রাত পোহালেই ভোট। তার আগে শনিবার বিকেল থেকে তাদের দলের নেতাদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করার অভিযোগ তুলল বিজেপি। ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের ফলতা, বজবজ, ডায়মন্ড হারবার ছাড়াও বিষ্ণুপুর, মহেশতলা, নোডাখালি থেকে মোট ১৫ জন বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন দেবাংশু পাণ্ডা, জয়দেব দত্ত, উমেশ দাস, বিশ্বজিৎ নাটুয়া, পবিত্র মণ্ডল, অভিজিৎ সর্দার, নৃপেণ মাইতি, জিতেন্দ্র শর্মা-সহ অনেকে। গেরুয়া শিবিরের নেতাদের বক্তব্য হুগলি, পুরুলিয়া-সহ বাইরের জেলার থানা থেকে কেস দিয়ে তাঁদের গ্রেফতার করানো হয়েছে। গোটা ঘটনায় তৃনমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে বিজেপি। দলের এক নেতার কথায়, “যেখানে যেখানে ভোট হয়ে গিয়েছে, সেখানকার থানার পুলিশকে তৃণমূল ক্যাডার হিসেবে নামিয়ে দিয়েছে।”
বিজেপি, সিপিএম-সহ বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, ডায়মণ্ড হারবার লোকসভায় প্রচুর বহিরাগতকে এনে জড়ো করেছে তৃণমূল। কমিশনে অভিযোগও জানানো হয়েছে। বজবজ বিধানসভার বিড়লাপুর থেকে বুড়ুল, সমস্ত হোটেল এবং লজ, বন্ধ পড়ে থাকা নিউ সেন্ট্রাল জুট মিলের কোয়ার্টার বাইরের লোকে গিজগিজ করছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। ফলতা এবং ডায়মণ্ড হারবার বিধানসভার ছবিটাও একই রকম বলে দাবি তাদের। বিরোধীদের আরও অভিযোগ, ছদ্মবেশের কারসাজি করার জন্য হাজার হাজার বিশেষ পোশাক কিনেছে তৃণমূল।
বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন, “কমিশনকে জানানো হয়েছে সবটা। কমিশনের আধিকারিকরা বলেছেন, অবাধ ভোট করাতে সমস্ত ব্যবস্থা তাঁরা নেবেন।”
উল্টোদিকে বিরোধীদের অভিযোগ থেকেই তৃণমূলের তিন ডাকসাইটে নেতাকে নজরবন্দি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বজবজ বিধানসভায় তৃণমূলের অন্যতম ভরসা, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-ঘনিষ্ঠ নেতা সীমন্ত বৈদ্য, ফলতার জাহাঙ্গির আলি এবং ডায়মণ্ড হারবারের মেহবুব গাজিকে নজরবন্দি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
কমিশন জানিয়েছে, রবিবারের ভোটে ১০০ শতাংশ বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাড়ানো হয়েছে কুইক রেসপন্স টিমের সংখ্যাও। ন’কেন্দ্রে মোট ৪৬১টি কিউআরটি থাকবে বলে কমিশনের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। মোট ৭১০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে শেষ দফায়। স্পর্শকাতর বিধানসভাগুলিতে ফ্লাইং স্কোয়াডও রাখা হচ্ছে বলে কমিশন সূত্রে খবর।
একাধিক হাইপ্রোফাইল প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে শেষ দফায়। তার মধ্যে ডায়মন্ড হারবারের দিকে বিশেষ নজর রাজনৈতিক মহলের। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্র। তাঁর বিরুদ্ধে লড়ছেন বিজেপি-র নীলাঞ্জন রায় এবং সিপিএমের ফুয়াদ হালিম।
বিরোধীদের এই সব অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, “সিপিএম-বিজেপি জেনে গিয়েছে ডায়মণ্ড হারবারে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। তাই ভোটের আগদের দিন সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে এই সব কথা বলছে। তৃণমূলের ভোটে জিততে বহিরাগতদের প্রয়োজন হয় না।”