‘দিন পালটেছে, অভ্যাস পালটান৷’ পুলিশকে কড়া হুঁশিয়ারি রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের৷
তাঁর মন্তব্যে আগেও বিতর্ক দেখা গিয়েছিল৷ এবার পুলিশকেই আচরণ পালটানোর নিদান দিয়ে সংবাদ শিরোনামে দিলীপবাবু৷
বিজেপি কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে বলে বারংবার অভিযোগ তোলছে গেরুয়া শিবির৷ পুলিশের বিরুদ্ধে শাসক দলের হয়ে কাজ করারও কথাও বলেন বিজেপি নেতৃত্ব৷ সেই প্রেক্ষাপটে এদিন মেদিনীপুরের সাংসদের পুলিশকে বার্তা বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে৷
শমিবার কেশপুরের সভায় দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘এরাজ্যে পুলিশের অবস্থা বেশ শোচনীয়৷ সেদিন টিভিতে দেখলাম পুলিশের তোলা তোলার অপরাধে মানুষ তাদের মারছে৷ আর ওরা ঝোপের মধ্যে গিয়ে লুকিয়া রয়েছে৷ কেন এই দুরাবস্থা তা নিজেরাই ভেবে দেখুন৷’’ মুখে হাসি নিয়ে সভায় সাংসদ বলেন, ‘‘এবার পুলিশ স্ত্রীর কাছেও মার খাবেন৷’’
দিন কয়েক আগেই ঘটেছে গুড়াপকাণ্ড৷ যেখানে পুলিশের গুলিতে প্রাণ গিয়েছে এক বিজেপি কর্মীর৷ সেই ঘটনাকে তুলে ধরে রাজ্য বিজেপি সভাপতি বলেন, ‘‘সন্দেশখালি থেকে ভাটপাড়া, গুড়াপ৷ যেখানেই অশান্তি সেখানেই পুলিশের ভূমিকা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন৷’’ কার্যত শাসক দলের প্রতি পুলিশের অতি ভক্তি নিয়ে যা কটাক্ষ৷
ঘাটল লোকসভার অন্তর্গত কেশপুর অঞ্চল৷ যেখানে শাসক তৃণমূলের শক্তি প্রবল৷ কেশপুরে প্রচারে গিয়ে বাধা পেয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ৷ ভোটের দিনও বুথে গেরুয়া প্রার্থীর উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়৷ তৃণমূল কর্মী, সমর্থকদের বিরুদ্ধে ভারতী ঘোষকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে৷ কারণ বিসাবে দিলীপ ঘোষের নিশানায় পুলিশ৷ শাসক সন্ত্রাস বন্ধে পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ তাঁর৷
দিলীপবাবু বলেন, ‘‘ভোটের আগে কেশপুরে ভারতী ঘোষকে নিয়ে এসেছিলাম। আমাদের কর্মসূচি করতে দেয়নি। কত কর্মীকে মেরেছে। সেদিন সভা করতে দেয়নি। সেদিন আমি বলেছিলাম, চিন্তা করবেন না, আমরা আছি। আজ হাজার হাজার মানুষ বিজেপি করার জন্য এগিয়ে আসছেন। সেদিন রাস্তায় আমাদের ঝান্ডা লাগাতে দেয়নি। আজ তৃণমূলের ঝান্ডা দেখা যাচ্ছে না। সবে তো শুরু। কেশপুরকে তৃণমূলের শেষপুর করে ছাড়ব৷’’
ভোটে বিপর্যয়ের পর মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ছিল, পুলিশের একাংশ কথা শুনছে না৷ নীরব হয়ে কাজ করছে৷ ডিজিকে ধমকিও দেন তিনি৷ মন্ত্রীরাও পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার কারণে সরব৷ লোকসভা ভোটে বাংলায় গেরুয়া ঝড়ের কারণেই পুলিশের এই বদল বলে মনে করা হচ্ছে৷ এই অবস্থায় উর্দিধারীতেদের রাজ্য বিজেপি সভাপতির ‘দিন পালটেছে, অভ্যাস পালটানে’র হুঁশিয়ারী বেশ তাৎপর্যবাহী৷