করোনার(corona) জেরে টানা লকডাউনের (lockdown)সিদ্ধান্ত প্রাণ বাঁচিয়েছে ৬৩০ জনের। সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে এই লকডাউন দেশের পাঁচটি শহরের দূষণমাত্রা অনেক কমিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দিল্লি ও মুম্বই। আর বায়ু দূষণ কমে যাওয়ার ফলে অকালে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচেছে কমপক্ষে ৬৩০ জনের প্রাণ। বলছে সমীক্ষা।
ব্রিটেনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা বাতাসে ক্ষতিকারক উপাদানের পরিমাণ পরিমাপ করেছেন। তাঁরা বলছেন বাতাসে ক্ষতিকারক পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম ২.৫ থাকে, যা আসে মূলত গাড়ির ধোঁয়া, কারখানার থেকে নির্গত বর্জের ধোঁয়া থেকে। এছাড়াও অন্যান্য উৎসও আছে।
দেশের মূলত পাঁচটি শহরের বাতাসে এর পরিমাণ বেশি। এর মধ্যে রয়েছে দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, চেন্নাই ও হায়দরাবাদ। তবে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে পিএম ২.৫ গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বাধিক কম। বিজ্ঞানীরা ২৫শে মার্চ থেকে ১১ মে পর্যন্ত সময়ের হিসেব দিয়েছেন।
বিজ্ঞানীদের মতে মুম্বইতে ১০ শতাংশ, দিল্লিতে ৫৪ শতাংশ পর্যন্ত বায়ুদূষণ কমেছে। অন্যান্য তিনটি শহরে বায়ুদূষণ কমেছে ২৪ থেকে ৩২ শতাংশ। তাঁরা বলছে বাতাসে পিএম ২.৫য়ের কমাটা বড় ব্যাপার নয়। বড় ব্যাপার হল পৃথিবীতে এর প্রভাব পড়া, যা বেশ লক্ষণীয়।
বিশ্বের অন্য প্রান্তেও এই পিএম ২.৫ কমেছে। অস্ট্রিয়ার ভিয়েনাতে ৬০ শতাংশ ও চিনের সাংহাইতে ৪২ শতাংশ ক্ষতিকারক উপাদানের পরিমাণ কমেছে বাতাস থেকে। এর জেরেই বিজ্ঞানীরা বলছেন বায়ুদূষণ কমার ফলে অন্তত ৬৩০ জন মানুষের প্রাণ বেঁচেছে ভারতে, যা অকালে চলে যেতে পারত। সেই সংখ্যার নিরিখেই বেঁচেছে ৬৯০ মিলিয়ন অর্থ, যা এই ৬৩০ জনের চিকিৎসা খাতে ব্যয় হত।
এদিকে, দেশের প্রকৃত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রকাশ করল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে প্রকৃত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩.৪২ লক্ষ। অর্থাৎ দেশে এখন ৩,৪২, ৭৫৬ জন করোনা আক্রান্ত রয়েছেন বলে দাবি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের। হিসেব বলছে ৬.৩৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ করোনা থেকে সেরে উঠেছেন। শতাংশের হিসেবে যা ৬৩.৩৩ শতাংশ। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে যা খুবই কম বলে জানাচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
প্রতি দশ লক্ষে ভারতে আক্রান্তের গড় ৭২৭.৪ জন বলে দাবি মন্ত্রকের। বিশ্বের আক্রান্তের নিরিখে ভারতের আক্রান্তের হার ৪ থেকে ৮ গুণ কম বলেও জানা গিয়েছে। কিছু ইউরোপীয় দেশের তুলনায় ভারতে মৃত্যুর হার প্রতি দশ লক্ষে ১৮.৬ জন। যা বিশ্বের কম মৃত্যুর হার সূচক দেশগুলির মধ্যে অন্যতম।
স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানাচ্ছে কনটেনমেন্ট জোনের সংখ্যা বৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান ও সটিক সময়ে করোনা পরীক্ষা ও কড়া প্রশাসনিক পদক্ষেপের জন্য ভারত এই অবস্থানে রয়েছে। মৃদু ও অ্যাসিম্পোট্যোমেটিকদের জন্য হোম আইসোলেশনের ব্যবস্থা করাও সঠিক পদক্ষেপ বলে মনে করছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। শুক্রবার জানানো হয়েছে দেশে ১.৯৪ শতাংশেরও কম করোনা রোগি আইসিইউতে রয়েছে।