কয়লাকাণ্ডে ফের আইপিএস জ্ঞানবন্ত সিংকে তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। আগামী ১১ অক্টোবর ইডির দিল্লি অফিসে তলব করা হয়েছে জ্ঞানবন্তকে। এই নিয়ে তৃতীয়বার তলব করা হল জ্ঞানবন্ত সিংকে।
প্রথমবার তলবের পর তিনি হাজিরা দেননি। এরপরই দ্বিতীয় বার ফের ডেকে পাঠায় ইডি। প্রায় পাঁচ ঘন্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে। তার পরও বেশ কিছু তথ্য কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার জানার রয়েছে। ইডির তরফে দাবি করা হচ্ছে, সেই বিষয়গুলো নিয়ে জ্ঞানবন্ত সিংকে জিজ্ঞাসা করা প্রয়োজন। সে কারণেই ফের ১১ অক্টোবর দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে তাঁকে। সেখানকার তদন্তকারী অফিসারের মুখোমুখি হয়ে তাঁকে তদন্তে সহযোগিতা করার কথা বলা হয়েছে।
মোট সাত আইপিএস কর্তার নাম রয়েছে ইডির জিজ্ঞাসাবাদের তালিকায়। আইপিএস কোটেশ্বর রাও, সিলভা মুরুগান, শ্যাম সিং, রাজীব মিশ্র, সুকেশ জৈন ও জ্ঞানবন্ত সিং। তদন্তের অগ্রগতির জন্যই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে ইডি। আগেই সিবিআই স্ক্যানারে এসেছিলেন তাঁরা। অনেককে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে সিবিআই। সাম্প্রতিক অতীতে এরা বর্ধমান, পুরুলিয়া, বীরভূম এবং বর্ধমানের মতো জেলায় কর্মরত ছিলেন। কয়েকজন ছিলেন মুর্শিদাবাদ নদিয়ার মতো জেলাতেও।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর কয়লাকাণ্ডে টানা পাঁচ ঘণ্টা জ্ঞানবন্ত সিংকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা। তাঁর বয়ানও রেকর্ড করা হয়। কিছুদিন আগেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই একই ইস্যুতে টানা ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তলব করা হয়েছে দিল্লিতে ইডির দফতরে।
বিধানসভা ভোটের সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন জ্ঞানবন্ত সিং। তাঁকে আগেই জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। মে মাসে নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেন জ্ঞানবন্ত। সূত্রের খবর, যে সময় এ রাজ্যে কয়লা পাচার ফুলে ফেঁপে ওঠে, সে সময় রাজ্যের এডিজি আইনশৃঙ্খলা ছিলেন জ্ঞানবন্ত। এর আগে পশ্চিমাঞ্চলের আইজিও ছিলেন তিনি। যে পশ্চিমাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এই কয়লার চোরা কারবার চলেছে। কয়লাকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই জ্ঞানবন্ত সিংয়ের নাম উঠে আসে বলে খবর।
অন্যদিকে গত ২৭ সেপ্টেম্বর কয়লাকাণ্ডে প্রথম গ্রেফতার করে সিবিআই। একই সঙ্গে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের নাম জয়দেব মণ্ডল, নারায়ণ নন্দ, নীরদ মণ্ডল ও গুরুপদ মাজি। অভিযোগ, এই চারজন অনুপ মাজি ওরফে লালার কয়লা ব্যবসার সিন্ডিকেটের দেখাশোনা করতেন। এঁদের হাত ঘুরেই একাধিক প্রভাবশালীর কাছে পৌঁছত ‘কালো’ টাকা।
অভিযোগ, শুধু সিন্ডিকেটই নয়, লালার আরও একাধিক বেআইনি ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন এই চারজন। মূলত, এই ব্যবসায় কয়লা পাচারের টাকা খাটানো হতো বলে অভিযোগ। সেই ব্যবসায় ডিরেক্টর পদে নাম রয়েছে চারজনের। সিবিআই এর আগেও বহুবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তাঁদের। কোনও বারই সন্তোষজনক জবাব পায়নি। অবশেষে গত মাসের শেষে গ্রেফতার করে।