সিআইডি হেড কোয়ার্টারে গেল সিবিআই-এর টিম। মঙ্গলবার বিকেলে ভবানী ভবনে যান সিবিআই-এর দু’জন আধিকারিক। তবে কী কারণে তাঁরা রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থার সদর দফতরে গিয়েছেন তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। প্রথমে অনেকে মনে করেছিলেন সিবিআই ফের নোটিস ধরাতে গিয়েছেন রাজীব কুমারকে। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন কোনও নোটিস দেওয়া হয়নি কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারকে।
চিটফাণ্ড কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাজীব কুমারকে গত শনিবার থেকে হন্যে হয়ে খুঁজছে সিবিআই। সূত্রের খবর, সিবিআই অফিসাররা বারবার রাজীব কুমারের মোবাইলে ফোন করেন। কিন্তু রাজীব ফোন ধরেননি। কখনও রিং বেজে যায়। কখনও বলে মোবাইল ফোনটি পরিষেবা সীমার বাইরে। এর পর রবিবার সন্ধ্যায় রাজীব কুমারের কলকাতার সরকারি বাসভবনে গিয়ে নোটিস সাঁটিয়ে দেন সিবিআই অফিসাররা। পার্ক স্ট্রিটে কলকাতা পুলিশের ডিসি সাউথের অফিসে গিয়েও বিষয়টি তাঁরা জানিয়ে আসেন।
রবিবার সন্ধ্যাতেই আবার রাজীব কুমারকে রাজ্য গোয়েন্দা দফতর সিআইডি-র এডিজি পদে নিয়োগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে হেতু সিআইডি-র সদর দফতর ভবানী ভবনে, তাই সে দিন সন্ধ্যাতেই সিবিআই অফিসাররা ভবানী ভবনেও যান। কিন্তু এর পরেও সোমবার সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরে হাজিরা দেননি রাজীব। সূত্রের খবর, তিনি সাত দিনের জন্য সময় চেয়ে নিয়েছেন। তাই ফের মঙ্গলবার ভবানী ভবনে যান সিবিআই কর্তারা।
সিবিআই সূত্রে বলা হচ্ছে, রাজীব কুমার যে নানা অজুহাতে সময় কেনার চেষ্টা করছেন, তা তাঁরা দিব্য বুঝতে পারছেন। তাঁরা এও আশঙ্কা করছেন, এ ভাবে সময় নিয়ে হয় রাজীব পালিয়ে যেতে পারেন, নইলে রাজ্য সরকারের মদতে নতুন আইনি জটিলতা তৈরির চেষ্টা করতে পারেন। তাই রাজীবের কোনও অজুহাতেই তাঁরা কর্ণপাতে রাজি নন। অনেকের মতে, চাপে রাখতেই সিবিআই এই কৌশল নিয়েছে। এর পর রাজীব সিবিআই দফতরে উপস্থিত না হলে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার জন্য আদালতে যেতে পারে সিবিআই।
উল্লেখযোগ্য হল, লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফার ভোটের আগে রাজীব কুমারকে সিআই়ডি থেকে সরিয়ে দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে অ্যাটাচ করে দিয়েছিল। রবিবার ভোটের আদর্শ আচরণবিধির সীমা শেষ হতেই তাঁকে সিআইডি-তে ফেরানোর জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল নবান্ন। কিন্তু তখনই প্রশ্ন উঠেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাঁকে রিলিজ না করলে কী ভাবে সিআইডি-তে যোগ দেবেন রাজীব। দেখা গেল, সেই শঙ্কাই সত্যি প্রমাণ হচ্ছে। রাজীবকে সরকারি ভাবে এখনও রিলিজ করেনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তাই মঙ্গলবার সেই আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে চিঠি পাঠিয়েছে নবান্ন।