সেই কোন সকালে ঠোঁট ফেটেছে। তবু তাঁর বিরাম নেই। হালিশহর থেকে ব্যারাকপুর, নৈহাটি থেকে আমডাঙা—সারাদিন চষে বেড়ালেন ‘ব্যারাকপুরের’ বাহুবলী নেতা অর্জুন সিং। বিকেলে আমডাঙার তেঁতুলিয়ায় বিজেপি এজেন্টকে মেরে বার করে দেওয়া হয়েছে শুনে টিম নিয়ে স্পটে পৌঁছে যান ব্যারাকপুরের বিজেপি প্রার্থী। আর অর্জুন যেতেই তৃণমূল-বিজেপি চরম সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় তেঁতুলিয়া।
আমডাঙার তেঁতুলিয়া এফ পি স্কুলের সামনে অর্জুন যান বিকেল তিনটে নাগাদ। তিনি গাড়ি থেকে নামলেই তৃণমূলের দলীয় কর্মীরা ‘অর্জুন সিং বিহার যাও’ বলে স্লোগান দিতে থাকে। পাল্টা বিজেপি কর্মী সমর্থকরা শুরু করে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান। আর তখনই দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয়ে যায় হাতাহাতি। এর পর শুরু হয় তুমুল ইটবৃষ্টি। বিজেপির একাধিক কর্মী ইটের আঘাতে আহত হন বলে অভিযোগ। অর্জুন সিং অনেকটা এগিয়ে গেলে তৃণমূলের রোষ আছড়ে পড়ে সংবাদ মাধ্যমের উপরে। একাধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। মারধর করা হয় সাংবাদিক ও চিত্র সাংবাদিকদেরও।
বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশে অর্জুনকে বলতে শোনা যায়, “বড় বড় বাঁশ নিয়ে আয়।” ফোন নিয়ে কথা বলতে থাকেন অর্জুন। ও দিকে তখন তৃণমূলের প্রবল চিৎকার। কিন্তু অর্জুনও নাছোড়। হাতের ইশারা করে বলতে থাকেন। “আয় আয়। মায়ের দুধ খেয়েছিস তো আয় না……!” কোনও রকমে অর্জুনকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় কেন্দ্রীয়বাহিনী।
যেমনটা আন্দাজ করা হয়েছিল, তেমনটাই হয়েছে। পঞ্চম দফার সকাল থেকে শিরোনামে ব্যারাকপুর। বলা ভাল শিরোনামে অর্জুন। ভোটের শেষ লগ্নেও তার অন্যথা হল না। দিনভর ছুটে বেড়ালেন শিল্পাঞ্চলের ‘স্ট্রংম্যান।’ উল্টোদিকে প্রায় দেখাই গেল না তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীকে।
এ নিয়ে অবশ্য শাসক দলের নেতারা বলছেন, “পরিস্থিতি বেগতিক বুঝেই দৌড়তে হয়েছে অর্জুনকে। নিজের বাহিনী নিয়ে মস্তানি দেখাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু উনি বুঝে গিয়েছেন তৃণমূলের সংগঠনের কাছে ‘টিম অর্জুন’ শিশু।”