মমতার সঙ্গে সংঘাত, মোদীর প্রকল্পের টাকা পাবেন না বাংলার কৃষকরা

আয়ুষ্মান ভারতের পর এ বার কৃষি সম্মান নিধি যোজনা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সংঘাত বাধল৷ এই জনকল্যাণমূলক প্রকল্প থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরে আসায় ইতিমধ্যেই উষ্মা প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। রাজ্যের দাবি, কৃষকদের জন্য পশ্চিমবঙ্গের নিজস্ব প্রকল্প রয়েছে যা কেন্দ্রের থেকে অনেক ভাল৷

প্রধানমন্ত্রী কৃষি সম্মান নিধি যোজনায় তিনটি কিস্তিতে বছরে ৬ হাজার টাকা করে পান কৃষকরা। ইতিমধ্যেই ৬ হাজার কৃষক উপকৃত হয়েছেন দাবি করেছেন প্রকাশ জাভড়েকরের।

পশ্চিমবঙ্গ এই প্রকল্পে সামিল না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন জাভড়েকর। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের সিদ্ধান্তের জেরে বঞ্চিত হবেন রাজ্যের কৃষকরা। প্রধানমন্ত্রী কৃষি সম্মান নিধি যোজনায় আধার কার্ড সংযুক্তিকরণের সময়সীমা বাড়ানোর কথাও ঘোষণা করেছেন প্রকাশ জাভড়েকর।

যদিও রাজ্যের পালটা দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষণার অনেক আগে থেকেই রাজ্যে এমন প্রকল্প চালু রয়েছে। কৃষি অধিকর্তা প্রদীপ মজুমদার বলেন, আমরা কৃষকবন্ধু প্রকল্পে বছরে পাঁচ হাজার টাকা করে কৃষক ও বর্গাদারদের দিই। তাঁর দাবি, গোটা দেশে ৫ শতাংশ কৃষককেও এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়নি। অনেক রাজ্যই তাই প্রকল্পে সামিল হচ্ছে না। আমরা নিজেরাই প্রকল্প চালাব।

চাষের কাজে সাহায্যের জন্য কৃষকদের বছরে দুবার আর্থিক সাহায্য দেওয়ার জন্য সম্প্রতি ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কৃষি দফতর সূত্রের খবর, চাষের কাজে আর্থিক সাহায্য দিতে কৃষকদের বছরে রবি ও খারিফ মরসুম মিলিয়ে দু’দফায় সর্বাধিক ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত সাহায্য দেওয়া হবে। এক ডেসিমেল থেকে ৪০ ডেসিমেল পর্যন্ত জমির জন্য কৃষককে বছরে মোট ২ হাজার টাকা দেওয়া করে হবে। এর মধ্যে রবি মরসুমে ১ হাজার টাকা ও খারিফ মরসুমে ১ হাজার টাকা দেওয়া হবে। একইভাবে ৪০ ডেসিমেল থেকে ৯৯ ডেসিমেল জমির জন্য ডেসিমেল পিছু ৫০ টাকা করে দেওয়া হবে বছরে। রবি ও খারিফ মরসুমে ওই টাকা ভাগ করে দেওয়া হবে। আর ১ একর বা তাঁর বেশি জমির মালিককে রবি ও খারিফ মরসুমে আড়াই হাজার টাকা করে বছরে মোট ৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে।

আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প নিয়েও সংঘাত হয়েছিল কেন্দ্র ও রাজ্যের। ভোটের প্রচারে নরেন্দ্র মোদী নিয়ম করে বলে গিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার গরিবদের স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করছে। যদিও তৃণমূলের পালটা দাবি ছিল, আয়ুষ্মান ভারতের অনেক আগে থেকেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু রয়েছে রাজ্যের। ফলে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে শামিল হওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়, ”এটাই প্রথম নয়। এর আগেও কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে মানুষকে বঞ্চিত করেছে রাজ্য সরকার। গরিব কৃষকদের নিয়ে ভাবিত নন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.