই বলে দাবি নাম প্রকাশে অনুচ্ছুক বহু তৃণমূল নেতার৷ দুটি নির্বাচনের প্রেক্ষিত আলাদা বলে বিজেপির দাবি ওড়াচ্ছেন তারা৷ তবে চোরা গেরুয়া স্রোত নজরে পড়তেই তড়িঘড়ি কালীঘাটে পর্যালোচনা বৈঠকের ডাক দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো৷
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ড্যামেজ কন্ট্রোল কীভাবে করবেন মমতা? তার উপরই নির্ভর করছে অর্জুন সিং বা মুকুল রায়দের দাবির বাস্তবায়নের বিষয়টি৷