ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্তে মৃত বিজেপি সমর্থকের মৃত্যু নিয়ে বর্ধমানে তদন্তে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার বিশেষ প্রতিনিধি দল। সিবিআইয়ের সেই দলে ছিলেন তিনজন প্রতিনিধি। সোমবার, তদন্তকারীরা প্রথমে বর্ধমান পুরসভা বোর্ডের মুখ্য প্রশাসক প্রণব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। এরপর, পুরসভা থেকে কিছু নথিপত্রও সংগ্রহ করেন।
গত ২ মে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই বর্ধমানে বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। বিজেপির অভিযোগ, ভোট পরবর্তী হিংসায় মৃত্যু হয় কাঞ্চননগরের বেলপুকুর এলাকার বাসিন্দা নারায়ণ চন্দ্র দাসের। পেশায়, টোটোচালক নারায়ণের মৃত্যুর পর থেকেই বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হয়, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে। সেই ঘটনারই তদন্তে আসেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
বর্ধমান পৌরসভার মূখ্য প্রশাসক প্রণব চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, এ ঘটনার সঙ্গে পুরসভার কোনও যোগ নেই। আগে, সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছিল। যদিও তার কারণ কী তা জানেন না প্রণববাবু। তাতে ওই ব্যক্তির মৃত্যু শংসাপত্রসহ কিছু তথ্য চাওয়া হয়েছিল। এদিনও সেই সংক্রান্তই আরও কিছু নথিপত্র চান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। প্রণববাবু আরও জানান, এ ব্যাপারে সচিবকে নির্দেশ দিয়ে দিয়েছেন তিনি। সিবিআইকে সবরকমভাবে সহযোগিতা করা হবে সে কথাও জানিয়েছেন তিনি।
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় খুন ও ধর্ষণের ঘটনাগুলির তদন্তের দায়ভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেইমতোই রাজ্য পুলিশের তদন্তকারী অফিসারদের তলব করা শুরু করেছে সিবিআই। ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে মোট ৮৪ জন তদন্তকারী অফিসার বা আইও-র মধ্যে ইন্সপেক্টর, ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার রয়েছেন। এছাড়া ২৫ জন কর্তা রয়েছেন এই দলে। জয়েন্ট ডিরেক্টর, ডিআইজি, এসপি পদমর্যাদার এই ২৫ জন অফিসার।
প্রত্যেক জোনের টিমে ২১ জন করে তদন্তকারী অফিসার বা আইও। ইতিমধ্যেই রাজ্যে পৌঁছেছেন ৪ যুগ্ম অধিকর্তারা। পৌঁছেছেন বেশিরভাগ ডিআইজি ও এসপি। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট আগেই জমা দিয়েছিল রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট। একমাস পুরনো হয়ে গিয়েছে সেই রিপোর্ট। তাই বর্তমানে সেই তদন্ত ঠিক কোন পর্যায়ে রয়েছে, কত দূর এগোল, তা জানতেই নতুন রিপোর্ট চেয়েছে হাইকোর্ট। সিবিআই তদন্তে জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মোট ৪০ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। তদন্ত এখনও চলছে।
ইতিমধ্যেই এই মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকার আবেদনে জানিয়েছিল, রাজ্যের অনুমতি না নিয়েই তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। এই মর্মে রাজ্য শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। সেই মামলায় কেন্দ্রের তরফ থেকে সুপ্রিম কোর্টে থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সিবিআইকে তদন্তের অনুমতি দেওয়ার বা সিবিআই তদন্ত বন্ধ করে দেওয়ার কোনও ক্ষমতা নেই রাজ্যের।