সুপ্রিম কোর্টের রায়ে নতুন সংসদ ভবন নির্মাণ নিয়ে জট কাটল। দিল্লির ইন্ডিয়া গেটের কাছে ওই সংসদ ভবন তৈরি হবে। পরিবেশবাদীরা ওই প্রকল্পে আপত্তি করেছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্প কার্যকরী হলে পরিবেশের ক্ষতি হবে। তাছাড়া তাঁরা অভিযোগ তুলেছিলেন, তাড়াহুড়ো করে ওই প্রকল্পকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে সরকারের বক্তব্য ছিল, নতুন ভবনটি জীর্ণ হয়ে পড়েছে। সেখানে যথাযথ অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই। ভূকম্প হলে ওই ভবনের বড় ক্ষতি হতে পারে।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ রায় দেয়, নতুন সংসদ ভবনের ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও অনিয়ম হয়নি। সুতরাং ওই প্রকল্পের কাজ শুরু হতে পারে।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে দিল্লিতে সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হয়। তাতে বলা হয়েছিল, নতুন ত্রিকোণাকৃতি সংসদ ভবন বানানো হবে। সেখানে স্থান হবে ৯০০ থেকে ১২০০ সাংসদের। ২০২২ সালের অগাস্টে দেশ যখন স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উদযাপন করবে তখনই সম্পূর্ণ হবে নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের কাজ।
সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পে নতুন সচিবালয় নির্মাণের কাজ শেষ হবে ২০২৪ সালে। ওই প্রকল্পের বিরুদ্ধে আবেদন জমা পড়েছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এ এম খানউইলকর, বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী ও বিচারপতি সঞ্জীব খান্নাকে নিয়ে গঠিত এক বেঞ্চের সামনে। গত ৫ নভেম্বর বিচারপতিরা ওই মামলার রায়দান স্থগিত রাখেন।
গত ৭ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে বলে, আগামী ১০ ডিসেম্বর সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা যাবে। কিন্তু আদালত রায় দেওয়ার আগে কোনও নির্মাণ করা যাবে না। পুরানো কাঠামো ভাঙাও যাবে না। নির্ধারিত দিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন সংসদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তার পরে মোদী বলেন, “আজ একটা ঐতিহাসিক দিন। আজকের দিনটা আমাদের ভারতের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন। বর্তমান সংসদ ভবন যদি ১৯৪৭ সালের পর থেকে স্বাধীন ভারতকে এক দিশা দেখিয়েছে তাহলে নতুন সংসদ ভবন এক নতুন ও আত্মনির্ভর ভারতের দলিল হয়ে থেকে যাবে।”
বর্তমান সংসদ ভবনেরও স্মৃতিচারণ করতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে। তিনি বলেন, “এই গণতন্ত্রের মন্দিরের অংশ আমি যেদিন হয়েছিলাম সেই দিনটা আমার কাছে খুব গুরুত্ত্বপূর্ণ। আমার প্রথম দিন এখানে আসার কথা মনে আছে। এই ভবনে অনেকবার মেরামতি হয়েছে। কিন্তু এবার এর মেয়াদ শেষ হয়েছে। এবার এই ভবনের বিশ্রাম দরকার।”