মালদার চাঁচলে একশো দিনের কাজে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে, হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত শুরু করলেন বিডিও।

একশ দিনের কাজে তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, উপ-প্রধান ও কর্মীর বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল। যার জেরে হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত শুরু করলেন বিডিও।

ঘটনাস্থান মালদার চাঁচল ১ নম্বর ব্লকের খরবা গ্রাম। সেখানকার পঞ্চায়েতের প্রধান,উপ-প্রধান, নির্মাণ সহায়ক সহ পঞ্চায়েতে কর্মীদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠল। এদিকে ঘটনার পর গা ঢাকা দিয়েছেন প্রধান।অন্যদিকে, দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী।

অভিযোগ, একশো দিনের প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। কলা গাছ, আম গাছ লাগানোর নামে টাকা লুটপাট করেছে পঞ্চায়েত প্রধান, উপ-প্রধান পঞ্চায়েতের কর্মীরা। পাশাপাশি মৃতদের নামেও জব কার্ড করে টাকা তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ। জাল বিল করে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এই সকল অভিযোগের জেরে একাধিকবার ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের দ্বারস্থ হয়েছেন খরবা গ্রাম পঞ্চায়েতে বিরোধী দলনেতা কংগ্রেস সদস্য মুরতুজ আলম।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দুর্নীতির তদন্তের জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। চলতি বছরের নভেম্বর মাসের ২৯ তারিখ সেই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। নির্দেশের পর তদন্ত শুরু করেছেন চাঁচল ১ নম্বর ব্লকের বিডিও সমিরণ ভট্টাচার্য।

খরবা গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা মুরতুজ আলমের অভিযোগ, “মৃত ব্যক্তির নামে একশো দিনের প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন পঞ্চায়েতের প্রধানসহ অন্যান্যরা। এমনকি তার সিগনেচার পর্যন্ত জাল করা হয়েছে। সঠিক তদন্ত হলে মানুষ বিচার পাবেন।”

যদিও খরবা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান পারবিনা খাতুনের স্বামী মংলু শেখ। তিনি বলেন বিরোধী দলনেতা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। বিডিও তদন্ত করলে আসল সত্য বেরিয়ে আসবে।

যদিও, বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন তাই এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি চাঁচল ১ নম্বর ব্লকের বিডিও সমিরণ ভট্টাচার্য। এই বিষয়ে শাসক দলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। জেলা বিজেপি সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, “পশ্চিমবাংলার পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে হাইকোর্ট না বললে কোন কিছুই হয় না। এটা তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে লজ্জার। জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র শুভময় বসু বলেন, কেউ দুর্নীতি করলে দল পাশে থাকবে না। প্রশাসন তদন্ত করছে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে। এই সরকার দোষীদের রেয়াত করে না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.