পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য বিজেপি সাংসদকে তলব করল সিআইডি। অভিযোগ, তিনি নবদ্বীপের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পরিযায়ী শ্রমিকদের সাথে কথা বলেছিলেন। এইজন্য তাকে ভবানী ভবন থেকে ডেকে পাঠিয়েছে সিআইডি।
জানা যায়, কয়েকদিন আগে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরিযায়ী শ্রমিকদের অভাব অভিযোগ নিয়ে তাদের সাথে নবদ্বীপে কথা বলতে গিয়েছিলেন রানাঘাটের সাংসদ (Ranaghat MP) জগন্নাথ সরকার (Jagannath Sarkar)। তার পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার ভোর তিনটের সময় তাকে ঘুম থেকে তুলে নদিয়া জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর হোম কোয়ারেন্টাইন থাকার বিষয়ে একটা চিঠি ধরাতে আসে। যদিও জগন্নাথ সরকার জানান সেই চিঠি তিনি রিসিভ করেননি। সাংসদের অভিযোগ, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমাকে এই চিঠি ধরানো হয়েছে”। তিনি বলেন, যদি আমার ঘরে থাকতে হয় বা কোয়ারেন্টাইনে যেতেই হয় তাহলে নবদ্বীপের পৌরসভার চেয়ারম্যান বিনয়কৃষ্ণ বাবু সেখানে গিয়েছিলেন। আমার সঙ্গে তাহলে নবদ্বীপ পুরসভার চেয়ারম্যানকেও কোয়ারান্টাইনের চিঠি ধরাতে হবে।
এরপর গত বৃহস্পতিবার শান্তিপুরে কর্মীর বাড়িতে একটি সংবাদমাধ্যমের লাইভ সম্প্রচার এবং কালবৈশাখীর ঝরে ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজখবর নিতে রওনা হয়েছিলেন বিজেপির এই বিতর্কিত সাংসদ। কিন্তু শান্তিপুর থানার সামনে আসতেই থানার ওসি সুমন দাস তার গাড়ি থামিয়ে তাকে হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলবার কথা জানান এবং তাকে বাড়িতে যেতে বাধ্য করেন। তার ঠিক পরের দিন শুক্রবার নদিয়ার চাকদহে বিজেপি সাংসদের উপস্থিতিতে করোনা আতঙ্কিত কর্মহীন মানুষদের নিয়ে এক ত্রাণ বন্টনের পরামর্শ বৈঠক সবে শুরু হয়েছিল। সেই সময় চাকদহ থানার আইসি বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। উপস্থিত সমস্ত বিজেপি কর্মীদের সামনে সাংসদ জগন্নাথ সরকারকে প্রশাসনিকভাবে হেনস্থা করেন চাকদহ আইসি। এরপর রানাঘাট পুলিশ সুপারের সঙ্গে তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়েন সাংসদ। আর এরপরই ভবনীভবন থেকে সিআইডি তলব করেন রানাঘাট দক্ষিণের এই বিতর্কিত সাংসদকে।
সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, মানুষের কাছে যাবার ক্ষেত্রে অকারণে পুলিশ প্রশাসন আমাকে বাধার সৃষ্টি করছে। সমস্ত জায়গায় গিয়ে আমি তৃণমূলের অপকর্ম তুলে ধরছি। সেই বিষয়গুলো তুলে ধরাতে তাদের গাত্রদাহ হচ্ছে। গতকাল বিকেলে ভবানী ভবন থেকে চিঠি ইস্যু হয়েছে। সন্ধ্যে আটটার সময় আমার কাছে ভবানীভবনের নির্দেশ নামা এসে পৌঁছেছে। যাতে বলা হয়েছে আমি যেন ১০জুন বেলা ১১ টার সময় ভবানী ভবনে দেখা করি। অর্থাৎ প্রতিহিংসাপরায়ণ মুখ্যমন্ত্রী একটা গদিতে বসেছেন, তিনি প্রতিহিংসাপরায়ণের শাস্তি নিয়ে প্রতিহিংসা মাফিক সমস্ত কাল কাজকর্ম করছেন। সমস্ত এমপিকে তিনি ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। আমার সঙ্গে লড়াই হচ্ছে, আমি পরিষ্কার বলছি এই সরকারের আইন আমি মানবো না, নিয়ম আমি ভাঙবোই। তাতে আইনানুগ ব্যবস্থা যা আছে আমার বিরুদ্ধে নিতে পারে। হুমকি দিয়ে, পুলিশের ভয় দেখিয়ে, সিআইডি দেখিয়ে জগন্নাথ সরকারকে দমানো যাবে না।
শান্তিপুরের তৃণমূলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অজয় দে’র কাছে এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাংসদ আইনসভার লোক। আইনসভার লোক হয়ে তিনিই আইন ভেঙেছেন। তাই প্রশাসন স্বাভাবিকভাবেই ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হয়েছেন।