কারণ হতে পারে কার্যত লকডাউন। হতে পারে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া। কিন্তু গত চারদিনে পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক সংক্রমণের হার কমের দিকেই। কিন্তু আবার ওই চারদিনেই রাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। দৈনিক সংক্রমণও কমেনি। সেই সংখ্যা ২০ হাজারের নীচে আছে ঠিকই। কিন্তু তা আবার ১৯ হাজারের নীচেও নামেনি।
ওয়াকিবহালরা বলছেন, রাজ্য সরকার ৩০ মে পর্যন্ত কার্যত লকডাউন ঘোষণা করায় দৈনিক সংক্রমণের হার গত কয়েকদিনে কমেছে। আরও একটি ব্যাখ্যা রয়েছে। তা হল দৈনিক করোনা পরীক্ষার সংখ্যাও আগের চেয়ে বেড়েছে। দৈনিক সংক্রমণ কমার এই হার যদি আগামী কয়েকদিনেও অব্যাহত থাকে, তা হলে এই কার্যত লকডাউন আরও বাড়িয়ে দিতে পারেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। কারণ, দিল্লি এবং মহারাষ্ট্রে লকডাউন ফলদায়ী হয়েছে। সেখানে দৈনিক সংক্রমণের হার আগের চেয়ে তো কমেইছে। বস্তুত, এখন মুম্বই এবং দিল্লির দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা এখন মিলিত ভাবে কলকাতার চেয়েও কম। শুক্রবার দিল্লি এবং মুম্বইয়ে সংক্রমণের হার ছিল যথাক্রমে ৩,০০৯ এবং ১,৪১৫। সেখানে শুধু কলকাতায় সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ৩,৫৬০ জন!
তথ্য-পরিসংখ্যান বলছে, গত ১৮ মে থেকে ২১ মে অর্থাৎ শুক্রবার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক সংক্রমণের হার ক্রমশ কমেছে। ১৮ তারিখ যা ছিল ২৮.০ শতাংশ, তা কমে ২১ তারিখে হয়েছে ২৪.৫৯ শতাংশ। অর্থাৎ, ওই হার কমেছে প্রায় ৪ শতাংশ। ওই হার মাঝখানের দু’দিনেও কমেছে। তবে এরই পাশাপাশি রাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। ১৮ তারিখে রাজ্যে মারা গিয়েছিলেন ১৪৫ জন। তার পরদিন মারা যান ১৫৭ জন। ২০ তারিখে মৃত্যু হয়েছিল ১৬২ জনের। ২১ তারিখে মৃত্যু হয়েছে ১৫৯ জনের। তবে এরই পাশাপাশি আবার দেখা যাচ্ছে, কলকাতায় মৃতের সংখ্যা সামান্য কমেছে। ১৮ তারিখে কলকাতায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন ৩৮ জন। ২১ তারিখে ৩৩ জন। মাঝখানের দু’দিনে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৩১ এবং ৩৬ জন। অর্থাৎ, কলকাতায় মৃতের সংখ্যা ৩০ থেকে ৪০-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। মৃতের সংখ্যা যেমন ৪০ ছাড়ায়নি, তেমনই ৩০-এর নীচেও নামেনি।
গত চারদিনে পশ্চিমবঙ্গে সংক্রমিতের সংখ্যা ১৯ হাজারের উপরেই থেকেছে। ১৮ মে ওই সংখ্যা ছিল ১৯,৪২৮। আর ২১ মে ওই সংখ্যা ছিল ১৯,৮৪৭। মাঝখানের দু’দিনে ওই সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১৯,০০৬ এবং ১৯,০৯১। অর্থাৎ, না বাড়লেও রাজ্যে সংক্রমণের সংখ্যা সে ভাবে কমছে না। সেই বিষয়েই উদ্বিগ্ন আধিকারিকরা। তাঁদের একাংশ বলছে, সেই কারণেই ৩০ মে-র পরেও কার্যত লকডাউন জারি করতে হলে তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তবে পাশাপাশিই নজরে রাখা হচ্ছে করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গ ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে আসছে কি না।