রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষের মতে পশ্চিমবঙ্গে জরুরি অবস্থা চলছে৷ মানুষ নিজের স্বাধীন মতামত প্রকাশ করতে পারে না৷ পুলিশ এবং শাসকদলের নেতাদের ভয়ে-ভয়ে বাঁচতে হয়৷ আবার স্যোশাল মিডিয়ায় রাজ্য সরকার বা তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কোনও পোস্ট করলেই বাড়িতে পুলিশ চড়াও হয়৷ পশ্চিমবঙ্গের এই অবস্থা ইন্দিরা গান্ধীর সময়ে জরুরি অবস্থার সঙ্গে অনেকাংশে তুলনীয় – দাবি করেছেন দিলীপ৷ মঙ্গলবার, সংসদভবনের বাইরে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে জরুরি অবস্থার মতোই পরিস্থিতি৷
১৯৭৫ সাল ২৫ জুন দেশ ঝুড়ে জারি হয় জরুরি অবস্থা। সেই সময় দেশের রাষ্ট্রপতি ফকরুদ্দিন আলি আহমেদ৷ প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরার নির্দেশে জারি হয় জরুরি অবস্থা৷ ২৫ জুন, ১৯৭৫ থেকে ২১ মার্চ, ১৯৭৭ – এই ২১ মাস জরুরি অবস্থা স্বাধীন ভারতের একটি বিতর্কিত অধ্যায়৷ প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরার আমলের এই জরুরি অবস্থা পরবর্তীকালে অনেক বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল৷ বিজেপি জরুরি অবস্থাকে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়েছে৷ বিজেপির নেতারা বলছেন, ওই সময়ে কংগ্রেস সরকার কোনও নির্বাচন করেনি৷
বিজেপি বলছে, দেশের মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা ছিলনা৷ সংবাদ মাধ্যমেরও কন্ঠরোধ করা হয়৷ কংগ্রেস তবে আর কোন মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে৷ বিজেপি নেতারা আরও বলছেন সেই সময়ে অটল বিহারী বাজপেয়ি, লালকৃষ্ণ আডবানীর মত নেতৃত্ব গ্রেফতার হয়েছিলেন৷ সমাজবিদ নেতা শ্যামনন্দন মিশ্র, মধু ডন্ডবতেও গ্রেফতার হয়েছিলেন৷ অন্যতম প্রতিবাদের জায়গা হয়ে উঠেছিল তখনকার ব্যাঙ্গালোর৷
১৯৭৫ সালে প্রতিবাদে সেই সময় গ্রেফতার হয়েছিলেন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের নেতা প্রকাশ জাভরেকর। প্রায় ৪৫ বছর বাদে কলকাতায় সেই ঘটনার স্মৃতিচারণ করেছিলেন আজকের মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভারেকরও৷ কিছুদিন আগেই কলকাতায় এসে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, সেদিন ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থার বিরুধ্যে তিনি লড়াই করেছিলেন। জনতা সেই জরুরি অবস্থাকে ছুঁড়ে ফেলেছিল। সেই জনতা মমতাজির জরুরি অবস্থাকেও ছুঁড়ে ফেলবে।
লোকসবা নির্বাচনের পর বিজেপি অবশ্য দেখিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে জরুরি অবস্থার প্রচার বেশ কাজে লেছেছে৷ বিজেপি রাজ্যে ১৮টি আসন দখল করতে পেরেছে৷ লোকসভা নির্বাচন চলাকালীনই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের জন্য গ্রেফতার করা হয় বিজেপি-র এক কর্মীকে৷ তবে অদালতের হস্তক্ষেপে তিনি মুক্তি পান৷ এছাড়াও এই রাজ্যে সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট শেয়ারিং-এর জন্য অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছিল৷ পুরানো বেশ কিছু ঘটনাকে ইস্যু করে রাজ্য সরকারকে পালটা চাপ দিতে চাইছে বিজেপি৷