ক্যানিংয়ে তৃণমূল নেতার গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় শাসকদলকেই কাঠগড়ায় তুললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রবিবার নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে গিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, “ওখানে বিরোধী আছেটা কে? তৃণমূলের নিজেদের মধ্যে গুলি চলাটা নতুন কিছু নয়। ওদের গুলি দিয়েই সব ফয়সালা হয়।” অন্যদিকে শনিবার রাতভর তল্লাশি চালিয়ে তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় আটজনকে আটক করেছে ক্যানিং থানার পুলিশ।
রবিবার দিলীপ ঘোষ বলেন, “ওখানে বিরোধী বলে কিছু আছে কি? আর তৃণমূলের নিজেদের মধ্যে গুলিগোলা চলাটা নতুন কিছু নয়। ওদের সব স্তরের নেতারাই ভাগ বাটোয়ারার ব্যাপারে, কাটমানির ব্যাপার কম বেশি হলেই গুলি দিয়ে ফয়সালা করেন। পুলিশও কিছু নয়, প্রশাসনও কিছু নয়। পার্টিরও কেউ কোনও কিছু মানে না। পশ্চিমবাংলায় এই হিংসার রাজনীতিই চলছে। অপরাধীরা তৃণমূলে ঢুকে পুরো সমাজের মধ্যে হিংসা ছড়িয়ে যাচ্ছে।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং থানার নিকারিঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার যুব তৃণমূল সভাপতি মহরম শেখ। শনিবার সন্ধ্যায় তিনি বাড়ির সামনে একটি চেয়ারে বসেছিলেন। সেখানেই গুলিবিদ্ধ হন। প্রথমে তাঁকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। গভীর রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই আটজনকে আটক করেছে ক্যানিং থানার পুলিশ। রাতভর বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে আটজনকে আটক করা হয়।
রবিবার সকাল থেকে থমথমে ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের নিকারিঘাটা। মহরম শেখের মৃত্যুর খবর আসতেই গ্রামের বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে গিয়েছে। প্রতিবেশী, আত্মীয়রা ভিড় করছেন মহরমের বাড়িতে। এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও রকম উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে কারণে এদিন সকাল থেকেই সতর্ক পুলিশ প্রশাসন। এলাকায় যাতায়াত বেড়েছে উর্দিধারীদের। চলছে টহলও।
ক্যানিং থানার নিকারিঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার যুব তৃণমূল সভাপতি মহরম শেখ শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ির সামনে একটি চেয়ারে বসেছিলেন। একটি অটো হঠাৎই তাঁর বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়। একদল দুষ্কৃতী এসে তাঁকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই অকুস্থল থেকে চম্পট দেয় তারা। গুলির শব্দে চমকে ওঠেন স্থানীয়রা। তাঁরা ছুটে এলে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করছেন তৃণমূল নেতা। তড়িঘড়ি থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশরাম দাস জানান, প্রথমে থেকেই ক্যানিংয়ের তৃণমূল নেতা মহরম শেখের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক ছিল। বুকের ডান দিকে গুলি লাগা অংশ থেকে ক্রমাগত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। কোনও ভাবেই তা বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছিল না। পাশাপাশি তিনি সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ছিলেন, যার জন্য বেশ কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি শুরু করাই যায়নি। তবে চিকিৎসকরা সব রকম ভাবে চেষ্টা করেন। তবু শেষ রক্ষা হল না।