কলকাতার প্রথম করোনা আক্রান্ত যুবক আপাতত বেলেঘাটা আইডিতে (Belleghata ID) আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। কিন্তু ইতিমধ্যেই তাঁর আমলা মা এবং চিকিৎসক বাবার বিরুদ্ধে ট্রোলে ভরে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ওই আমলাকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছিলেন লন্ডন থেকে ফেরার বিষয়টি গোপন করার জন্য। এবার চিকিৎসক বাবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ময়দানে নামলেন আইএমএ (ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন)-এর পশ্চিমবঙ্গের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ চিকিৎসক শান্তনু সেন (Shantanu Sen)।
শান্তনু জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা আইএমএ-এর দিল্লির (Delhi) দফতরে আবেদন করা হয়েছে, যাতে ছেলের রোগ গোপন করা চিকিৎসক শ্যামল ঘোষের (Shyamal Ghosh) আইএমএ-এর সদস্যপদ বাতিল করা হয়। একইসঙ্গে তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা এও বলেন, সর্বভারতীয় মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে যাতে ওই চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে তারা।
জানা গিয়েছে লন্ডনে বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিলেন ওই আমলা ও চিকিৎসক-পুত্র। তিনি নিজেও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া বলে জানা গিয়েছে। গত ১৫ মার্চ কলকাতা (Kolkata) বিমানবন্দরে নামেন ওই তরুণ। তার পরের দিন মায়ের সঙ্গে যান নবান্নেও। বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ছেলেকে দেখান মা। অভিযোগ, এরপর কোয়ারেন্টাইনে থাকার বদলে কলকাতার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত, শপিংমল থেকে বিভিন্ন জনবহুল জায়গায় ঘুরেবেড়ান ওই তরুণ। এই ঘটনা সামনে আসতেই তোলপাড় পড়ে যায়।
শুধু মায়ের সঙ্গে নবান্নে যাওয়াই নয়। ওই তরুণের বাবা তথা শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ শ্যামল ঘোষ (Shyamal Ghosh) কৃষ্ণনগরে রোগীও দেখেন। ফলে প্রশ্ন ওঠে, সারা পৃথিবীজুড়ে এমন মহামারীর অবস্থা দেখেও এই রকম একটা শিক্ষিত পরিবার কী ভাবে এমন কাণ্ড ঘটাল। করোনা আক্রান্ত তরুণের মা স্বরাষ্ট্র দফতরের বিশেষ সচিব। তিনি নবান্নে সারাদিন অফিস করেছিলেন ওইদিন। কথা বলেছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ শীর্ষ আমলাদের সঙ্গে। এই ঘটনার পর স্বেচ্ছায় নিজেকে গৃহবন্দি রেখেছেন আলাপনবাবু। সঙ্গে তাঁর স্ত্রী তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তীও রয়েছেন হোম কোয়ারেন্টাইনে।
এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত আমলা ও তাঁর চিকিৎসক স্বামীর শরীরে করোনা সংক্রমণের প্রমাণ মেলেনি। তাঁদের রাখা হয়েছে রাজারহাটের আইসোলেশনে। তিনদিন পর ফের তাঁদের লালারস পরীক্ষা হবে।
বেঙ্গালুরুর (Bangalore) এক রেলকর্মীর ছেলে সম্প্রতি বিদেশ থেকে ফিরেছেন। তিনি তা গোপন করায় রেল তাঁকে সাওপেন্ড করেছে। এবার কলকাতার তরুণের চিকিৎসক বাবার বিরুদ্ধেও পদক্ষেপের দাবি তুলল চিকিৎসক সংগঠন।