‘এটা পাকিস্তান নয়’, দেওবন্দকে পাল্টা হুঁশিয়ারি বিজেপি সাংসদ দেবশ্রীর

সাধ্বী প্রাচীর পর নুসরতের পাশে দাঁড়ালেন আরও এক বিজেপি নেত্রী। ফতোয়ার জবাব দিলেন বাংলার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী।

লোকসভায় সাংসদ হিসেবে শপথ নেওয়ার সময় শাখা, সিঁদুর পরেছিলেন নুসরত। এরপরই কয়েকজন মুসলিম ধর্মগুরুর ফতোয়ার মুখে পড়েন বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ। এমনকী, নিজের নামের শেষে কেন তিনি তাঁর হিন্দু স্বামীর পদবী ব্যবহার করলেন, তা নিয়েও নিশানা করা হয় নুসরতকে। এবার তারই প্রতিবাদ করলেন রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী।

এ বার রায়গঞ্জ থেকে ভোটে জিতে কেন্দ্রীয় নারী এবং শিশুকল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন দেবশ্রী। নুসরতের শপথ নিয়ে ফতোয়া জারি করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা পাকিস্তান নয়, এটা ভারতবর্ষ। এখানে ফতোয়া দিয়ে কোনও লাভ নেই।’

সাংসদ দেবশ্রী রায়গঞ্জে বলেন, ‘ধর্মাচারণ সবার সাংবিধানিক অধিকার। ওনার যা মনে হয়েছে, সেটা বলেছেন। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু যাঁরা নুসরতকে ফতোয়া দিচ্ছেন, তাঁদের বুঝতে হবে ফতোয়া বন্ধ করার সময় এসেছে। যিনি সংসদে দাঁড়িয়ে সংবিধান মেনে শপথ নিচ্ছেন, তাঁকে ফতোয়া দেওয়ার জন্য যা ব্যবস্থা নেওয়ার, উপযুক্ত জায়গা থেকে নিশ্চয়ই নেওয়া হবে।’ এর আগে একই ভাবে নুসরতের পাশে দাঁড়িয়েছেন সাধ্বী প্রজ্ঞা।

নুসরত সাংসদ হয়েই বিয়ে করতে উড়ে গিয়েছিলেন সুদূর তুরস্কে৷ শপথও নিতে পারেননি৷ গত রবিবারই বিয়ে সেরে দেশে ফেরেন নুসরত৷ স্বামি নিখিল জৈনের হাত ধরে বিমানবন্দরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবারে বেগুনি পাড় সাদা শাড়িতে লোকসভায় যান সদ্য বিবাহিতা নুসরত৷ কপালে সিঁদুর, হাতে চূড়া। পরিষ্কার বাংলায় শপথ নেন তিনি।

ইমাম মুফতি কাসাম বলেছেন, “ইসলাম কোনও অমুসলিম ছেলেদের বিয়ে করার অধিকার মুসলিম মহিলাদের দেয়নি। সেটা নুসরত করেছেন। শুধু তাই নয় বিয়ের পরে হিন্দু ধর্মের রীতি মেনে সিঁদুর-মঙ্গলসূত্র পরে ইসলামকে অসম্মান করেছেন।” একই সঙ্গে শপথ পাঠের সময়ে নুসরতের মুখে বন্দেমাতরম স্লোগান নিয়েও সরব হয়েছেন ইমাম মুফতি। তিনি বলেছেন, “ইসলাম ধর্মে বন্দেমাতরম বলা যায় না। সাংসদে শপথের সময়ে সেটাই বলেছেন নুসরত। বিষয়টি ইসলাম বিরুদ্ধে। এর বেশি আর কিছু বলব না।”

এই পরিস্থিতিতে, সাধ্বী প্রাচী বলেছেন, ‘একজন মুসলিম মহিলা যদি হিন্দু পুরুষকে বিয়ে করে টিপ, মঙ্গলসূত্র পরে তাহলে তা ইসলামে হারাম। অথচ অনেক সময় মুসলিমরাও হিন্দু মেয়েদের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে। তখন যদি সেই হিন্দু মেয়েদের জোর করে বোরখা পরানো হয়, তাহলে তা হারাম নয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.