আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতর নবান্নে ডেকে পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা নিয়ে শুক্রবার রাতের দিকে এনআরএস হাসপাতালে যান স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র।
প্রায় পাঁচ দিন ধরে চলছে এনআরএস হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন। যার হেরে সৃষ্টি হয়েছে প্রবল প্রতিকূল পরিস্থিতি। আন্দোলনের রেশ ছড়িয়ে পরেছে শহর কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
এই জটিলতা দূর করতেই এবার বিশেষ উদ্যোগি হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। আন্দোলনকারীদের মধ্যে থেকে তিন থেকে চার জনের একটি প্রতিনিধি দলকে নবান্নে ডেকে পাঠিয়েছেন মমতা। সেখানেই সমস্যার সমাধানের জন্য আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী।
যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই উদ্যোগ কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ, এদিন স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা নিয়ে এনআরএস হাসপাতালে গেলে শুরু হয় বিক্ষোভ। অধিকর্তা প্রদীপ মিত্রের গাড়ি ঘিরে বিক্ষভ দেখাতে থাকেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা। মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেওয়া হয়।
মধ্য কলকাতার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারদের উপরে চড়াও হয় একদল দুষ্কৃতী। রোগী মৃত্যু ঘিরেই ওই জটিলতা তৈরি হয়। এক চিকিৎসককে গুরুতর জখম হতে হয়। একই সঙ্গে আরও কয়েকজন চিকিৎসক জখম হয়েছিলেন।
সেই ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করে ওই হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকেরা। সেই রেশ ক্রমেই ছড়িয়ে পরে অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল গুলিতে। রাজধানী শহর কলকাতা ছাড়িয়ে সেই আন্দোলনের রেশ ছড়িয়ে পরে রাজ্যের অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজ গুলিতেও। জেলার হাসপাতাল গুলিতেও কর্মবিরতি শুরু করে দেন চিকিৎসকেরা।
এই ঘটনার ফলে প্রবল প্রতিকূলতা তৈরি হয় রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থায়। অনেক রোগীর মৃত্যুও হয়। কিন্তু নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকেন চিকিৎসকেরা। কর্মস্থলে নিরাপত্তার দাবি নিয়েই চলতে থাকে চিকিৎসকদের আন্দোলন। মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করলেও বরফ গলেনি। হাসপাতালের জরুরী বিভাগ চালু হলেও জটিলতা বহাল থাকে।
এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাজ্যের প্রধান চার রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। যদিও সেই বৈঠকে বিরোধী সকল রাজনৈতিক দল এই জটিলতার জন্য রাজ্যের শাসকদলকেই কাঠগড়ায় তোলেন। শাসকদলের প্রতিনিধি এই বিষয়ে মজবুত বক্তব্য পেশ করতে পারেননি রাজ্যপালের কাছে।
এই অবস্থায় শুক্রবার বিকেলের দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। সূত্রের খবর, এনআরএস হাসপাতালে জখম হওয়া জুনিয়র চিকিৎসক পরিবহ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি। এরপরেই জানা যায় যে মুখ্যমন্ত্রীকে তলব করেছেন রাজ্যপাল।