বাজেট অধিবেশনে কেন্দ্রের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ যোজনা’য় দেশের প্রতিটি প্রান্তিক ও ছোট চাষিদের অ্যাকাউন্টে তিন দফায় বছরে ৬ হাজার টাকা পৌঁছে দেবে সরকার। মাস খানেক পরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি নিজের টুইটারে জানালেন, পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের পাঁচটি রাজ্য এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে অস্বীকার করেছে। অন্যদিকে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রের তরফে কোনও চিঠিই এসে পৌঁছয়নি রাজ্যে।
বাজেট অধিবেশনের বক্তৃতায় পীযূষ গোয়েল ঘোষণা করেন, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ যোজনা নামে নতুন প্রকল্প শুরু করতে চলেছে সরকার। এর আওতায় যে সব কৃষকের ২ হেক্টর বা তার কম জমি রয়েছে, তাদের বছরে ৬ হাজার টাকা করে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। ২ হেক্টর মানে ৪.৯৪ একর জমি। দেশের মোট ১২ কোটি কৃষক পরিবারকে এই অনুদান কেন্দ্র নিজেই দেবে। বছরে তিন দফায় এই টাকা পৌঁছে যাবে সরাসরি।
মোদী সরকারের এই ঘোষণার ঠিক এক মাস আগে নবান্নের অলিন্দে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন। এই প্রকল্পের আওতায় বলা হয়, যে সব কৃষকের এক একর জমি রয়েছে তাঁদের বছরে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এবং তা সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে। এ জন্য সরকারের খরচ হবে বছরে ৭ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়াও ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সের মধ্যে কোনও কৃষক বা কৃষি শ্রমিকের মৃত্যু হলে তাঁর পরিবারকে এককালীন ২ লক্ষ টাকা দেবে রাজ্য সরকার।
বাজেট ঘোষণার পর কেন্দ্রকে কটাক্ষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা তো আগেই ঘোষণা করে দিয়েছি। ওরা তো আমাদের টুকলি করেছে। আমরা এক একরে ৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলছি। ওরা চিটিং করছে। ২ হেক্টরে ৬ হাজার টাকা দেবে বলছে। কিন্তু আগে তো সরকারে আসুক!” পরবর্তীকালে একাধিক সভায় দাঁড়িয়ে এই কিষাণ যোজনা নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি লেখেন, “রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, দিল্লি, কর্ণাটক ও পশ্চিমবঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ যোজনার সুবিধা নিতে চাইছে না। এর ফলে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা নিজেদের পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।” উল্লেখযোগ্য ভাবে যে পাঁচটি রাজ্যের কথা নিজের টুইটে বলেছেন জেটলি, সেই পাঁচ রাজ্যেই বিরোধীদের সরকার রয়েছে। অর্থাৎ, কেন্দ্রের প্রকল্পের লাভ রাজ্যের মানুষকে দিতে চাইছে না বিরোধী দলগুলি, এমনটাই অভিযোগ জেটলির।