এসএসসির গ্রুপ-ডি নিয়োগ নিয়ে ফের আদালতে মামলা দায়ের হল। আবারও সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করল স্কুল সার্ভিস কমিশন।
কমিশনের বক্তব্য, তাদের কোনও কথা বলতেই দেওয়া হয়নি। তার আগেই এসএসসিকে ৫৪২ জনের বেতন বন্ধের পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে কমিশন জানায়, ‘আমরা এ ব্যাপারে হলফনামা দিতে চাইলেও তাতে অনুমতি দেয়নি সিঙ্গল বেঞ্চ।’ ডিভিশন বেঞ্চ মামলা গ্রহণ করে সোমবার মূল মামলার সঙ্গে শুনানির আশ্বাস দিয়েছে।
একই সঙ্গে আগে যে ২৫ জনের বেতন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেক্ষেত্রেও মামলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ২৫ জনের মধ্যে থেকেই তিনজন এই মামলা করেন। তাঁদের অভিযোগ, বক্তব্য না শুনেই বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিন প্রার্থীর আর্জিতে ছাড় ডিভিশন বেঞ্চের।
প্রথমে ভুয়ো নিয়োগের কারণে ২৫ জনের বেতন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার আরও ৫৪২ জনের বেতন বন্ধের কথা বলে কলকাতা হাইকোর্ট। এই সমস্ত নিয়োগও ভুয়ো বলেই অভিযোগ উঠেছে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এদিন নির্দেশ দেন, ভুয়ো নিয়োগের নথি খতিয়ে দেখে বেতন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিক এসএসসি।
এদিন ৫৪২ জনের নিয়োগে অনিয়ম সংক্রান্ত নথি তুলে দেওয়া হয় কমিশনের হাতে। এই সমস্ত নথি খুটিয়ে দেখে অর্থাৎ যথাযথ স্ক্রুটিনির পরই কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। ২০১৯-এর ৪ মে’র পর নিয়োগ সুপারিশ হয়ে থাকলে এবং তার ভিত্তিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নিয়োগ করে থাকলে তবেই বেতন বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তদন্তে যদি ভুয়ো নিয়োগের সপক্ষে প্রমাণ মেলে তবেই সংশ্লিষ্ট ডিআইদের বেতন বন্ধ করতে নির্দেশ দেবে এসএসসি।
এদিন কমিশন ডিভিশন বেঞ্চে নতুন করে আবেদন জানায়, যখন এই নির্দেশ দেওয়া হচ্ছিল, কমিশনের কী বক্তব্য সেটা শুনতে চাওয়া হয়নি। এমনকী কমিশন হলফনামা দিতে চেয়েছিল তাও নেওয়া হয়নি। সোমবার মূল মামলার সঙ্গেই এই মামলার শুনানি হবে।
২০১৬ সালে রাজ্যে গ্রুপ ডি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। সেই মতো ১৩ হাজার নিয়োগ হয়। ২০১৯ সালের মে মাসে সেই গ্রুপ ডি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়। তারপরেও একাধিক নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ২৫ জনের নিয়োগের সুপারিশের কথা জানা গিয়েছে। সেই তথ্য হাইকোর্টের হাতে আসে। কী ভাবে মেয়াদ উত্তীর্ণ নিয়োগ তালিকা থেকে নিয়োগ তারই কৈফিয়ত চায় হাইকোর্ট।
মামলায় সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। বুধবার সেই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। তিন সপ্তাহের জন্য সিবিআই অনুসন্ধানে স্থগিতাদেশ দেয় আদালত।