‘ওখানে কোনও সন্ত্রাস হয়নি, এখানে তো পঞ্চায়েত ভোটেও লোক মরে’, ত্রিপুরা ভোট নিয়ে দাবি বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের।

শুক্রবার নিউটাউন ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে গিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “ত্রিপুরা নিয়ে যারা এত হাহুতাশ করছে, তারা কি ভুলে গিয়েছে পঞ্চায়েত ভোটে এখানে ডজন ডজন লোক মারা যান। ওখানে কী হয়েছে? কার মুখে একটু চোট লেগেছে, কোথায় পড়ে গিয়েছে, কী হয়েছে সেটা কেউ জানে না। এতদিন সন্ত্রাস বলে যা চালাত, কোথাও সন্ত্রাস নেই। আপনারা গিয়ে খেলা হবে বলেছেন, আপনাদের কেউ বলেছে খেলা হবে। আপনারা মাইক বাজাচ্ছেন, সেখানে কেউ মাইক বাজিয়েছে। এটাকে সন্ত্রাস বলে?”

দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, “একজনের বাড়িতে শুনেছি আক্রমণ হয়েছে। দু’জন মিলে বাড়িতে দৌড়াদৌড়ি করছে। সেই ভিডিয়োটা চলছে। সেখানে কোথায় সন্ত্রাস হয়েছে? কে কাকে সন্ত্রাস করেছে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। তারা চিৎকার করছে। তারাই ভিডিয়ো করছে। এ ভাবে একটা হাইপ তৈরির চেষ্টা হয়েছে। যেন তৃণমূলই রয়েছে, আর কোনও দল নেই। এখান থেকে তৃণমূল সন্ত্রাস বয়ে নিয়ে গিয়েছে ত্রিপুরায়।”

আগরতলা পুরনিগমের ভোট ঘিরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত ছিল ত্রিপুরা। আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ তোলেন খোদ তৃণমূল প্রার্থীই। আগরতলার ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী তপন কুমার বিশ্বাসকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। তাঁর চোখে গুরুতর আঘাত লাগে।

আগরতলার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী পদ্মা ভট্টাচার্যের ছেলে ধীমান ভট্টাচার্যকেও আক্রমণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তাঁকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করে তৃণমূল। সকালেও আগরতলার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মক পোলিং চলাকালীন দুই তৃণমূলকর্মী আক্রান্ত হন। তাদের নাম কৃষ্ণনূপুর মজুমদার ও মনোজ চক্রবর্তী। লাঠির আঘাতে তাদের মাথা ফেটে যায়।

যদিও ত্রিপুরা বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য দাবি করেন, “পরিকল্পনামাফিক এইসব করা হচ্ছে। তৃণমূলের অভিযোগের কোনও গুরুত্বই নেই। ওরা নিজেরাই সন্ত্রাস করে, তারাই আবার সন্ত্রাসের অভিযোগ আনছে। তৃণমূল কর্মীরা নিজেরাই নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোল করছে।”

কিন্তু এই ভোট চলাকালীনই সুপ্রিম কোর্ট অতিরিক্ত দুই কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর নির্দেশ দেয়। শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, “এই ধরনের পরিস্থিতিতে নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে হতে পারে, তার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে যত দ্রুত সম্ভব অতিরিক্ত দুই কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। ২৮ নভেম্বর ভোট গণনা অবধি এই বাহিনী মোতায়েন থাকবে।”

এরই মধ্যে শুক্রবার ফের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা তৃণমূলের। তাদের বক্তব্য, বৃহস্পতিবার যা হয়েছে, তা আদতে ভোটের নামে প্রহসন। তাই শীর্ষ আদালতে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানাবে তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.