পশ্চিমবঙ্গের ৩টি বিধানসভার উপনির্বাচনের সদ্যপ্রাপ্ত ফলাফল পর্যালোচনা করতে বসে যে ক’টি বিষয় নজরে আসছে তার মধ্যে প্রথমটি হল, এ বছরের মে’ মাসে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পরে এ রাজ্যে বিজেপি ১৮টি আসন পাওয়ার পর উপনির্বাচনেও বিজেপির কাছ থেকে যে ধরনের ফলাফল প্রত্যাশিত ছিল, গতকালের ফলাফল সেই প্রত্যাশামত হয় নি। এমনকি বিজেপির নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের ফলাফল লোকসভা নির্বাচনে তাদের ফলাফলের চেয়ে ঢের ভালো হয়েছে, এবং লোকসভা ভোটের সময়ে যে সব ভোট বিজেপির খাতায় গিয়েছিল তার একটা বড় অংশ এই উপনির্বাচনে তৃণমূলের বাক্সে গিয়েছে। অবশ্য লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে বিধানসভা ভোটের ফলাফল তুলনা করতে যাওয়া সামগ্রিকভাবে অনুচিত ও পদ্ধতিগত ভাবে ভুল। কারণ লোকসভা ভোটের প্রার্থী নির্বাচন করার সময় মানুষের পছন্দ-অপছন্দ, বিচারধারা এবং বিচার্য বিষয় বিধানসভা ভোটে প্রার্থী নির্বাচনের পছন্দ-অপছন্দ, বিচারধারা এবং বিচার্য বিষয়ের থেকে আলাদা হয়। দু’টি নির্বাচনে মানুষের চাহিদা ও প্রায়োরিটি আলাদা থাকে এবং মানুষ সে বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন। একেবারে তৃণমূল স্তরের মানুষও “দিল্লী ভোট” আর “রাজ্য ভোট” এ তফাৎ করতে জানেন। সেই কারণে ২০১৯ এর বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলাফল যদি তুলনা করতেই হয়, তাহলে করা উচিত আদতে ২০১৬র বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের সঙ্গে। যদিও ২০১৯ শে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির যে ফলাফল এ রাজ্যে হয়েছিল, সেই তুলনায় এবার তা অত্যন্ত খারাপ। বৈশ্লেষণিক দৃষ্টিতে দেখলে উপনির্বাচনে বিজেপির তুলনায় তৃণমূলের ভালো ফলাফল যত না বিজেপির ব্যর্থতা, তার চেয়ে অনেক বেশি তৃণমূলের সাফল্য। লোকসভা ভোটের ফলাফল থেকে শিক্ষা নিয়ে তৃণমূল বিজেপি বিরোধী অপপ্রচার চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় ইস্যুগুলোতেও যত্নসহকারে নজর দিয়েছে। উপরন্তু বামমনোভাবাপন্ন বেশ কিছু ভোটার যাঁরা লোকসভায় বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন, উপনির্বাচনে তাঁরাই হয়ত তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন কারণ লোকসভা ভোট আর বিধানসভা ভোটের ক্ষেত্রে মানুষের বিচার্য বিষয় থাকে ভিন্ন।
পিকে পদ্ধতি:
প্রশান্ত কিশোরের “দিদিকে বলো” প্রোগ্রামটি ছিল আদতে একটি ডেটা কালেকশনের উদ্যোগ। মানুষের ফোন আদতে পিকের নেতৃত্বাধীন তৃণমূলের আই টি সেলকে সরবরাহ করেছে নানা এলাকার নানা তথ্য, যেগুলো নিষ্কাশন করে নানা এলাকার স্থানীয় ইস্যুগুলোর একটি ডেটাবেস তৈরি করেছেন পিকে। এবং তারপর সেই ডেটার ওপর ভিত্তি করেই এলাকাভিত্তিক প্রচারের দিকনির্দেশনা করেছেন। ফলে সঠিক এলাকায় সঠিক বিষয়গুলি সঠিকভাবে তুলে ধরতে পেরেছে তৃণমূল, যা করতে আপাততঃ ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি। উপরন্তু কাজ করেছে তৃণমূলের দিক থেকে তীব্র এন আর সি-ভীতির সংগঠিত প্রচার বা এন আর সি ফিয়ার-মঙ্গারিং। তৃণমূল ও তৃণমূলের সহযোগী বাংলাপক্ষ এমনকি লোক্যাল ট্রেনে ঘুরে ঘুরেও চালিয়ে গিয়েছে এন আর সি ফিয়ার মঙ্গারিং।
বিধানসভাভিত্তিক তুলনা: কালিয়াগঞ্জ
২০১৬য় কালিয়াগঞ্জ বিধানসভায় জয়ী হয়েছিলেন কংগ্রেসের শ্রী প্রমথনাথ রায়। পেয়েছিলেন এক লক্ষ বারো হাজার আট’শ আটষট্টিটি ভোট। তৃণমূলের বসন্ত রায় পেয়েছিলেন ছেষট্টি হাজার দু’শ ছেষট্টিটি ভোট আর বিজেপির রূপক রায় পেয়েছিলেন সাতাশ হাজার দু’শ বাহান্নটি ভোট। ঐ বছর এই বিধানসভায় মোট ভোট পড়েছিল দু লক্ষ চোদ্দ হাজার ছ’শ বিয়াল্লিশটি। সেই তুলনায় ২০১৯ এর উপনির্বাচনে তৃণমূলের তপন দেব সিংহ পেয়েছেন সাতানব্বই হাজার চার’শ আঠাশটি ভোট আর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির কমলচন্দ্র সরকার পেয়েছেন পঁচানব্বই হাজার চোদ্দটি ভোট। কংগ্রেসের ধৃতশ্রী রায় পেয়েছেন আঠেরো হাজার আট’শ সাতান্নটি ভোট। এ বছর কালিয়াগঞ্জ বিধানসভায় মোট ভোট পড়েছে দু’লক্ষ আঠেরো হাজার দু’শটি। অর্থাৎ এই বিধানসভায় কংগ্রেসের ভোট ভাগ হয়ে গিয়েছে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। ২০১৬ থেকে ২০১৯ এ কংগ্রেসের ভোট কমেছে তিরানব্বই হাজার। যদি ধরে নেওয়া হয় যে এতগুলি ভোট বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে সমানভাবে ভাগ হয়েছে, তাহলে তৃণমূল ও বিজেপি, উভয় দলেরই ভোট বৃদ্ধি পাওয়া উচিত ছিল প্রায় ছেচল্লিশ হাজার ন’শ একাত্তরটি করে। কিন্তু বাস্তবে ২০১৯ সালের এই উপনির্বাচনে বিজেপির ভোট বৃদ্ধি পেয়েছে সাতষট্টি হাজার সাত’শ বাষট্টিটি আর তৃণমূলের ভোট বৃদ্ধি পেয়েছে একত্রিশ হাজার এক’শ বাষট্টিটি। অর্থাৎ তুলনামূলক ফলাফল দেখলে ২০১৬র বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে তৃণমূলের ভোট যত বৃদ্ধি পেয়েছে সেই তুলনায় কালিয়াগঞ্জে বিজেপির ভোট বৃদ্ধি পেয়েছে তার ২.১৭ গুণ, অর্থাৎ দ্বিগুণেরও বেশি। কিন্তু তৎসত্ত্বেও জয় হয়েছে তৃণমূলেরই। মে মাসে লোকসভা ভোটে অবশ্য বিজেপির খাতায় এসেছিল কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার মোট ভোটের ৫২.২% আর তৃণমূলের খাতায় গিয়েছিল মাত্র ২৭.৩%. সেই তুলনায় এই উপনির্বাচনে বিজেপির খাতায় এসেছে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার মোট ভোটের ৪৩.৫৪% আর তৃণমূলের খাতায় গিয়েছে ৪৪.৬৫%. যদিও এই তুলনা অনুচিত ও বিভ্রান্তিকর। কালিয়াগঞ্জ বিধানসভায় নোটা বিরোধী প্রচারেরও প্রয়োজন ছিল। কারণ এই বিধানসভায় ২০১৬য় নোটা পেয়েছিল ৩৫৩৩ টি ভোট আর এবছর পেয়েছে ২২৭৩ টি ভোট। অন্য সমস্ত ফ্যাক্টরগুলি একই থেকে শুধু নোটার ভোটগুলি যদি বিজেপির খাতায় যেত, তবে তৃণমূল ও বিজেপির ভোটের ব্যবধান হত ১৪১ টি। কালিয়াগঞ্জ বিধানসভায় বিজেপি সেক্ষেত্রেও হারত তৃণমূলের কাছে, কিন্তু হারত মাত্র ১৪১ ভোটে।
বিধানসভাভিত্তিক তুলনা: খড়গপুর সদর
২০১৬য় খড়গপুর সদর বিধানসভায় জয়ী হয়েছিলেন বিজেপির দিলীপ ঘোষ। পেয়েছিলেন একষট্টি হাজার চার’শ ছেচল্লিশটি ভোট। কংগ্রেসের জ্ঞান সিং সোহন পাল পেয়েছিলেন পঞ্চান্ন হাজার এক’শ সাঁইত্রিশটি ভোট আর তৃণমূলের তিওয়ারি রামপ্রসাদ পেয়েছিলেন চৌত্রিশ হাজার ছিয়াশিটি ভোট। ঐ বছর এই বিধানসভায় মোট ভোট পড়েছিল এক লক্ষ ছাপ্পান্ন হাজার তিন’শ ছিয়াশিটি। সেই তুলনায় ২০১৯ এর উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রদীপ সরকার পেয়েছেন বাহাত্তর হাজার আট’শ তিরানব্বইটি ভোট আর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির প্রেমচন্দ্র ঝা পেয়েছেন বাহান্ন হাজার চল্লিশটি ভোট। কংগ্রেসের চিত্তরঞ্জন মণ্ডল পেয়েছেন বাইশ হাজার ছ’শ একত্রিশটি ভোট। এ বছর খড়গপুর সদর বিধানসভায় মোট ভোট পড়েছে এক’লক্ষ বাহান্ন হাজার ন’শ ঊনষাটটি। অর্থাৎ এই বিধানসভায় বিজেপির ভোট কমেছে ন’হাজার চার’শ ছয়টি। কংগ্রেসের ভোট কমেছে বত্রিশ হাজার পাঁচশ ছয়টি আর তৃণমূলের ভোট বৃদ্ধি পেয়েছে আটত্রিশ হাজার আট’শ সাতটি। অর্থাৎ ধরে নেওয়া যেতে পারে কংগ্রেসের ভোট এবং বিজেপিরও বেশ কিছু ভোট গিয়েছে তৃণমূলের খাতায়। অর্থাৎ এই কেন্দ্রে বিজেপির ফলাফল বিজেপির ২০১৬ র ফলাফলের তুলনায়ও খারাপ। উপরন্তু এই কেন্দ্রে জ্ঞান সিং সোহন পালের ভোটের বৃহৎ অংশ এবং দিলীপ ঘোষের ভোটেরও একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ চলে গিয়েছে তৃণমূলের খাতায়। হয়ত এক্ষেত্রে প্রার্থী নির্বাচনটিই শেষ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই কেন্দ্রে সর্ব অর্থেই ভালো ফল করেছে তৃণমূল এবং খারাপ হয়েছে বিজেপির। উপরন্তু মে মাসে লোকসভা ভোটে বিজেপির খাতায় এসেছিল খড়গপুর সদর বিধানসভার মোট ভোটের ৫৭.২% আর তৃণমূলের খাতায় গিয়েছিল মাত্র ২৯.৬%. সেই তুলনায় এই উপনির্বাচনে বিজেপির খাতায় এসেছে খড়গপুর সদর বিধানসভার মোট ভোটের মাত্র ৩৩.৯% আর তৃণমূলের খাতায় বেড়ে গিয়েছে মোট ভোটের ৪৭.৮%. এই তুলনা বিভ্রান্তিকর ও এম্পিরিক্যাল হলেও সাধারণ বিজেপি সমর্থক এই তুলনা করছেন এবং বেশ খানিক উদ্বিগ্ন ও হতাশ হচ্ছেন। যদিও যথাযথ কাজ করলে খড়গপুর সদরের মানুষ বিজেপিকে ভোট দিতে কার্পণ্য করবেন না।
বিধানসভাভিত্তিক তুলনা: করিমপুর
২০১৬য় করিমপুর বিধানসভায় জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র। পেয়েছিলেন নব্বই হাজার ন’শ ঊননব্বইটি ভোট। সিপিএমের সমরেন্দ্র নাথ ঘোষ পেয়েছিলেন পঁচাত্তর হাজারটি ভোট আর বিজেপির সুভাশিষ ভট্টাচার্য্য (আনন্দ) পেয়েছিলেন তেইশ হাজার তিন’শ তিনটি ভোট। ঐ বছর এই বিধানসভায় মোট ভোট পড়েছিল দু লক্ষ এক হাজার এক’শ ছয়টি। সেই তুলনায় ২০১৯ এর উপনির্বাচনে তৃণমূলের বিমলেন্দু সিনহা রায় পেয়েছেন এক লক্ষ তিন হাজার দু’শ আটাত্তরটি ভোট আর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির জয়প্রকাশ মজুমদার পেয়েছেন ঊনআশি হাজার তিন’শ আটষট্টিটি ভোট। সিপিএমের গোলাম রাব্বি পেয়েছেন আঠেরো হাজার ছ’শ সাতাশটি ভোট। এ বছর করিমপুর বিধানসভায় মোট ভোট পড়েছে দু’লক্ষ চার হাজার আট’শ পাঁচটি। অর্থাৎ এই বিধানসভায় আদতে কমেছে সিপিএমের ভোট, এবং তার অধিকাংশই গিয়েছে বিজেপির খাতায়। ২০১৬র তুলনায় সিপিএমের ভোট কমেছে ছাপ্পান্ন হাজার তিন’শ তিয়াত্তরটি আর বিজেপির ভোট ২০১৬র তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে ছাপ্পান্ন হাজার পঁয়ষট্টিটি। ধরে নেওয়া যেতে পারে যে এই কেন্দ্রে ২০১৬র সিপিএমের যে ক’টি ভোট কমেছে, তার প্রায় সবগুলিই গিয়েছে বিজেপিতে। অর্থাৎ গত ২০১৬ র বিধানসভায় বিজেপির যা ফল হয়েছিল, সেই তুলনায় এ বছরের উপনির্বাচনে করিমপুরে বিজেপির ফল ভালো হয়েছে। আরও একটি লক্ষণীয় বিষয় হল, এই তিনটি বিধানসভায় একমাত্র করিমপুরেই ২০১৬তে সিপিএমের কিছু ভোট ছিল যা এবার তলানিতে ঠেকেছে। মুসলমান প্রার্থী গোলাম রাব্বিকে করিমপুরের বাম সমর্থকরা তেমন গ্রহন করেন নি। যদি ধরে নেওয়া যায় যে সিপিএমের তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সীমান্তবর্তী করিমপুর প্রত্যাখ্যান করেছে, তবে কি ভুল হবে? তৃণমূলের খাতায় ২০১৬’র তুলনায় এবছর বৃদ্ধি পেয়েছে বারো হাজার দু’শ ঊননব্বইটি ভোট। এবছর এই বিধানসভা কেন্দ্রে মোট ভোটের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে তিন হাজার ছ’শ নিরানব্বইটি। যদি ধরে নেওয়া যায় যে এই নতুন ভোটগুলির সবই গিয়েছে তৃণমূলের খাতায়, তৎসত্ত্বেও তৃণমূলের ভোট ২০১৬’র তুলনায় ২০১৯ এ বৃদ্ধি পেয়েছে ১২২৮৯-৩৬৯৯ = আট হাজার পাঁচশ নব্বইটি। এই ভোটগুলি অন্যান্য নানা প্রার্থীদের থেকে তৃণমূলের খাতায় গিয়েছে বলে অনুমান করা যায়। অর্থাৎ তুলনামূলকভাবে দেখতে গেলে করিমপুরেও বিজেপির ফল খারাপ হয় নি, কিন্তু তৃণমূলের ফল হয়েছে আরও ভালো। তারা কনসলিডেট করেছে আরও মনোযোগ সহকারে। এ থেকে এ-ও স্পষ্ট যে বুথ লেভেল থেকে প্রতিটি ভোটার এবং তাদের নির্বাচনী পছন্দ-অপছন্দ সম্বন্ধে বিস্তারিত ও খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করেছে তৃণমূল। নচেৎ এমন কনসলিডেশন অসম্ভব ছিল। তাছাড়া মে মাসে লোকসভা ভোটে বিজেপির খাতায় এসেছিল করিমপুর বিধানসভার মোট ভোটের ৩৫.৫% আর তৃণমূলের খাতায় গিয়েছিল ৪২.৪%. সেই তুলনায় এই উপনির্বাচনে বিজেপির খাতায় এসেছে করিমপুর বিধানসভার মোট ভোটের ৩৩.২৮% আর তৃণমূলের খাতায় গিয়েছে মোট ভোটের ৫৪.৯৫%. অর্থাৎ করিমপুরে লোকসভা নির্বাচনের তুলনায়ও বিজেপির ভোট খুব একটা কমে নি কিন্তু তৃণমূলের ভোট অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে, যার সম্ভাব্য কারণ হয়ত তৃণমূলের দিক থেকে বুথভিত্তিক কনসলিডেশন।
করিমপুরের সিপিএম ভোট বিজেপির খাতায় আসা থেকে এ-ও বোধ হয় প্রমাণিত হয় যে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ধর্মীয় মেরুকরণের চোরা স্রোত বইছেই। গোলাম রাব্বিকে ভোট দিতে হয়ত তাঁরা রাজী হন নি। কি কারণ থাকতে পারে? আসুন দেখা যাক্।
পর্যবেক্ষণ ১:
এই উপনির্বাচনের আগে এবং ২০২১ এর নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে পরিকল্পনামাফিক ভয় দেখানো হয়েছে NRC সম্বন্ধে এবং মানুষ ভয় পেয়েও গিয়েছে। এ বিষয়ে ইতিপূর্বেও লিখেছি। আসামের চিত্র ভয়ের আগুনকে উসকে দিয়েছে আরো বেশি করে। এবং স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে এই ভয় দেখানোর ফর্মূলাই ২১র নির্বাচনেও প্রয়োগ করা হবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের ওপর। কিন্তু এই তৈরি করা এন আর সি ভীতির আবহেও একটি বিষয় লক্ষণীয়। তিনটি কেন্দ্রের ফলাফল বিশ্লেষণে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে বর্ডার নিকটবর্তী করিমপুর ও কালিয়াগঞ্জে বিজেপির ফল তুলনামূলক দৃষ্টিতে বিচার করলে ভালো। অর্থাৎ এইসব অঞ্চলের মানুষ হয়ত ভয় দেখানো সত্ত্বেও এন আর সি নিয়ে তত ভয় পান নি। কারণ এখানকার বহু মানুষ যেহেতু আদতেই শরণার্থী এবং নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে আসার যন্ত্রণা বোঝেন, পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর ইসলামিক নির্যাতনের প্রকৃতি আদতে কতখানি ভয়াবহ তা জানেন এবং নিজেদের শরণার্থী স্টেটাস সম্বন্ধে অবগত, সেইজন্যই তা নথিভুক্ত করানোর জন্য অর্থাৎ এন আর সি’র জন্য তাঁরা মানসিকভাবে প্রস্তুত। এঁরা হয়ত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সম্বন্ধেও কিছুটা সচেতন এবং জানতে পেরেছেন যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ না করে এ রাজ্যে এন আর সি হবে না। সেই কারণেই হয়ত বর্ডার নিকটবর্তী বিধানসভাগুলিতে তৃণমূলের তরফ থেকে যদি এন আর সি-ভীতির প্রচার হয়েও থাকে, তা সত্ত্বেও তা তৃণমূলের জন্য বড় একটা ফলদায়ী হয় নি এবং সেই কারণেই এই দুটি বিধানসভায় বিজেপির ফল তুলনামূলকভাবে অপেক্ষাকৃত ভালো। এবং এ একই কারণে সিপিএমের গোলাম রাব্বিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন এমনকি সিপিএমের ভোটাররাও। এইসব কেন্দ্রগুলির লোক্যাল ইস্যুগুলি সম্বন্ধে আরও বিস্তারিত ও খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করতে পারলে এই দুটি কেন্দ্রে বিজেপির পক্ষে তৃণমূলকে টপকে যাওয়া যথেষ্ট সহজ ছিল। কিন্তু লোক্যাল ইস্যু নিয়ে বিজেপি তেমন কাজ করে নি বলেই মনে হয়। তৃণমূলের জয় সেই দিকেই নির্দেশ করছে।
পর্যবেক্ষণ ২:
বহু মানুষের সাধারণ ধারণা হল, পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে যেখানে শরণার্থী ও অনুপ্রবেশকারী দুইয়েরই আধিক্য, সেখানকার মানুষ এন আর সি’র অধিক বিরোধিতা করবেন। সদ্যসমাপ্ত উপনির্বাচনের ফলাফল এই ধারণা বা হাইপোথিসিসকে সমর্থন করে না। বরং বাস্তব উল্টো। সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পর এন আর সি করলে সেখানকার মানুষের পূর্ণ সহযোগিতা পাওয়া যাবে বলে অনুমান করা যায়। কিন্তু সীমান্ত থেকে দূরে, বিশেষতঃ কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে এন আর সি সম্বন্ধে যে অপপ্রচার হয়েছে তা যথাসময়ে খণ্ডন করা হয় নি। অপপ্রচারের গতিবেগ ক্রমশঃ বেড়েছে, প্রত্যুত্তর দেওয়া হয় নি। ভবিষ্যতে তা করার প্রয়োজন পড়বে এবং এন আর সি যে পশ্চিমবঙ্গের কোনো নাগরিককেই তার নাগরিকত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্য তৈরি হবে না সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্যভিত্তিক প্রচার প্রয়োজন। তার জন্য বিজেপিকে তেমন বক্তাকে নিয়ে জনসভা করতে হবে, যাঁরা NRC কি, কেন, কি তার প্রয়োজনীয়তা ইত্যাদি বুঝবেন এবং সাধারণ মানুষকে সাধারণ মানুষের ভাষায় তা বুঝিয়েও দিতে পারবেন। সারা দেশে এন আর সি যে আসাম এন আর সি’র মেথডোলজি বা পদ্ধতি অনুযায়ী হবে না, সম্পূর্ণ নতুন পদ্ধতিতে হবে যাতে মানুষের হয়রানি হবে না, এ নিয়ে ধারাবাহিক প্রচারের পরিকল্পনা, স্লোগান ও রূপরেখা তৈরি করার প্রয়োজন আছে। যে NRC’র সম্বন্ধে অপপ্রচার বিজেপিকে হারিয়েছে, সেই NRC’র যথাযথ প্রচার বিজেপিকে জেতাতেও পারে যদি তারা উপযুক্ত লোকেদের জনসংযোগ, প্রচার ও পরিকল্পনার কাজে যথাযথভাবে লাগায়।
পর্যবেক্ষণ ৩:
অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই বক্তাদের বাঙালী হওয়া প্রয়োজন। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি বিরোধী অন্যতম প্রচার হল বিজেপি অবাঙালীর পার্টি এবং বাঙালী বিরোধী। এ অপবাদ খণ্ডন করতে গেলে যথাযথ প্রচারে আরও বাঙালী মুখ বিজেপিকে তুলে নিয়ে আসতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাচনভঙ্গিমা ও তাঁর অসংলগ্ন কথাবার্তা ২০১১য় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে পর্যন্ত এরাজ্যের মানুষ গ্রহন করেন নি বরং নন্দীগ্রাম আন্দোলনের আগে পর্যন্ত তাঁকে নিয়ে, তাঁর কথা ও আচরণ নিয়ে হাসিঠাট্টাই চলত বেশি। বিরোধী রাজনীতিকের জায়গা থেকে এ রাজ্যের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠার জন্য বিরোধী নেতৃত্বের ওপর অতিরিক্ত দায় থাকে রাজনৈতিকভাবে নির্ভুল, সুসংবদ্ধ ও পরিশীলিত বক্তব্য রাখার। এ রাজ্যের মানুষ মূলতঃ রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে চলার মানসিকতাসম্পন্ন। ক্ষমতাসীনের বিরোধিতা করার সাহস ও শিরদাঁড়া এ রাজ্যের সংবাদমাধ্যম বা বহু সাধারণ মানুষেরই নেই। অতএব এ রাজ্যে সরকার গঠন করতে পারার আগে পর্যন্ত বিজেপিকে প্রচুর সুবক্তা ও উপযুক্ত বাঙালীকে প্রচারের মুখ হিসেবে এলাকাভিত্তিকভাবে তুলে ধরতে হবে। প্রয়োজন আছে এন আর সি’র জন্য পৃথক প্রচারশাখা করার। সুনির্দিষ্ট কিছু মানুষকে কেবলমাত্র এন আর সি সংক্রান্ত বিষয়ে বক্তব্য রাখার জন্যই নানা জনসভায় উপস্থাপন করার নীতি গ্রহন করার কথা ভেবে দেখতে পারে বিজেপি।
পর্যবেক্ষণ ৪:
এন আর সি-ভীতির প্রচার বা এন আর সি ফিয়ার মঙ্গারিং বেশি ফলপ্রসূ হয়েছে খড়গপুর সদর বিধানসভা কেন্দ্রে। অর্থাৎ যেখানকার মানুষ এন আর সি’র কোনো প্রয়োজনীয়তা আদপেই অনুভব করতে পারছেন না এবং সেই হেতু এন আর সি বিষয়টিকে কেবলমাত্র একটি বিড়ম্বনা ও ভোগান্তি বলে মনে করছেন, তাঁরাই তৃণমূলের এন আর সি’ বিরোধী সুপরিকল্পিত অপপ্রচারের শিকার হয়েছেন। খড়গপুর সদর বিধানসভার মানুষদের মনে নিজেদের ভারতীয় নাগরিকত্ব নিয়ে কোনো সংশয় নেই। তাই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলেরও তেমন কোনো তাৎপর্য হয়ত নিজেদের জীবনে এঁরা অনুভব করেন না। উপরন্তু এন আর সি’র মাধ্যমে তাঁদেরকে অপরিসীম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হতে পারে এবং নাগরিকত্ব থাকা সত্ত্বেও এন আর সিতে তাদের নাম অন্যায়ভাবে বাদ যেতে পারে এবং তার ফলে তাদেরকে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে ফেলতে পারে বিজেপি সরকার, এমন সর্ব তৃণমূলী প্রচার এইসব আধাশহুরে মানুষকে ভিতরে ভিতরে অস্থির, বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। এন আর সি শব্দটিই হয়ত ক্রোধের উদ্রেক করছে এদের মনে। সেইসঙ্গে আছে পশ্চিমবঙ্গের একপেশে সংবাদমাধ্যম যারা বিকৃত ও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভ্রান্ত সংবাদ পরিবেশন করে নিয়মিত বিভ্রান্ত করে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে। এইসব মানুষদেরকে এন আর সি’র প্রকৃত প্রয়োজনীয়তা সহজ ভাষায় বলা প্রয়োজন। আসাম এন আর সি’ যে ভুলভ্রান্তিতে ভরা কারণ রাজীব গান্ধীর ভুলে ও অদূরদর্শিতায় অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে আসাম অ্যাকর্ড এমন কিছু অনুচিত শর্ত নিয়ে সংবিধানের অঙ্গ হয়েছিল যার অপব্যবহার করে কিছু সুযোগসন্ধানী মানুষ, বিশেষতঃ আসাম সরকারের কর্মচারীরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে উৎকোচ গ্রহন করার মাধ্যমে এমন একটি এন আর সি তৈরি করেছে যার দ্বারা আসামের হিন্দু বাঙালী নাগরিকদের তারা অযাচিত সমস্যার মধ্যে ফেলেছে— তা সহজ উপায়ে, সাধারণের বোধগম্যভাবে বোঝানোর প্রয়োজন ছিল। হিন্দু বাঙালীর যোগ্যতা, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ও পরিশীলনের প্রতি অসমীয়াদের প্রাদেশিক বিদ্বেষভাবই যে এমন একটি পক্ষপাতদুষ্ট নাগরিকপঞ্জী তৈয়ার করার কারণ, বঙ্গ বিজেপি তা সরবে প্রচার করতে পারে নি। তারা যে আসাম এন আর সি’র এই ফর্ম্যাটকে সমর্থন করে না তা দ্ব্যর্থহীনভাষায় পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে জানায় নি। অপরপক্ষে তৃণমূল ও তার সহযোগী বাংলাপক্ষও এই নিয়ে খড়গপুর সদর বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচকদের এই মনোভাবই আরও বৃহৎ আকারে দেখা যাবে কলকাতা পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের জেলাগুলিতে।
পর্যবেক্ষণ ৫:
তৃণমূলকে হারাতে গেলে বিজেপিকে শুধু ভালো ফল করলে চলবে না, অবিশ্বাস্য ভালো ফল করতে হবে। বিজেপির পরিশ্রমের পরিমাণও হওয়া প্রয়োজন তৃণমূলের পরিশ্রমের কয়েকগুণ বেশি, কারণ পশ্চিমবঙ্গে কলকাতার বাইরের জেলাগুলির মানুষ সচরাচর প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোট দেন না। যে দল শাসনক্ষমতায় থাকে, সেই দলকে ভোট দেওয়াই পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলির বৈশিষ্ট্য। অতএব তৃণমূলের থেকে কলকাতার বাইরের জেলার বিধানসভাগুলি বের করে আনতে গেলে মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে হবে বিজেপিকে। প্রয়োজন বাড়ি ও পরিবারভিত্তিক ব্যক্তিগত জনসংযোগ ও ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশীর সম্পর্ক গড়ে তোলার মত কার্যক্রম। এলাকার স্থানীয় বিষয়গুলিতে ইতিবাচক ও ধৈর্য্যশীল ভূমিকা পালন করতে হবে বিজেপির প্রতিনিধি কার্যকর্তাদেরকে। কাজটি সহজ না হলেও অসম্ভব নয়। অফুরন্ত কাজ করতে হবে। শাসকদলের প্রভাবকে অতিক্রম করে যেতে হবে মানুষের পাশে থাকার জন্য নিজেদের সংকল্প নিয়ে।
পর্যবেক্ষণ ৬:
বহু মানুষের মতামত হল এন আর সি নিয়ে প্রচার করার পরিবর্তে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে প্রচার করার প্রয়োজন। বাস্তব হল সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি বাদ দিলে অন্যান্য এলাকার মানুষ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রাসঙ্গিকতাও বড় একটা বোঝেন না। তাই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বা সি এ বি নিয়ে বলারও আগে প্রয়োজন নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রয়োজনীয়তা কেন হল সে সম্বন্ধে জনসচেতনতা তৈরি করা। স্বাধীনতা-উত্তর ভারতবর্ষে সবচেয়ে বেশি অবিচার যে করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ও হিন্দু বাঙালীর প্রতি, আগে তা নিয়ে আগুন ঝরানো বক্তৃতা দিতে হবে বিজেপির বাঙালী নেতৃত্বকে। তথ্যবহুল ও সুস্পষ্টভাবে। কিভাবে দিল্লী চুক্তি পাশ করিয়ে জোর করে উদ্বাস্তু পরিচয় নিয়ে গত সত্তর বছর ধরে বাঁচতে বাধ্য করা হয়েছে ওপার বাংলা থেকে এপারে চলে আসতে বাধ্য হওয়া হিন্দু বাঙালীকে, কি পরিমান অবিচার ও রাষ্ট্রীয় অন্যায়ের শিকার হতে হয়েছে গোটা ভারতবর্ষে একমাত্র হিন্দু বাঙালীকেই, চাই সে বিষয়ে বিস্তারিত, চোখে জল এনে দেওয়া প্রচার। সেই চোখের জল আগুন হয়ে ছড়িয়ে পড়বে অচিরেই পশ্চিমবঙ্গের কোনায় কোনায়। তৈরি করবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রয়োজনীয়তা ও প্রাসঙ্গিকতার ভিত্তি।
পর্যবেক্ষণ ৭:
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত ধুরন্ধর রাজনীতিকের সঙ্গে লড়াইয়ের ক্ষেত্রটি বন্ধুর ও দুর্গম হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু সত্য এটিই যে যত ধুরন্ধরই তিনি হোন্ না কেন, মমতার রাজনীতি হল নেতিবাচক এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করার রাজনীতি। রাজ্যের কোনায় কোনায়, পাড়ায় পাড়ায় ছড়িয়ে আছে সেই নেতিবাচক রাজনীতির অজস্র নিদর্শন। প্রয়োজন আছে সেগুলিকে স্থানীয় মানুষের নজরে এনে তারপর জাতীয় স্তরে সংসদের ভিতরে ও বাইরে জাতীয় সংবাদমাধ্যমগুলির সামনে সেগুলিকে তুলে ধরার। একমাত্র তাহলেই সম্ভব হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফল অথচ নেতিবাচক রাজনীতির রূপটিকে সকল মানুষকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া। সেই সঙ্গে তুলে ধরতে হবে নিজেদের বিকল্প নীতি ও পরিকল্পনা, মানুষের সঙ্গে আলোচনা করার মাধ্যমে। তাহলেই খণ্ডন করা হয়ে যাবে বিজেপি-বিরোধী সবরকম কুৎসা ও অপপ্রচার। সময় বড় অল্প। মনে রাখতে হবে স্বামীজীর সেই বাণী—”নেতা হতে যেও না, সেবা কর…”
দেবযানী ভট্টাচার্য্য