“একটা আগুন লাগবে, এক মাস ধরে চর্চা চলবে। বড় কোনও ঘটনা ঘটলে, আলোচনা হবেই। তারপর সবাই ভুলে যাবে। কিন্তু স্থায়ী সমাধানের জন্য সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।” কলুটোলা স্ট্রিটের বিধ্বংসী আগুন লাগার ঘটনায় সরকারকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ।
তিনি বলেন, “কলকাতা জতুগৃহ। যখনই আগুন লাগে, প্রচারের আলোয় আসে। দেখুন দু’মাস ধরে বন্যা চলছে, এখন আবার আগুন! পশ্চিম বাংলার বন্যাও একশো বছরের পুরনো, তার কোনও সমাধান করার ইচ্ছা নেই কারোর। বৃষ্টি হলেই বন্যা শুরু হয়ে যায়। কলকাতার মধ্যে আগুন লাগাটাও নতুন কিছু না। ত্রিশ চল্লিশ বছর ধরে দেখুন বিভিন্ন বস্তি বিভিন্ন বাজার পুড়ছে। অগ্নি নির্বাপণের কোনও ব্যবস্থাও নেই। সেটার কোনও চেকিংও হয় না। কেউ নো অবজেক্টশন নিয়েছে কি না, ফায়ারের অনুমতি নিয়েছে কি না, তার কোনও ইয়ত্তা নেই।”
দিলীপ ঘোষের কথায়, ” বড় বড় মার্কেট জ্বলে গেল। ঘিঞ্জি রাস্তাঘাট। সেখানে দমকলের গাড়িও ঢুকতে পারে না। এর স্থায়ী সমাধানের জন্য সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। ঠিকঠাক পারমিশন আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে হবে। সব জায়গায় টেম্পোরারি কাজ করে চালিয়ে দেওয়ার তালে আছে সরকার। সেই জন্য এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে।”
লুটোলা স্ট্রিটের ওই বাড়িতে এখনও পর্যন্ত চারটি পরিবার বাস করছে। আগুন লাগার পরে তাঁদের সাহায্যের জন্যও কেউ এগিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ। রাতেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তবে মঙ্গলবার সকালেও ওই বাড়ি থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যাচ্ছে।
দমকল কর্মীরা এখনও কাজ করছেন। কোথাও পকেট আগুন রয়েছে কিনা, সেটাও তাঁরা দেখছেন। ওই এলাকার পরিস্থিতি এখন অত্যন্ত খারাপ। স্থানীয়দের কথায়, জল নেই, খাবার নেই, বিদ্যুত্ সংযোগ নেই। এই অবস্থাতেই ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে ওই এলাকায় থাকছেন আবাসিকরা।
সোমবার সারাদিন মালিকপক্ষকে এলাকায় দেখা যায়নি। মঙ্গলবার এলাকায় ঢুকতেই স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন মালিকপক্ষ। আবাসিকদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে এদিন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তাঁরা। পুলিশ গিয়ে তাঁদেরকে বের করে নিয়ে যায়। ক্ষতিপূরণের দাবি তোলেন আবাসিকরা। তাঁদের বাসস্থান তৈরি করে দেওয়ার দাবি তোলেন। এবং সেক্ষেত্রে তাঁরা কোনও মৌখিক আশ্বাসে ভুলবেন না। তাঁদের বিষয়টি লিখিত দিতে হবে বলেও দাবি তোলেন তাঁরা। মালিকপক্ষের কাছ থেকে লিখিত আশ্বাস চান তাঁরা। এই নিয়ে পুলিশের সামনেই তাঁরা আলোচনা করেন। এরপরই ওই এলাকা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন মালিকপক্ষ।
সোমবার ভোরে এখানে আগুন লাগে। সকাল থেকে দমকলের ২০টি ইঞ্জিন তৎপর ছিল আগুন নেভানোর কাজে। প্রথমদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে মনে করা হলেও বিকেলে ফের নতুন করে আগুনের ফুলকি বের হতে দেখা যায়। ওই বহুতলটি পিছনের অংশ সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে। দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু জানান, “খুবই ঘিঞ্জি এলাকা। দমকলকর্মীরা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করেছেন।